Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
West Bengal Lockdown

শাক, খেলনা বিক্রি করে সংসারে সাহায্য দুই খুদের

যজ্ঞেশ্বর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সংসার চালাতে গুসকরা হাটে শাক বিক্রি করে।

বিক্রিবাটা। বাঁ দিকে, চাঁদনিসুশীলা ও ডান দিকে, স্বরূপ। নিজস্ব চিত্র।

বিক্রিবাটা। বাঁ দিকে, চাঁদনিসুশীলা ও ডান দিকে, স্বরূপ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুসকরা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ০২:২৯
Share: Save:

লকডাউনের জেরে কাজ মিলছে না অভিভাবকদের। এই পরিস্থিতিতে হাটে শাক বিক্রি, খেলনা বিক্রি করে সংসারে সাহায্য করছে নাবালক-নাবালিকা।

গুসকরার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খয়রাপাড়ার বছর পনেরোর স্বরূপ হালদার গুসকরা পিপি ইনস্টিটিউশনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বরূপকে ঠাকুরদা-ঠাকুমার কাছে রেখে বাবা-মা বছর দু’য়েক আগে হরিয়ানায় কাজ করতে চলে যান। এত দিন সেখান থেকে তাঁরা সংসার খরচের টাকা পাঠালেও লকডাউনের সময় থেকে আর পারছেন না। ফলে, পেশায় ভ্যানচালক ঠাকুরদা বৃন্দেশ্বর হালদারের পক্ষে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে খেলনা বিক্রি শুরু করেছে স্বরূপ। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর অবধি স্থানীয় এক শিশু চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে খেলনা বিক্রি করে সে।

স্বরূপ জানায়, রোজ শ’খানেক টাকা উপার্জন হয়। তার ঠাকুমা শোভারানিদেবী বলেন, ‘‘ছেলের টাকায় সংসার চলত। লকডাউনে ছেলে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে স্বামীর উপার্জনও তেমন ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে নাতির কাজে বেরনো মেনে নিতে হয়েছে। সংসার খরচের পাশাপাশি, ওর পড়াশোনার খরচও জোগাড় হচ্ছে এ ভাবে।’’ গুসকরা পিপি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মিঠুন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না। স্কুল থেকে নিশ্চয় ছাত্রটি মিড-ডে মিলের সামগ্রী পায়। আরও কী ভাবে ওকে সাহায্য করা যায়, দেখা হবে।’’

গুসকরা পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ধারাপাড়া মাঠপাড়ার বাসিন্দা অখিল মাহাতো ও সন্ধ্যা মাহাতোর ছয় ছেলেমেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট বছর বারোর চাঁদনিসুশীলা। যজ্ঞেশ্বর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রী সংসার চালাতে গুসকরা হাটে শাক বিক্রি করে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, লকডাউনের সময় থেকে কর্মহীন লিলুয়ার একটি অ্যালুমিনিয়াম কারখানার শ্রমিক অখিলবাবু। সন্ধ্যাদেবী বলেন, ‘‘ওর বাবা বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারে না। যেটুকু টাকা জমেছিল, তা-ও শেষ হয়ে গিয়েছে। সংসার চালাতে আমি মাঠ থেকে শাক তুলে এনে দিই। চাঁদনি বাজারে গিয়ে বিক্রি করে।’’ পরিবার সূত্রে জানা যায়, চাঁদনির এক দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দাদা দিল্লিতে কাজ করতেন। লকডাউনে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে এলেও বাজারে শাক বিক্রি করতে যেতে চান না। তাই চাঁদনিকেই যেতে হয়। সন্ধ্যাদেবী জানান, রেশনের জিনিস পেয়েছেন। তার সঙ্গে সংসারের বাকি খরচ চালাতেই মেয়ে শাক বিক্রি করে।

দুই নাবালক-নাবালিকার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার।

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Guskara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy