—প্রতীকী চিত্র।
ঘরের সামনে ঠায় বসে দুই মহিলা। দু’জনের দাবি, তাঁদের স্বামী এক জনই। আরও এক জনকে বিয়ে করেছেন তাঁদের স্বামী। তাঁর দেখা মিলছে না। এ কি বিবাহ বিভ্রাট? না কি স্ত্রী বিভ্রাট? না কি যত দোষই স্বামীর? না, কোনও সিরিয়াল বা যাত্রাপালা নয়। এমনটাই ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার। কালনার ধর্মডাঙ্গায় ‘ধর্মসঙ্কটে’ পড়লেন শুভঙ্কর হালদার। তিন যুবতী দাবি করলেন, তাঁরাই শুভঙ্করের বিয়ে করা বৌ। সবাই চাইলেন ‘স্ত্রীর মর্যাদা’।
শুক্রবার দুপুরে কালনার ধর্মডাঙ্গা এলাকায় শুভঙ্করের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন দুই মহিলা। দাবি কী? ধর্নায় বসা চামেলি হাওলাদার নামে এক জনের দাবি, তিনি শুভঙ্করের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিয়ের পর স্বামী তাঁর দায়িত্ব নেননি। বাপের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য করা হয় তাঁকে। সেখানেই তিনি আছেন বিগত বেশ কয়েক বছর। কিন্তু পরে জানতে পারেন, তাঁর স্বামী আগেও একটি বিয়ে করেছিলেন। সেই স্ত্রীর সঙ্গেও একই কাণ্ড ঘটিয়েছেন শুভঙ্কর। তাঁকেও রেখে এসেছিলেন বাপের বাড়ি। এই ভাবে সঙ্গে তাকে বাপের বাড়ি রেখে গিয়ে তৃতীয় বিয়েও সেরে ফেলেন। কিন্তু কী বলছেন ‘তৃতীয়া’? তৃতীয় পক্ষের স্ত্রীর দাবি, তাঁর সঙ্গে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছেন শুভঙ্কর। তার পর বেশ কয়েক বার টাকা-পয়সাও নিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘হয় সমস্ত টাকা-পয়সা ফেরত দিন নয়তো, আমায় সসম্মানে ঘরে তুলুন।’’ এই দাবি নিয়ে তিনিও শুক্রবার শুভঙ্করের বাড়ির সামনে বসে পড়েন। দ্বিতীয় স্ত্রী চামেলি বলেন, ‘‘আমি বিয়ের আগে কিচ্ছু জানতাম না। আমায় কিছু বলেনি। মাঝেমধ্যে কাজের নাম করে পালাত। হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে আজ ধরতে এসেছি।’’ অন্য দিকে, তৃতীয় পক্ষের স্ত্রীর দাবি, ‘‘ও কি কচি খোকা? আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। আমার আগে দু’জনকে বিয়ে করেছে। এখানে এসে আবার একটি মেয়েকে ফাঁসানোর তালে আছে। আমার কাছে সব প্রমাণ আছে।’’
যদিও অভিযুক্ত শুভঙ্করের দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার আগে কোনও বিয়ে হয়নি। যে মহিলা আমার দ্বিতীয় বৌ বলে দাবি করছে, সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে মামলা করেছিল। আর তৃতীয় স্ত্রী বলে যে দাবি করছে, সে আমায় ফাঁসিয়েছে। আমার মতো আরও অনেককে ও ফাঁসিয়েছে। আমার টাকা-গাড়ি, সব হাতিয়ে নিয়েছে।’’ প্রথম পক্ষের স্ত্রী অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ মণ্ডল জানান, তৃতীয় পক্ষের স্ত্রী বলে যিনি দাবি করছেন, তাঁর কাগজপত্র দেখে কিছু পরিষ্কার হচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা প্রশাসনের কাছে যাক।’’ সব মিলিয়ে গোলেমেলে এই কাণ্ড দেখতে সারা দিন শুভঙ্করের বাড়ির সামনে ভিড় লেগেছিল। সব দেখেশুনে কেউ কেউ টিপ্পনী কাটলেন, ‘‘এ তো সেই ‘স্বামী কেন আসামি’ যাত্রা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy