—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সম্প্রতি একশো দিনের প্রকল্পের বকেয়া পাবেন যাঁরা, তাঁদের নিয়ে দিল্লিতে গিয়েছিল তৃণমূল। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজাও দেখা গিয়েছে। এই আবহে, যাঁরা কাজ করেও টাকা পাননি, তাঁরা বলছেন, পুজোর আগে বকেয়া টাকাটা পেলে ভাল হত। পাশাপাশি, তাঁদের আক্ষেপ, একশো দিনের কাজ না মেলায় আরও বেশি করে দিনমজুরির উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে। জেলা পরিষদের দাবি, পশ্চিম বর্ধমানের ১,৪৩,০৭৬ জনের প্রায় ১৯ কোটি টাকা মজুরি বাবদ বকেয়া রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানাচ্ছেন সালানপুরের কোটশালের জালি কোড়া। জানান, স্বামীর মৃত্যুর পরে, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে একশো দিনের কাজই ছিল মূল ভরসা। কিন্তু গত দু’বছর ধরে কোনও কাজ ও বকেয়া টাকা না মেলায় দিনমজুরি ও পরিচারিকার কাজ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “পুজোর মুখে বকেয়াটা পেয়ে গেলে ছেলেমেয়েকে নতুন পোশাক কিনে দিতে পারতাম।”
একই কথা বলছেন সালানপুরের মাধাইচকের কার্তিক মোদী থেকে বারাবনির
পুঁচড়ার পূর্ণিমা রুইদাসেরাও। কার্তিক জানান, তাঁর প্রায় আড়াই হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। বর্ষায় তাঁর বাড়ির একাংশ ভেঙে গিয়েছে। সেটা দেখিয়েই তিনি বলেন, “পুজোয় কোনও আনন্দ নেই। বাড়িতে অভাব। বকেয়াটা পেলে ঘরটা মেরামত করতে পারতাম।” পূর্ণিমার বকেয়া রয়েছে প্রায় দু’হাজার টাকা। তিনি জানান, স্বামী অসুস্থ। ছেলে ছোট। সংসার চালাতে খুবই সমস্যা হয়।
এ দিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউড়ি বলেন, “২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে কেন্দ্রের থেকে যথাক্রমে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি এবং প্রায় সাড়ে ছ’কোটি টাকা মজুরি বাবদ বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া, ওই দুই অর্থবর্ষে উপকরণ বাবদ পাওনা রয়েছে যথাক্রমে প্রায় সাড়ে তিন কোটি ও সাত কোটি টাকা।”
পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। বিশ্বনাথ বলেন, “আমরা কেন্দ্রের কাছে বার বার বকেয়া চেয়েছি। তা দেওয়া হয়নি। জবকার্ড হোল্ডারেরা সমস্যায় পড়েছেন। আমাদের নেতৃত্ব দিল্লিতেও গিয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আলোচনা করেননি। গরিব মানুষকে এই সমস্যায় ফেলার জন্য পুরোপুরি দায়ী বিজেপি।”
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি
নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীও। তাঁর কথায়, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বঙ্গবাসীকে ভাতে মারতে চাইছে। রাজ্যবাসী সবটাই দেখছেন।”
যদিও, তৃণমূলের অভিযোগে আমল দেয়নি বিজেপি। দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এই পুরো পরিস্থিতির জন্য তৃণমূল ও রাজ্য সরকার দায়ী। কেন্দ্র সরকার খরচের হিসাব চেয়েছে। রাজ্য তা দিতে পারেনি। তাই বকেয়া মেটানো হচ্ছে না। গত কয়েক বছর ভুয়ো ও মৃত মানুষের নামে জব কার্ড তুলে সেই টাকা পকটে ভরেছে তৃণমূল। এখন তারই ফল ভুগছেন আমাদের রাজ্যের সাধারণ মানুষ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy