দুর্গাপুরে সেক্টর টু-সি সর্বজনীনের মণ্ডপ।
পুজোর বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে বিশেষ কোনও বদল ঘটেনি বুধবার। এই পরিস্থিতিতে এ দিন জেলার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, আদালতের রায় মানার প্রস্তুতি। ‘সক্রিয়’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটও।
‘নো এন্ট্রি জ়োন’: দুর্গাপুরের বুদ্ধবিহার সার্বজনীন, বিধাননগরের ক্লাব স্যান্টোস, বিধাননগরের সেক্টর ২ সি-র পুজোয় মণ্ডপের বাইরে নো এন্ট্রি বোর্ড ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে। আসানসোল ও দুর্গাপুরের বেশির ভাগ জায়গাতেই চলছে ব্যারিকেড নির্মাণের প্রস্তুতিও। তবে নিয়ামতপুর সর্বজনীনের পুজো-মণ্ডপ রাস্তা ঘেঁষে তৈরি হওয়ায় পথচারীদের ব্যারিকেডের কারণে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা। আয়োজকদের তরফে তুহিন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ বিষয়টি দেখছে।’’
অন্য ব্যবস্থা: আদালত জানিয়েছে, নো এন্ট্রি জ়োনে সিঁদুর খেলা ও পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া যাবে না। আসানসোলের আপকার গার্ডেন পুজো কমিটির তরফে সিদ্ধার্থ রায় জানান, দর্শনার্থীদের পুজো দেখার জন্য একাধিক জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছে। তা ছাড়া, খোলা মাঠে ফুল ছাড়া পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রায় মেনে কুলটির শ্রীপুর রোড পুজো কমিটি-সহ অধিকাংশ পুজোর উদ্যোক্তারা এ বার সিঁদুর খেলা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন এ দিন।
আঁকা হচ্ছে সুরক্ষা বলয়। পাণ্ডবেশ্বরের খোট্টাডিহি কোলিয়ারি সর্বজনীনের মণ্ডপ চত্বর।
দুর্গাপুরেও বেশির ভাগ পুজো কমিটিই জানিয়েছে, এ বার সিঁদুর খেলা বন্ধ থাকছে। তবে, ব্যারিকেডের বাইরে কয়েকজন দূরত্ববিধি মেনে পুরোহিতের সঙ্গে পুষ্পাঞ্জলির মন্ত্রোচ্চারণ করতে পারবেন, তা-ও ফুল ছাড়া। যেমন, ডিপিএলের আদিবেদী সর্বজনীন পুজো কমিটির সম্পাদক উমাপদ দাস জানান, চাইলে ব্যারিকেডের বাইরে সর্বোচ্চ দশ জন দূরত্ববিধি মেনে দাঁড়িয়ে পুরোহিতের সঙ্গে পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারবেন।
অনুদানের টাকায়: রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পাওয়া অনুদানের টাকায় বেশির ভাগ পুজো কমিটিই মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার বিলির কথা জানিয়েছে। ডিএসপি টাউনশিপের মার্কনি দক্ষিণপল্লি সর্বজনীন পুজো কমিটির সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দিনে তিন বার মণ্ডপ, ক্লাব, অনুসন্ধান কেন্দ্র, আশপাশের রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। রয়েছে মাস্ক বিলির কর্মসূচিও। অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদের তরফে সোনা চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই অনুদানের টাকায় দর্শনার্থীদের জীবাণুমুক্ত করার যন্ত্র বসানো হয়েছে। থাকছে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার, মাস্ক বিলির ব্যবস্থাও।
সমস্যা? আদালতের রায় মানতে গিয়ে সে ভাবে কোনও সমস্যা হচ্ছে না বলেই জানিয়েছে বেশির ভাগ পুজো কমিটি। তাদের মতে, বিসর্জন, পুজোর দিনের নানা কর্মসূচি, পঙ্ক্তিভোজ-সহ নানা কিছুর জন্য আলাদা খাতে টাকা ধরা থাকে। কিন্তু এ বার সেগুলির জন্য কার্যত কোনও খরচ হচ্ছে না। তাই সে টাকাতেই এ বার ব্যারিকেড দেওয়া, জায়ান্ট স্ক্রিন বসানোর মতো কাজগুলি করা হচ্ছে। যদিও, আর্থিক সমস্যার কথা জানিয়েছে সিটি সেন্টারের সিমেন্ট পার্ক পুজো কমিটির মতো হাতে গোনা কয়েকটি পুজো কমিটি।
কোর্টের নির্দেশের পরেই বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে নিয়ামতপুরের মণ্ডপে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান, ওমপ্রকাশ সিংহ, পাপন চৌধুরী
এ দিন, জেলার বিভিন্ন পুজোগুলিতে ঘুরে দেখা গিয়েছে, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে চলছে নজরদারি। পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন বলেন, ‘‘আমরা ধারাবাহিক ভাবে নজরদারি চালাচ্ছি। বুধবার রাত পর্যন্ত কোথাও আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ সামনে আসেনি।’’ তবে ব্যারিকেডের বাইরেও ৫০০ থেকে এক হাজারটি সুরক্ষা বলয় আঁকা, বাইরের জেলা থেকে পুলিশকর্মীদের আনা, এনসিসি ক্যাডেটদের নজরদারিতে কাজে লাগানোর মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে পুলিশের তরফে। পাশাপাশি, বিভিন্ন পুজো কমিটি স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা বাড়ানোর কথাও জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy