জামবাদে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
ভূগর্ভে বাড়িসুদ্ধ তলিয়ে যাওয়ার প্রায় দেড় দিন পরেও, রবিবার রাত পর্যন্ত খোঁজ মিলল না অণ্ডালের জামবাদের মহিলা, শাহনাজ বেগমের। তবে, উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, অন্তত ৪০ ফুট নীচে বাড়িটির ধ্বংসস্তূপ রয়েছে। তারও নীচে চাপা পড়ে থাকতে পারেন শাহনাজ।
শনিবার থেকে টানা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে ইসিএল। সংস্থার ইসিএল-এর কেন্দা এরিয়ার ‘রেসকিউ রুম কাম রিফ্রেসার্স ট্রেনিং সেন্টার’-এর সুপার রঞ্জিত ঘোষ বলেন, ‘‘মাটি কাটার যন্ত্রের সাহায্যে তলিয়ে যাওয়া বাড়িটি যেখানে ছিল, সেই এলাকার চতুর্দিকে পুকুরের আকারে মাটি কাটা হচ্ছে। এ ভাবেই ওই মহিলাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’
রবিবার, উদ্ধারকারী দলের অনুমান, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, তার নীচে বন্ধ হয়ে যাওয়া ভূগর্ভস্থ খনি ছিল। সেই খনির কয়লার কোনও ‘পিলার’ বা স্তম্ভ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে, মাটির উপরি ভাগে ধস নেমেছে।
কী ভাবে চলছে উদ্ধারকাজ? রঞ্জিতবাবু জানান, ধসে যাওয়া অংশটির পশ্চিম দিকের মাটি ২০ ফুট গভীর করে কাটা হয়। তার পরে পূর্ব দিকে মাটি কাটতে গিয়ে দেখা যায়, সে দিকের মাটির দেওয়াল ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই দেওয়ালটি যাতে পড়ে না যায়, সে জন্য দেওয়ালের উপর থেকে মাটি কেটে সেটির উচ্চতা কমানোর কাজ চলছে। কারণ, ওই অংশে আরও গভীর ভাবে গর্ত কাটা হলে বিপত্তির আশঙ্কা প্রবল।
এই পরিস্থিতিতে সুরক্ষাজনিত কারণে, ঘটনাস্থলের দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে ঢালুপথ তৈরির কাজ চলছে। আর ওই ঢালুপথেই একটি ফাটল তৈরি হয়েছে। সেই ফাটল থেকেই দেখা যাচ্ছে, ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০ ফুট গভীরে বাড়িটির ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। সেখানেই শাহনাজের চাপা পড়ে থাকার সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত সাবধানতা নিয়ে ধীরে ধীরে উদ্ধারকাজ চলছে। ঢালুপথটি ধরেই উদ্ধারের সম্ভবনা প্রবল বলে মনে করছেন রঞ্জিতবাবুরা।
তবে, এ দিনও উদ্ধারকাজ দেরিতে শুরু হওয়ার অভিযোগ করেছেন শাহনাজের স্বামী মিরাজ শেখ। পাশাপাশি, এলাকাবাসী পুনর্বাসন কেন দেওয়া হয়নি, তা নিয়েও সরব হয়েছেন। মহম্মদ সেলিম, আফজল খানের মতো এলাকাবাসী বলেন, ‘‘এলাকাবাসীকে পুনর্বাসন দিয়ে জামবাদ খোলামুখ খনির সম্প্রসারণ হলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটত না।’’
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বহু পঞ্চায়েতের প্রধান বীরবাহাদুর সিংহ বলেন, ‘‘মিরাজকে ক্ষতিপূরণ ও শাহনাজের নিকটাত্মীয়কে যাতে চাকরি দেওয়া হয়, সে বিষয়ে ইসিএল-এর কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।’’ এই বিষয়টি নিয়ে এ দিন ইসিএল কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে বৈঠকে বসেন বীরবাহাদুরবাবু, পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা, কেকেএসসি নেতা হরেরাম সিংহ ও শাহনাজের স্বামী মিরাজ শেখ। ইসিএল কর্তৃপক্ষ আগামী ২২ জুন বিষয়টি নিয়ে ফের বৈঠক করা হবে বলে জানান।
সামগ্রিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে ইসিএল-এর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের আশ্বাস, ‘‘সমস্ত দিক ও দাবি খতিয়ে দেখে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy