দুঃস্থদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিচ্ছে পুলিশ। কুলটিতে। নিজস্ব চিত্র
করোনা মোকাবিলায় শাসন, কড়া নজরদারির পাশাপাশি, পুলিশ-প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিদের মানবিক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের অন্নের ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে, ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের জোগানের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, প্রবীণ নাগরিকদের প্রয়োজন মেটানো থেকে, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ সাহায্য সবই চলছে। বিনিময়ে সাধারণ শহরবাসীর কাছে তাঁদের একটাই আর্জি ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশ মেনে চলুন।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমানের জেলার শহর ও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরলেই পুলিশের এমন সব কার্যকলাপ নজরে পড়বে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘লকডাউন’-এর সময় বাড়ার পরেই সীমানায় নজরদারি আরও কড়া করেছে পুলিশ। যাতে ভিন্ রাজ্য থেকে এ রাজ্যে কেউ প্রবেশ করতে না পারে। এলাকার পাশাপাশি, সীমানায়ও ‘ড্রোন’-এর মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন জানিয়েছেন, জেলায় পাঁচটি সীমানা আছে। বরাকরের বেগুনিয়া ও ডুবুরডিহি। সালানপুরের বিহাররোড, চিত্তরঞ্জনের এক নম্বর গেট এবং বারাবনির রুনাকুড়া ঘাট। প্রতিটি জায়গায় ২৪ ঘণ্টা পুলিশ মোতায়ন থাকছে। অবাঞ্ছিত প্রবেশ আটকানো হচ্ছে। নজরদারির কোনও খামতি নেই শহর, গ্রামাঞ্চলেও। তিনি বলেন, ‘‘জেলার যে সব অঞ্চলে দোকান-বাজার আছে, অপেক্ষাকৃত জনবহুল অঞ্চলের তালিকা তৈরি করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ জন্য চলছে প্রচারও।’’ কেউ অবাধ্য হলে পুলিশও ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
শুধু শাসন বা নজরদারিতেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না পুলিশকর্মীরা। এই সঙ্কটে দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁরা মানবিকতার পরিচয় দিচ্ছেন। সম্প্রতি ডুবুরডিহি সীমানায় দেখা গিয়েছে, ভিন্ রাজ্য থেকে আসা এলাকায় আটকে পড়া ‘পরিযায়ী’ শ্রমিকদের দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। কলকাতা থেকে উত্তরপ্রদেশে যাওয়ার পথে শিশু ও মহিলাদের একটি দলকে নিজেদের উদ্যোগে গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ। শহরবাসী যখন ঘরবন্দি। এই সময়ে পুলিশকর্মীরা এলাকায় ঘুরে ঘুরে অভুক্তদের কাছে খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘ভবঘুরেদের জন্য বিশেষ আশ্রয়স্থল ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের একাধিক সামাজিক সংগঠন এই কাজে আমাদের সাহায্যও করছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, শহরের নিসঙ্গ প্রবীণদের সাহায্যের জন্য পুলিশের বিশেষ দল ‘নমন’ রয়েছে।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জেলায় রক্তের আকাল মেটাতে পুলিশকে রক্তদান করার অনুরোধ করেছেন। সেই অনুরোধে সাড়া ইতিমধ্যে একাধিক থানার তরফে বিশেষ রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আসানসোল ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়। কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ থাকলেও পুলিশ-প্রশাসনের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন জেলার বাসিন্দাদের একাংশ।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy