মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
লোকসভা ভোট মিটতেই পুরভোট হতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে দুর্গাপুরের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে। ভোট-প্রস্তুতি নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যেও তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সোমবার নবান্নের সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক মন্তব্যের পরে পুরভোট শীঘ্রই হবে কি না, সে নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বিরোধীদের মধ্যে।
সোমবার নবান্নে পুরসভাগুলিকে নিয়ে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের হালও খুব খারাপ। ওয়ার্ডগুলোয় কাজ হচ্ছে না।’’ যে সব পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ড নেই, সেখানে তিনি পরিষেবা দেখার বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। দুর্গাপুরে এর আগে পুরভোট হয় ২০১৭ সালের ১৩ অগস্ট। ৪৩টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতে জেতে তৃণমূল। বিরোধীরা সে বার চূড়ান্ত সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিল। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ মানেনি। বিজেপির দাবি, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দুর্গাপুরের ভোটারেরা পুরভোটের সন্ত্রাসের জবাব দিতে তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। প্রায় ৭৬ হাজার ভোটে এখান থেকে লিড পায় বিজেপি। ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পুরবোর্ডের শেষ হলেও, লোকসভা ভোটের ফলের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার এখানে পুরভোট করায়নি বলে দাবি বিরোধীদের।
এ বারও লোকসভা ভোটের ফল তৃণমূলের জন্য তেমন আশাব্যঞ্জক নয়। দুর্গাপুরের ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে আছে মাত্র ১০টিতে। লোকসভা ভোট মিটে যাওয়ার পরে কয়েক মাসের মধ্যে পুরভোট হবে, এমন জল্পনা ছড়িয়েছে শহরে। তার অন্যতম কারণ, শহরে শাসক দলের তরফে তৎপরতা বেড়েছে। কিন্তু সোমবার বোর্ডের মেয়াদ ফেরানো পুরসভা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এমন নির্দেশের পরে কয়েক মাসের মধ্যে পুরভোট হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে বলে মনে করছে বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, প্রায় দু’বছর ধরে নির্বাচিত বোর্ড নেই। ৪৩ ওয়ার্ডের পুরসভা চালাচ্ছে মাত্র ৫ জনের প্রশাসকমণ্ডলীর বোর্ড। লোকসভা ভোটের ফলে স্পষ্ট, এখনই পুরভোট হলে ক্ষমতা ধরে রাখা মুশকিল তৃণমূলের। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী প্রকারান্তরে পুরভোট পিছিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন কি না, সে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে শহরে।
প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তথা মেয়র পারিষদ বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তার নির্যাস, রাজ্যের পুরসভাগুলি দুর্নীতিতে ছেয়ে গিয়েছে। সেগুলো আগে শোধরাতে হবে। তার পরে বিধানসভার উপনির্বাচন। বর্ষা, পুজো, সব মিটলে তার পরে পুরভোটের কথা ভাবা যাবে! দুর্গাপুরে নাগরিক পরিষেবা শিকেয় উঠেছে। নির্বাচিত বোর্ড খুব জরুরি।” বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তাঁর দলের কেষ্ট-বিষ্টুদের দখলদারি, তোলাবাজির চরিত্র উন্মোচন করছেন। তিনি ভালই জানেন, পুরভোট হলে কী পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে ওঁদের দলকে।”
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, “আমরা বছরভর মানুষের পাশে থাকি। লোকসভা ভোটের ফলেও তা পরিষ্কার। তা ছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, দলের নাম করে বেআইনি কাজকর্মের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে। বিরোধীরা কী বলছেন তার কোনও গুরুত্ব নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy