Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

পুকুর শুকনো, পুড়ে ছাই গ্রাম

দমকা হওয়ায় আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল একের পর এক বাড়িতে। অসহায়ের মত দমকলের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া মহারাজনগর গ্রামের বাসিন্দাদের কিছু করার ছিল না। কারণ, গরমের শুরু থেকেই গ্রামের পুকুরগুলি শুকিয়ে কাঠ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০২:২৭
Share: Save:

দমকা হওয়ায় আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল একের পর এক বাড়িতে। অসহায়ের মত দমকলের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া মহারাজনগর গ্রামের বাসিন্দাদের কিছু করার ছিল না। কারণ, গরমের শুরু থেকেই গ্রামের পুকুরগুলি শুকিয়ে কাঠ। দমকলের চারটি ইঞ্জিন প্রায় ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় যখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনল, ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে গ্রামের একটা অংশ।

বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ আগুন লাগে নিতুড়িয়া ব্লকের জনার্দনডি পঞ্চায়েতের মহারাজনগর গ্রামে। পুড়ে যায় প্রায় ৩০টি বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, গ্রামের উপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ড। বিদ্যুতের তার থেকে আগুন লাগে নীচের একটি বাঁশঝাড়ে। জোরে হাওয়া বইছিল। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে নিজেরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু আগুনের সঙ্গে বেশিক্ষণ যুঝতে পারেননি। খবর পেয়ে গ্রামে চলে আসে নিতুড়িয়া এবং রঘুনাথপুর থানার পুলিশ। আসেন রঘুনাথপুরের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। আধ ঘণ্টার মধ্যে রঘুনাথপুর থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন গ্রামে এসে পৌঁছয়।

কিন্তু সেই ইঞ্জিনেও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় কিছুক্ষণের মধ্যে রঘুনাথপুরের ডিভিসির নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আরও দু’টি ইঞ্জিন আনা হয়। বড় মাপের আগুন লাগার খবর পেয়েই পুরুলিয়া থেকে রওনা হয়েছিল দমকলের একটি ইঞ্জিন। সেটিও এসে পৌঁছয় গ্রামে। পাশাপাশি, নিতুড়িয়ার দু’টি কারখানা দু’টি জলের ট্যাঙ্ক আনানোর ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রশাসন। সব মিলিয়ে ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ দিন মহারাজনগর গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, আগুনে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দু’টি পাড়ার প্রায় তিরিশটি পরিবার। তার মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি আদিবাসী পাড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন টুডু, বৈদ্যনাথ টুডু, হরিপদ পরামাণিকরা বলেন, ‘‘গ্রামে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে সবাই মিলে নেভানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু একে হাওয়া, তার উপর জল নেই। ফুলকি পড়ে একের পর এক বাড়ি দাউদাউ করে জ্বলে উঠছিল।’’ আগুন লাগার পর গ্রামে আসেন রঘুনাথপুরের বিদায়ী বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি এবং নিতুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তিভূষণপ্রসাদ যাদব। আদিবাসীপাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর। দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করেন। গৃহস্থালির জিনিসপত্র পু়ড়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন তাঁরা। পূর্ণচন্দ্রবাবু জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য করার জন্য ব্লক প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিডিও (নিতুড়িয়া) সংলাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য ইতিমধ্যেই অস্থায়ী ছাউনি এবং খাবার-সহ প্রয়োজনীয় ত্রাণের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। পরে ওই পরিবারগুলির জন্য ত্রাণ দফতর থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy