ঘটনার পরে পড়শিদের ভিড়। ইনসেটে, স্ত্রী-সন্তানের দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সুব্রত দাস। পরে তাঁকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
পুকুর থেকে উদ্ধার হল বধূ ও তাঁর শিশুসন্তানের দেহ। বুধবার সকালে অণ্ডাল মোড়ের কাছে দেহ দু’টি জলে ভাসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বধূর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে দু’জনকে। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে বধূর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধৃত সুব্রত দাসের বাড়ি আদতে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বাগানপাড়া এলাকায়। অণ্ডালে ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঠিকাকর্মী হিসাবে কাজ করেন তিনি। অণ্ডাল মোড় এলাকার বাসিন্দা সত্যনারায়ণ কুণ্ডুর বাড়িতে স্ত্রী রূপালি দাস (৩৩) ও বছর দেড়েকের ছেলে সম্রাটকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন সুব্রত।
রূপালির বাপের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের কুকরাকুন্দা গ্রামে। তাঁর ভাই অমল দাস জানান, বছর তিনেক আগে দিদির সঙ্গে সুব্রতর বিয়ে হয়। তাঁর দাবি, সেই সময়ে সুব্রতকে তাঁরা এক বিঘা জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু অভাব-অনটনের কারণে তা দিতে পারেননি। অমল অভিযোগ করেন, সে কারণে তাঁর দিদির উপরে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালাতেন সুব্রত।
বাড়ির মালিক সত্যনারায়ণবাবু জানান, সোমবার তাঁর ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সে দিন বিকেলে সুব্রত তাঁদের জানান, তাঁর স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ মিলছে না। প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি। রূপালির দাদা সুদীপ দাসের দাবি, মঙ্গলবার সকালে সুব্রত তাঁদের ফোন করে জানান, রূপালির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বুধবার সকালে অণ্ডালে এসে জানতে পারি, বোন ও ভাগ্নের দেহ পুকুরে ভাসছে। রূপালি সাঁতার জানত। তাই ও ডুবে যেতে পারে না। আমাদের ধারণা, দু’জনকেই খুন করে পুকুরে ফেলে দিয়েছে সুব্রত। কড়া শাস্তি চাই।”
পাশের বাড়িতেই থাকেন সত্যনারায়ণবাবুর দাদা নরনারায়ণবাবু। তিনি অবশ্য বলেন, “সুব্রত ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে খারাপ সম্পর্ক ছিল বলে মনে হয়নি। ঝগড়াঝাঁটি হতে দেখিনি কখনও। প্রতিবেশীদের সঙ্গেও দু’জনের সুসম্পর্ক ছিল। সম্রাটের জন্মদিনে প্রতিবেশীদের নিয়ে আনন্দও করেছিলেন ওঁরা।’’ প্রতিবেশীদের একাংশের অবশ্য দাবি, সোমবার ওই দম্পতির মধ্যে সামান্য বচসা হয়েছিল বলে জেনেছেন তাঁরা। তবে তার জেরে এমন ঘটনা ঘটবে, তা ভাবতে পারেননি কেউই।
সুব্রত অবশ্য জমি না পাওয়ার কারণে অত্যাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, “সোমবার দুপুরে রান্না নিয়ে আমি একটু ক্ষুব্ধ হওয়ায় তা নিয়ে বচসা হয়েছিল। তার পরে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙার পরে রূপালি ও ছেলেকে দেখতে পাইনি। অনেক খুঁজেও কোথাও পাইনি ওদের।” এ দিন সকালে অণ্ডাল পুলিশ আউটপোস্টের কাছে পুকুরে দু’জনের দেহ ভেসে উঠেছে বলে খবর পান, জানান তিনি। সেখানে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পুলিশ জানায়, রূপালির বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। দেহ ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy