Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

দুর্ঘটনায় দুই কিশোরের মৃত্যু

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বুধবার রাত ১০টা নাগাদ সাইকেলে করে বিসি রোড ধরে কার্জন গেট পার করে জিটি রোডে উঠে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিল সাধনপুর বিবেকানন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রহিম।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০০:২৩
Share: Save:

পরপর দু’দিনে দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় দুই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বর্ধমানে। বুধবার বর্ধমান শহরের কার্জন গেট চত্বরে আলুবোঝাই ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় বাজেপ্রতাপুরের সুভাষপল্লি-মাঠপাড়ার বাসিন্দা শেখ রহিমের (১৪)। এ দিকে, বৃহস্পতিবার ঘুড়ি ধরতে গিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় নয়ন বিশ্বাস (১৫) নামে বর্ধমানের বেচারহাট ক্যানালপাড়ের এক কিশোরের।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বুধবার রাত ১০টা নাগাদ সাইকেলে করে বিসি রোড ধরে কার্জন গেট পার করে জিটি রোডে উঠে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিল সাধনপুর বিবেকানন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রহিম। সেই সময়ে একটি টোটোর ধাক্কায় সে রাস্তায় পড়ে গেলে পিছন থেকে ট্রাক্টরটি এসে তার মাথা পিষে দেয়। পালাতে গেলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। ট্রাক্টরটি মুখ্য ডাকঘরের (বর্ধমান সদর) পাঁচিলে ধাক্কা মারে। বর্ধমান থানা জানায়, ‘সিসিটিভি’ ক্যামেরার ফুটেজে টোটোর ধাক্কা ধরা পড়েনি। তবে, প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে জেলা পুলিশ।

বর্ধমান-কাটোয়া রেললাইনের ধারে রেলের জায়গায় দু’কামরার এক বাড়িতে রহিম-সহ দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন বাবা, মা। ঘটনার পরে মৃতের মা কবিতা বেগম বলেন, ‘‘বাড়ির হাল দেখে কাজও করত ছেলে।’’ কিশোরের বাবা ভুলন শেখের বক্তব্য, “আমি হাঁটতে-চলতে পারি না। ছেলেটাই ছিল ভরসা।’’ মৃত কিশোরের শিক্ষক সুখেন লেটের দাবি, “পড়াশোনায় মন ছিল। কিন্তু বাড়ির অবস্থার জন্য একটু একটু করে পড়াশোনার জগৎ থেকে হারিয়ে যাচ্ছিল যেন। ওর এই পরিণতি অত্যন্ত দুঃখজনক।’’

ঘটনার পরে যুব কংগ্রেস কার্জন গেটের সামনে জিটি রোডে বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানায়, আলুবোঝাই ট্রাক্টরটিকে আটক করা হয়েছে। চালকের খোঁজ মেলেনি।

এ দিকে, কার্জন-গেট লাগোয়া ব্যবসায়ীদের একাংশের ক্ষোভ, রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে ‘সিগন্যাল’ বন্ধ হয়। রাস্তার দু’ধারে ছোট-বড় গাড়ি থেকে আনাজ নামানো শুরু হয়। ট্রাক-সহ ভারী যান চলাচলের জন্য ‘নো এন্ট্রি’ উঠে যায়। অনেক সময়ে জিটি রোডের দু’দিকে কোনও গাড়ি আসছে কি না, তা বুঝতে পারেন না পথচারী থেকে মোটরবাইক চালকেরা। বুধবার রাতের ঘটনার পরে ‘সিগন্যাল’ ব্যবস্থা বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুরে পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ডিএসপি (‌হেড কোয়ার্টার) শৌভিক পাত্র, বর্ধমান থানার আইসি পিণ্টু সাহাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ঠিক হয়, সিগন্যাল ব্যবস্থা রাত ১০টা পর্যন্ত থাকবে। কার্জন গেট-বিসি রোড লাগোয়া এলাকায় পুলিশ পিকেট বসবে। পুলিশের টহলদারিও বাড়ানো হবে।

পাশাপাশি, পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘুড়ি ধরতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে যায় ক্যানালপাড়ার বাসিন্দা নয়ন। সেই সময়ে দুর্ঘটনায় সে জখম হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একটি ট্রাক ও একটি যাত্রিবাহী গাড়িকে আটক করেছে পুলিশ। জখম কিশোরকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করনো হলে সেখানেই কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জেরে রাস্তায় যানজট হয়। বর্ধমান থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ট্রাক এবং গাড়িটির মধ্যে ধাক্কায় গাড়ির দু’জনও আরোহীও চোট পেয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গাড়িটির ধাক্কাতেই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরেই চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়িটি ‘ডিভাইডারে’ গিয়ে ধাক্কা মেরে উপরে উঠে যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Accident Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy