Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

নিষেধে কাজ কতটা, সংশয় পর্যটন কেন্দ্রে 

আসানসোল শিল্পাঞ্চলে মাইথন, সালানপুরের সিদাবাড়ি, বাথানবাড়ি, সবুজদ্বীপ, বারাবনির পানিফলা, দোমোহনি গ্রাম ক্যানালপাড়, পানুড়িয়া ড্যাম ও অজয়ের পাড়ে রুনাকুড়া ঘাট লাগোয়া অঞ্চলে পিকনিকের জন্য ভিড় জমে।

মাইথনে নৌকাবিহারের ক্ষেত্রেও এ বার নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ছবি: পাপন চৌধুরী

মাইথনে নৌকাবিহারের ক্ষেত্রেও এ বার নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ছবি: পাপন চৌধুরী

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:০৭
Share: Save:

ডিসেম্বরের গোড়া থেকেই আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। শীত যত জাঁকিয়ে পড়বে, তা আরও বাড়বে। সাধারণত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে আসানসোলের আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পিকনিকের জন্য মানুষের ভিড় জমে যায়। তা চলে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বাইরে থেকে পিকনিক করতে আসা মানুষজন যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে নানা বন্দোবস্ত করে জেলা ও ব্লক প্রশাসন। এই সময়ে কেন্দ্রগুলিতে দূষণও বেড়ে যায়। তা আটকাতে বেশ কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলে প্রশাসনের কর্তারা জানান। যদিও তাতে ফল কতটা হবে, সংশয়ে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।

আসানসোল শিল্পাঞ্চলে মাইথন, সালানপুরের সিদাবাড়ি, বাথানবাড়ি, সবুজদ্বীপ, বারাবনির পানিফলা, দোমোহনি গ্রাম ক্যানালপাড়, পানুড়িয়া ড্যাম ও অজয়ের পাড়ে রুনাকুড়া ঘাট লাগোয়া অঞ্চলে পিকনিকের জন্য ভিড় জমে। জামুডিয়ার গুঞ্জন পার্ক, দরবারডাঙা, নন্ডি উদ্যান, রানিগঞ্জের মথুরাচণ্ডী, তিরাট লাগোয়া এলাকাতেও অনেকে চড়ুইভাতি করেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এর মধ্যে পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাইথন, সিদাবাড়ি, বাথানবাড়ি ও সবুজদ্বীপ। ছুটির দিনে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় জমে এই তিন কেন্দ্রে।

এ বার প্রশাসনের তরফে ‘গ্রিন মাইথন ক্লিন মাইথন’ স্লোগান দিয়ে পিকনিক করার আবেদন জানানো হয়েছে। সম্প্রতি মাইথনে সরকারি পর্যটন আবাসের আধুনিকীকরণের কাজের তত্ত্বাবধানে এসেছিলেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চারটি নতুন কটেজ ভ্রমণার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আরও কিছু কটেজ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সালানপুর ব্লক প্রশাসনের তরফে দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মাইথন, সিদাবাড়ি, বাথানবাড়ির পিকনিকের জায়গাগুলি সাজার কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে। বিডিও তপনকুমার সরকার জানান, মাইথন-সহ আশপাশের পাঁচ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে এই সময়ে পিকনিকের আসর বসে। তাই নাগরিক পরিষেবার বিষয়টি নজরে রাখতে হয়। এ বার পাঁচটি স্থায়ী শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। কয়েকটি অস্থায়ী শৌচাগারও রাখা হচ্ছে। তৈরি করা হয়েছে পার্কিং জ়োন। কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। থাকবে মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থা।

মাইথন, সিদাবাড়ি ও বাথানবাড়ি এলাকায় ভ্রমণার্থীদের কাছে মূল আকর্ষণ নৌকাবিহার। নৌকায় ভ্রমণের সময়ে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বিডিও জানান, এলাকায় নৌকার তিনটি ঘাট আছে। কতগুলি নৌকা ও স্পিডবোট প্রতিদিন চলবে, সেই তথ্য ও চালকদের নাম, ফোন নম্বর ব্লক প্রশাসনের কাছে জমা থাকবে। লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নৌকাবিহার করা যাবে না। একটি নৌকায় সর্বাধিক ছ’জন চড়তে পারবেন। মত্ত অবস্থায় নৌকায় চাপা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া নৌকায় নিজস্বী তোলা যাবে না। পিকনিকে আসা মানুষজনের মধ্যে নদীতে স্নানে নামার প্রবণতা থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতে বিপর্যয় মোকাবিলা দল মজুত রাখা হবে বলে আশ্বাস প্রশাসনের। কয়েকটি জায়গা বিপজ্জনক চিহ্নিত করে সতর্কীকরণ বোর্ডও দেওয়া হত্থে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশ অমান্য করলে মোটা টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানান প্রশাসনের কর্তারা।

তবে দিনের শেষে এই সব নির্দেশ বাস্তবে কতটা পালন হবে, সে নিয়ে সন্দিহান এলাকাবাসীর অনেকে। তাঁদের দাবি, প্রতি বছরই নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তার পরেও দুর্ঘটনা ঘটে। এর পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে দূষণ রোধে নজরের দাবিও রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Assansol Picnic Picnic in Winter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE