কৃতী: বঁ দিক থেকে, শুভম ঘোষ। মায়ের সঙ্গে পূর্ণেন্দু সেন এবং ডান দিকে, অবিনাশ প্রসাদ। নিজস্ব চিত্র
জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় রাজ্যে দ্বিতীয় ও পঞ্চম হয়েছেন দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুলের দুই ছাত্র যথাক্রমে শুভম ঘোষ ও পুরুলিয়ার পূর্ণেন্দু সেন। পাশাপাশি, এই স্কুলেরই ছাত্র অবিনাশ প্রসাদ রাজ্যে বিশেষ ভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন। তবে তিন জনেই জানান, তাঁরা জেইই অ্যাডভান্সড পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁদের লক্ষ্য, দেশের কোনও আইআইটি-তে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করা।
দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের বি-জোনের এডিসন রোডে ডিএসপি-র কোয়ার্টারে থাকেন শুভম। মা কল্যাণীদেবী দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালের নার্স, বাবা বিশ্বনাথবাবু উত্তরাখণ্ডে সেনাবাহিনীর একটি স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। দশম শ্রেণিতে ৯৮.০৬ শতাংশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে বোর্ডের পরীক্ষায় ৯৯.০৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া শুভম এ দিন জয়েন্টের ফল জেনে বলেন, ‘‘আমার পছন্দের খেলা ক্রিকেট। পছন্দের ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। পড়াশোনার নির্দিষ্ট কোনও সময় ছিল না। যখন ইচ্ছা হত, পড়তাম।’’
ছেলের পড়াশোনায় নজর দেবেন বলে ২০০৮-এ চাকরি ছাড়েন বিশ্বনাথবাবু। এ দিন ছেলের ফল জানার পরে, তিনি ও তাঁর স্ত্রী কল্যাণীদেবী দু’জনেই বলেন, ‘‘পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে ছেলে ভাল মানুষ হয়ে উঠুক, এটাই চাই আমরা।’’ পড়শি মানস খান-সহ অন্যেরাও পাড়ার ছেলের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত।
শুভমেরই ক্লাসের ছাত্র পূর্ণেন্দুর বাবা গোপালচন্দ্র সেন বাঁকুড়ার মেজিয়া থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের কর্মী। মেজিয়ার ডিএভি এমটিপিএস স্কুল থেকে ৯৮.৪০ শতাংশ নম্বর নিয়ে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুলে ভর্তি হন তিনি। দ্বাদশে পেয়েছেন ৯৬.৬০ শতাংশ নম্বর। তিনি জানান, দিনে গড়ে ১০-১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন। ছেলের পড়াশোনার জন্য মা দীপ্তিদেবী সিটি সেন্টারে অম্বুজা টাউনশিপে দু’বছর ধরে ভাড়াবাড়িতে রয়েছেন। তিনি জানান, যখন ইচ্ছা করে, তখনই পড়তে বসে ছেলে। পড়াশোনার পাশাপাশি, ছবি আঁকা, ব্যাডমিন্টন, ক্রিকেট, ফুটবল খেলতে ভালবাসেন পূর্ণেন্দু।
পাশাপাশি, বিশেষ ভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম অবিনাশ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে রাজ্যে সামগ্রিক ভাবে ২৬৫তম স্থান অধিকার করেছেন। এ ছাড়া ফার্মেসিতে তিনি ২৯০তম স্থান পেয়েছেন। ফরিদপুরে (লাউদোহা) ঝাঁঝরায় ইসিএলের আবাসনে থাকেন অবিনাশ। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর, ৯৫ শতাংশ। কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চান অবিনাশ। অবিনাশের বাবা, পেশায় ইসিএল কর্মী সহদেব প্রসাদ এবং মা জ্যোৎস্নাদেবীরা বলেন, ‘‘ছেলের সাফল্যে আমরা গর্বিত।’’ সহদেববাবু জানান, ছেলের ডানহাতের আঙুল খুব ছোট। তাই অবিনাশ বাঁ হাতে লেখেন।
ভবিষ্যতে পরীক্ষার্থীদের জন্য এই কৃতীদের পরামর্শ, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যতগুলি প্রবেশিকা পরীক্ষা হয় সবগুলির সিলেবাস প্রায় একই। প্রচুর পরিমাণে প্রশ্ন অনুশীলন করতে হবে। পাশাপাশি, কৃতীরা দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের প্রতিযোগিতামূলক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিতেন। তিন ছাত্রকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন ডিএভি স্কুলের অধ্যক্ষা পাপিয়া মুখোপাধ্যায়। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) দফতরের তরফে দুই প্রতিনিধি শুভম ও পূর্ণেন্দুকে এ দিন সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছাবার্তা তুলে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy