কাঁকসার গ্রামে উনুনেই চলছে রান্না। নিজস্ব চিত্র।
রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ছে অহরহ। কমছে ভর্তুকিও। বুদি মুর্মু, সন্ধ্যা লোহারের মতো কাঁকসার নানা এলাকার দরিদ্র পরিবারের মহিলারা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রের ‘উজ্জ্বলা যোজনা’য় রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার ও আভেন পেয়ে তাঁরা খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানেই ফিরতে বাধ্য হয়েছেন কাঠের উনুনে। এলাকায় সিলিন্ডার বুক করার প্রবণতাও কিছুটা কমেছে, এমনই দাবি ওই প্রকল্পে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহকারী ডিলারদের একাংশের।
বছরখানেক আগে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মহিলাদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ওই প্রকল্পটির ঘোষণা করে। ডিলারদের একাংশের দাবি, কাঁকসা ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েত এলাকায় পাঁচ ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে প্রায় ২৫ হাজার পরিবারে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়। অনেক আদিবাসী পরিবারেও ওই প্রকল্পে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে, এ বার সব মহিলারাই ‘উজ্জ্বলা যোজনা’য় গ্যাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিলার বলেন, ‘‘গত কয়েক মাসে গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বুকিংয়ে প্রভাব পড়েছে। সিলিন্ডার প্রতি ভর্তুকিও কমানো হয়েছে। এর কারণ আমরা জানি না।’’ তবে তাঁর সংযোজন: ‘‘এমন অনেক গ্রাহক রয়েছেন, যাঁরা আগে প্রতি মাসে গ্যাস বুক করতেন। এখন তাঁরা দু’-তিন মাসে একটি সিলিন্ডার বুক করছেন।’’
কেন এই পরিস্থিতি? কাঁকসার বাসিন্দা নির্মলা বাউরি, অনিতা টুডুরা ওই প্রকল্পে গ্যাসের সংযোগ নিয়েছিলেন। তাঁদের কথায়, ‘‘বেশ কয়েক মাস ধরে ভর্তুকি হিসেবে মাত্র ৩০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। আগে ভর্তুকি অনেক বেশি ছিল। সিলিন্ডারের দাম হয়েছে ৮৫৯ টাকা। আমাদের মতো অনেকেই এখন গ্যাস ব্যবহার করতে চাইছেন না।’’ জঙ্গল থেকে কাঠ সংগ্রহ করে তাঁরা এখন উনুনেই রান্না করছেন।
গ্যাসের দাম বৃদ্ধিকে হাতিয়ার করে বিজেপি ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল ও বাম। তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সীর দাবি, ‘‘সিলিন্ডারের দাম দিন-দিন বাড়ছে। সিলিন্ডার প্রতি নাম মাত্র ভর্তুকি মিলছে। এই প্রকল্প সম্পূর্ণ ব্যর্থ।’’ সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলের দাবি, ‘‘মানুষ এখন গ্যাস সিলিন্ডার সরিয়ে রেখে ঘুঁটে ও কাঠের ব্যবহার করছেন। এ ভাবে মানুষকে বোকা বানিয়ে কোনও লাভ হবে না বিজেপির।’’ যদিও বিজেপির বর্ধমান (সদর) জেলা সহ সভাপতি রমন শর্মার দাবি, ‘‘বহু মহিলা এই প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন। বিরোধীরা সে সত্য চাপা দিতে চাইছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy