Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

দাঁইহাটে ভোটের লড়াইয়ে যুযুধান দুই জা

বাইরে যুদ্ধ , ঘরে বন্ধুত্ব। পুরভোটের দামামা বাজার পরে দাঁইহাটের বকুলতলার বিশ্বাস পরিবারের দুই বধূর মধ্যে এখন সম্পর্কটা এমনই। এক জন সিপিএমের প্রার্থী। অন্য জন লড়ছেন কংগ্রেসের হয়ে। দাঁইহাট পুরসভার ৭ নম্বর ওয়া়র্ডে দুই জায়ের লড়াই নিয়ে এখন বেশ আলোচনা।

এক দেওয়ালে দু’জনের প্রচার।

এক দেওয়ালে দু’জনের প্রচার।

সৌমেন দত্ত
দাঁইহাট শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫১
Share: Save:

বাইরে যুদ্ধ , ঘরে বন্ধুত্ব।

পুরভোটের দামামা বাজার পরে দাঁইহাটের বকুলতলার বিশ্বাস পরিবারের দুই বধূর মধ্যে এখন সম্পর্কটা এমনই। এক জন সিপিএমের প্রার্থী। অন্য জন লড়ছেন কংগ্রেসের হয়ে। দাঁইহাট পুরসভার ৭ নম্বর ওয়া়র্ডে দুই জায়ের লড়াই নিয়ে এখন বেশ আলোচনা।

বকুলতলার জগদীশ বিশ্বাসের চার ছেলে। পরিবারটি এলাকায় সিপিএমের সমর্থক বলেই পরিচিত। বড় ছেলে, পেশায় চাল ব্যবসায়ী জয়ন্ত বিশ্বাসের স্ত্রী সুজাতা এ বার সিপিএমের প্রার্থী। মেজ বধূ অঞ্জনা আবার ভোট চাইছেন হাত চিহ্নে। তাঁর স্বামী প্রশান্তর মুদি দোকান রয়েছে। বাড়ির বাকি দুই ছেলে অবিবাহিত। তাঁদের এক জনকে আবার বিজেপির প্রচারে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে।

সুজাতা ও অঞ্জনা একই বাড়িতে থাকেন। তবে হাঁড়ি আলাদা। দল আলাদা হলেও দুই প্রার্থী এক সঙ্গে গিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। সুজাতার ১২ বছরের মেয়ে ও দেড় বছরের ছেলে রয়েছে। দোতলা বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে সুজাতাদেবী বলেন, “আমার বাপের বাড়ি সিপিএম সমর্থক। পুরভোটে দাঁড়ানোর কথা ওঠার পরে বাড়ির সকলের সঙ্গে কথা বলেই মনোনয়ন জমা দিয়েছি।”

অঞ্জনা ও সুজাতা।

অঞ্জনাদেবীর বাপের বাড়ি কাটোয়া কলেজ পাড়ায়। তাঁর দুই ছেলে। স্বামীর মুদি দোকানে পাশে বসেছিলেন অঞ্জনাদেবী। স্বামী প্রশান্তবাবু জানান, পরিবার সিপিএমের সমর্থক হলেও তিনি কংগ্রেসের সদস্য। কংগ্রেস থেকে স্ত্রীকে ভোটে দাঁড়ানোর প্রস্তাব এলে বাড়ির লোকজনের আপত্তিতে প্রথমে পিছিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। পরে বৌদি সিপিএমের হয়ে প্রার্থী হচ্ছেন জানার পরে তাঁরা মত পাল্টান। সিপিএম প্রচার শুরু করে দেয় আগেই। সম্প্রতি ময়দানে নেমে পড়েছেন অঞ্জনাদেবীও। এলাকার দেওয়ালে দেওয়ালে দুই জায়ের নাম নামে চলছে প্রচার।

দাঁইহাটের ৭ নম্বর ওয়ার্ডটি তফসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। গত বার এখান থেকে জিতেছিলেন কংগ্রেসের দীপক হাওলাদার। পৃথক রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোটে দাঁড়ালেও দুই জায়ের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কে চিড় ধরেনি বলেই দাবি করলেন তাঁরা। বাড়ির ভিতরের উঠানে দাঁড়িয়ে তাঁরা এক সঙ্গে বলেন, “বাড়ির ভিতরে আমরা নিয়মিত গল্প করি। রাজনৈতিক লড়াই বাড়ির বাইরে। আমরা দু’জনেই মানুষের কাজ করার ইচ্ছে নিয়ে রাজনীতিতে এগিয়ে এসেছি।” তাঁদের শাশুড়ি পার্বতীদেবীও বলেন, ‘‘আমার দুই বউ অবসর সময়ে নিজেদের মধ্যেই গল্পগুজব করে। যে কোনও কাজে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়। দু’জনের মধ্যে যদি কেউ জেতে তাঁকে অবশ্যই মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।”

একই পরিবারের দুই বধূর দুই বিরোধী দলের প্রার্থী হওয়া নিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী স্বপ্না হালদার বর্মণের টিপ্পনী, ‘‘একই বাড়িতে দুই প্রার্থীই বুঝিয়ে দিচ্ছেন, কংগ্রেস-সিপিএম ভাই ভাই!”

তাতে অবশ্য কান দিচ্ছেন না বিশ্বাস বাড়ির দুই প্রার্থী। দু’জনেরই দাবি, জয় আসছেই।

ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy