Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sand Mining

Sand Mining: নতুন নীতিতে বালি চুরি বন্ধ কতটা, ‘সংশয়’

বালি কারবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ২০১৬ সালের আগে দীর্ঘমেয়াদি ইজারা নিতে গেলে রাজ্য থেকেই অনুমতি নিতে হত।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ০৯:২৪
Share: Save:

বালি খাদানের ই-নিলাম ‘মাইন অ্যান্ড মিনারেল কর্পারেশন’কে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। এই নীতিতে বালি-খাদান থেকে রাজ্যের আয় বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও বালি চুরি কতটা কমবে, বা বালির দামের ফারাক হবে কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেক পক্ষের। নানা মহলের আবার দাবি, কোন নীতিতে বালি তোলার জন্য ই-নিলাম হবে, তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে বেআইনি বালি কারবার রুখতে রাজ্যের ভূমিকায় বৈধ খাদানের ব্যবসায়ীরা এক দিকে যেমন খুশি, অন্য দিকে তাঁদের আশঙ্কা, কেন্দ্রীভূত নীতির ফলে কর্পোরেট সংস্থা বা ভিন্ রাজ্যের বড় ব্যবসায়ীরা এই ব্যবসায় আসতে পারেন। তাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়বেন।

বালি কারবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ২০১৬ সালের আগে দীর্ঘমেয়াদি ইজারা নিতে গেলে রাজ্য থেকেই অনুমতি নিতে হত। তার পরে, সেচ দফতরের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তখন থেকে জেলায়-জেলায় খাদান ধরে ই-নিলামের ব্যবস্থা হয়। বালির গাড়ি বেরনোর রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন পরেই সুরক্ষা ব্যবস্থা ঢিলে হয়ে যায় বলে অভিযোগ। খাদানের দায়িত্ব ফের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের হাতে যায়।

পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ১৭৫টি বালি খাদান রয়েছে। এর মধ্যে ৭৫-৯০ শতাংশর মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের মধ্যে। জেলার এক বালি কারবারির দাবি, ‘‘ই-নিলাম চালু হওয়ার পরে, জেলায় অন্তত ৩০ জন ইজারাদার রয়েছেন ঝাড়খণ্ডের। তাঁরা স্থানীয়দের সঙ্গে যোগসাজস করে খাদান চালাচ্ছেন। রাজ্যের হাতে ই-নিলাম চলে গেলে কর্পোরেট সংস্থা বা ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা বালি ব্যবসায় আরও বেশি করে আসবেন। তাতে এলাকার যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসায় যুক্ত, তাঁরা অসুবিধায় পড়বেন।’’

সরকারের দাবি, এই নীতির ফলে, বালি-মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে। ‘বেআইনি’ বালি ব্যবসায় যুক্ত নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজনের দাবি, বর্তমান ব্যবস্থায় নিলাম হলেও তাদের বিশেষ অসুবিধা হবে না। ই-নিলাম চালু হওয়ার পরে তাদের ব্যবসার ধরন পাল্টে গিয়েছে। দামোদর বা অজয়ে দু’-এক জায়গায় অবৈধ বালি খাদান থাকতে পারে। তবে এখন ইজারাদারদের অনেকের সঙ্গে তাদের ‘মৌখিক চুক্তি’ হয়ে যায়। সে অনুযায়ী, নির্দিষ্ট জায়গার চেয়ে যতটা বেশি জায়গায় বালি তোলা হয়, তার ৬০ শতাংশ ইজারাদার, বাকি ৪০ শতাংশ বেআইনি কারবারিরা নিয়ে থাকে। এক কারবারির দাবি, ‘‘নিলাম কোথায় হল, তা জেনে আমাদের লাভ নেই। ব্যবসা তো এলাকাতেই করতে হবে। কয়লার নিলামও তো কেন্দ্রীয় ভাবে হয়। তাতে কি কিছু ঠেকানো গিয়েছে?’’

নতুন পদ্ধতিতে নিগম না ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, বালি খাদানগুলি নিয়ন্ত্রণ কে করবে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, খাদান-সুরক্ষায় সিসি ক্যামেরা-সহ ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবস্থা করা হবে। পূর্ব বর্ধমানের বালি খাদানের ইজারাদারদের একাংশ মনে করছেন, এই ব্যবস্থা ঠিক ভাবে করা গেলে, বেআইনি বালি কারবারিরা চাপে পড়বে। বালি ব্যবসায়ী শেখ নিয়াজউদ্দিনের দাবি, ‘‘বেআইনি কারবার শক্ত হাতে রুখতে পারলে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের সুবিধা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় আমরা আশার আলো দেখছি।’’

তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘দুর্নীতি রুখতে মুখ্যমন্ত্রী ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমাদের আশা, এতে রাজস্ব বাড়বে। বালির দামও কমবে।’’ জেলার বিজেপি নেতা সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘নিচুতলার সঙ্গে দুর্নীতি এ বার উপরের তলাতেও হবে। মানুষের কোনও সুরাহা হবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sand Mining
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy