Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bardhaman Station

গোষ্ঠী-সংঘর্ষে রাতে তপ্ত স্টেশন চত্বর

পুলিশ সূত্রের দাবি, রবিবার রাতে বর্ধমান স্টেশনের উড়ালপুলে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুলছিলেন তৃণমূলের বর্ধমানের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি গোপাল সোনকারের ছেলে।

 রবিবার রাতে ভাঙচুর করা হয়েছে গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

রবিবার রাতে ভাঙচুর করা হয়েছে গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৩ ০৯:৫৫
Share: Save:

এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে রবিবার গভীর রাতে বর্ধমান স্টেশন চত্বরে সংঘর্ষে জড়াল দু’টি গোষ্ঠী। বেশ কয়েকটি অস্থায়ী দোকান বা গুমটি, গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। বর্ধমান থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সোমবার দুপুরেও উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হলে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যেই এই গোলমাল বলে স্থানীয় নানা সূত্রের দাবি। এ দিন ব্যবসায়ীদের তরফে এক জন বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ জানায়, অন্তত সাতটি দোকান ও বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রের দাবি, রবিবার রাতে বর্ধমান স্টেশনের উড়ালপুলে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুলছিলেন তৃণমূলের বর্ধমানের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি গোপাল সোনকারের ছেলে। তখন তাঁকে আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা জেলা তৃণমূল নেতা ইফতিকার আহমেদের (পাপ্পু) কয়েক জন ঘনিষ্ঠ টিপ্পনী কাটেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে একপ্রস্ত অশান্তি হয়। এর পরে ওয়ার্ড সভাপতির ছেলে এলাকায় ফিরে গিয়ে পাপ্পুর লোকেরা তাঁকে ‘হেনস্থা’ করেছেন বলে জানান। তার পরেই গোপালের অনুগামী বলে পরিচিত লোকজন স্টেশন চত্বরে তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। অপর গোষ্ঠীর লোকজন প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সোমবার দুপুরে পাপ্পুর নেতৃত্বে স্টেশন চত্বরে মিছিল হয়। মিছিল থেকে একটি দল ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয়ের দিকে যেতে গেলে পুলিশ আটকে দেয়।

পাপ্পুর অভিযোগ, “যাঁরা এ সব কাজ করেছেন, তাঁরা এক সময় চুরি-ডাকাতি করতেন। পরে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী হয়ে যান। আমাদের দুর্ভাগ্য, এখন তাঁরা আমাদের দলে ঢুকেছেন!” তাঁর কথায়, “গভীর রাতে তরোয়াল, লাঠি, টাঙ্গি, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একের পর এক দোকান ভাঙচুর করেছে, ভাড়ার গাড়ি তো বটেই, যাত্রীদের রেখে যাওয়া গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। আসলে চুরি, ডাকাতি, লুটপাট করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, গোটা দশেক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদের পাপ্পুর নেতৃত্বে স্টেশন থেকে পার্কাস রোড পর্যন্ত মিছিল করেন স্থানীয় বেশ কিছু ব্যবসায়ী ও টোটো চালকেরা।

যদিও তৃণমূলের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি গোলাপ সোনকার সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর পাল্টা দাবি, “আমার ছেলেকে স্টেশন চত্বরে প্রথমে গালিগালাজ ও মারধর করা হয়। এর পরে এলাকার কিছু লোক স্টেশন চত্বরে গিয়ে মারধর করার কারণ জানতে চেয়েছিলেন। তাঁরা কেউ ভাঙচুর বা মারধরে যুক্ত নন। বরং, পাপ্পুর লোকেরা নিজেরাই ভাঙচুর চালিয়ে আমাদের ফাঁসাতে চাইছে।’’

এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিধায়ক (বর্ধমান দক্ষিণ) খোকন দাস। তিনি বলেন, “যাঁরা রাতের অন্ধকারে গাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। বর্ধমান শহরে এ রকম গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না।’’ এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেও দাবি তাঁর। যদিও বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “তোলাবাজির টাকার ভাগ নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত ও আতঙ্কিত হচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে নিত্যযাত্রীরা। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Station Unrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy