চরণপুরে খনিতে গোলমালের পরে। ছবি: পাপন চৌধুরী।
কয়লা পাচার বন্ধে অভিযান চালানোর সময়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে সিআইএসএফের বিবাদে ধুন্ধুমার বাধল বারাবনির চরণপুরে। বুধবার সকালে এই ঘটনায় তেতে ওঠে গ্রাম লাগোয়া খোলামুখ খনি চত্বর। কিছু লোকজনের ছোড়া ইট-পাথরে কয়েক জন খনিকর্মী জখম হন বলে অভিযোগ। নিরাপত্তার অভাবে কাজ বন্ধ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রমিকেরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ দিন খনির কাজ চালু করা যায়নি বলে খনি সূত্রে জানা গিয়েছে।
বারাবনির চরণপুরে সম্প্রতি একটি খোলামুখ খনি তৈরি করে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। ইসিএলের কাছ থেকে লিজ় নিয়ে একটি বেসরকারি ঠিকা সংস্থা কাজ করছে সেখানে। খনি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, খনির কাজ শুরুর আগে প্রায়ই ভোর থেকে কিছু লোকজন খনিতে ঢুকে কয়লা চুরি করে। চোরাই কয়লা গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে লুকিয়ে রাখা হয়। পরে সুবিধামতো অন্যত্র পাচার করা হয় বলে অভিযোগ। বুধবার ভোর থেকে জমিয়ে রাখা ওই অবৈধ কয়লা ধরপাকড়ে অভিযানে নামে সিআইএসএফ। অশান্তির সূত্রপাত হয় সেখান থেকেই।
অভিযোগ, এলাকাবাসীর একাংশ সিআইএসএফের দিকে যথেচ্ছ ইট-পাথর ছোড়ে। পাল্টা সিআইএসএফ লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায়। দু’পক্ষের গোলমাল বেধে যায়। এক সময়ে সিআইএসএফ বাহিনী গ্রাম থেকে ফিরে খনি চত্বরে ঢোকে। জনতা তখন খনি লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুঁড়তে থাকে বলে অভিযোগ। ঘটনার সময়ে খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের কয়েক জন ইটের ঘায়ে জখম হন। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় শ্রমিকেরা খনি ছেড়ে পালিয়ে যান।
প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে এই পরিস্থিতি চলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারাবনি থানার পুলিশ। বিভিন্ন খনি থেকে আরও সিআইএসএফ বাহিনী আনা হয়। পুলিশের তরফে গ্রামবাসীর সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। গ্রামবাসীর একাংশের তরফে দাবি ওঠে, এলাকায় খনির কাজ চলছে। কিন্তু স্থানীয়দের কাজ দেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে, খনি থেকে কয়লা তুলে তাঁরা সংসার চালাচ্ছেন। সেই কয়লা বাজেয়াপ্ত করা যাবে না, দাবি তাঁদের।
খনি কর্তৃপক্ষের তরফে ম্যানেজার জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করে কাজ বন্ধ রেখে চলে গিয়েছেন। নিরাপত্তা না পেলে তাঁরা কাজে নামতে চাইছেন না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রায়ই গ্রামের কিছু লোকজন
খনিতে কর্মরত শ্রমিক-কর্মীদের আক্রমণ করছেন। গত কয়েক মাসে প্রায় ১২ বার আক্রমণ চালানো হল। এ ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালানো খুবই মুশকিল।’’ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy