এমনই লাইন পড়েছিল ভোট কর্মীদের। বর্ধমানে। ছবি: উদিত সিংহ।
ভোটের কাজে যাওয়ার চিঠি যাতে না আসে, পুজো দেওয়া থেকে মানত করা, নানা পন্থা নিয়েছিলেন অনেকেই। তবু তালিকায় নাম রয়েছে, চিঠিও পৌঁছে গিয়েছে বাড়িতে। ফের বুথে যাওয়ার প্রস্তুতির মধ্যেই এখন প্রার্থনা, বোমা-গুলির আওয়াজ যেন শুনতে না হয়। আবার, ভোটের কাজের তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে জমা পড়া আবেদনে এমন বিচিত্র নানা কারণ দেখিয়েছেন অনেকে, যা দেখে চোখ কপালে পূর্ব বর্ধমান জেলা নির্বাচনী কার্যালয়ের আধিকারিকদের।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৪,০১০টি বুথের জন্যে ২৭,৫৫১ জন কর্মীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে প্রশিক্ষণও শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু ভোটের কাজের জন্য চিঠি পাওয়া কর্মীদের অনেকেরই প্রশ্ন, ‘‘এত দুশ্চিন্তা নিয়ে কি গণতন্ত্রের প্রহরী হওয়া যায়?’’
এ বার প্রধান শিক্ষকদেরও প্রিসাইডিং অফিসারের ‘ডিউটি’ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাতে ক্ষুব্ধ জেলার কয়েক জন প্রধান শিক্ষক। তাঁরা কমিশনের কাছে আবেদন করেছেন, রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের পরিষেবা তাঁদের মাধ্যমে পায় পড়ুয়ারা। তাই পঞ্চায়েত ভোটে এই কাজ দেওয়া ঠিক হয়নি। গ্রাম-বাংলায় ঘুরে কাজ করতে হয়, তাই পশু চিকিৎসকদের ভোটের কাজের চিঠি পাঠিয়েও কমিশন ঠিক করেনি, এমন দাবিও রয়েছে
কালনার এক কর্মী জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। ভোটের দিন, ৮ জুলাইতেই প্রসব হওয়ার কথা। ‘এই অবস্থায় ভোটের ডিউটি কী করা যায়?’— প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। শুধু তিনি নন, সে দিনই আরও কয়েক জনের সন্তান প্রসবের কথা রয়েছে বলে জমা পড়া আবেদনে জেনেছেন কমিশনের কর্মীরা।
পঞ্চায়েত ভোটের জন্য চিঠি পাঠানো শুরুর পর দিন থেকেই নাম কাটানোর জন্য জেলা নির্বাচনী কার্যালয়ে লাইন পড়ে গিয়েছে। সোমবার কাছা পরে এসে এক সরকারি কর্মী আবেদন করেন, বাবা মারা যাওয়ার জন্য তাঁর পক্ষে ভোটের ডিউটি করতে যাওয়া সম্ভব হবে না। সব শুনে কমিশনের এক আধিকারিক প্রশ্ন করেন, ২৭ জুনের মধ্যে সব কাজকর্ম মিটে যাচ্ছে। তারও প্রায় দু’সপ্তাহ পরে ভোট। তাহলে যেতে সমস্যা কোথায়? ভর্ৎসনার মুখে চুপসে যান ওই কর্মী। বর্ধমান শহরের একটি স্কুলের এক কর্মীর দাবি, তাঁকে প্রতিদিন স্কুল খুলতে হয়। তিনি ডিউটিতে গেলে স্কুলে তালা পড়ে যাবে। এ সবের সঙ্গে অসুস্থতা, মানসিক সমস্যার কারণও দেখিয়েছেন অনেকে। এক জন জানিয়েছেন, ‘আমি কয়েক মাস ধরে একটি চোখে দেখতে পাচ্ছি না। কয়েক দিন ধরে অন্য চোখেও ঝাপসা দেখছি।’
কেউ-কেউ তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানাতে স্ত্রীকেও পাঠাচ্ছেন। এমনই এক স্ত্রীর আবেদন, ‘‘আমার শাশুড়ি অসুস্থ। স্বামী না থাকলে কে দেখবে? একা সামলানো কি সম্ভব?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy