প্রতীকী ছবি।
১৬টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে নতুন মুখ পূর্ব বর্ধমানে।
গত বিধানসভা ভোটে ১৬টির মধ্যে ১৪টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। দু’টি ছিল বামেদের হাতে। এ বার সদ্য দুই বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখ থাকবে মনে করেছিলেন অনেকেই। শুক্রবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তালিকা প্রকাশ করতেই দেখা যায় বর্ধমান দক্ষিণ, রায়না, মেমারি, ভাতার, কালনা ও মঙ্গলকোটে নতুন প্রার্থী। যদিও কেউই রাজনীতিতে আনকোরা নন। দলের নানা দায়িত্বে দীর্ঘদিন রয়েছেন তাঁরা। আগেও বিধানসভা ভোটেও দাঁড়িয়েছেন এক জন।
এ বার বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে ‘ভূমিপুত্র’কে প্রার্থী করার দাবি ওঠে। বিধায়কদের সঙ্গে ব্লক স্তরের একাধিক নেতার ‘দ্বন্দ্ব’ও প্রকাশ্যে আসে। তৃণমূলের দাবি, এই দুই বিষয়ে সমন্বয় করেই নতুনদের সুযোগ দিয়েছে দল। রায়না, ভাতার, মঙ্গলকোট ও মেমারিতে বিদায়ী বিধায়কদের সরিয়ে প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে শম্পা ধাড়া, মানগোবিন্দ অধিকারী ও মধুসূদন ভট্টাচার্য। কালনায় বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বিজেপিতে যাওয়ায় নতুন প্রার্থী আনতেই হত। সুযোগ পেয়েছেন শহরের পুর-প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ। বর্ধমান দক্ষিণেও বিদায়ী বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় অসুস্থতার কথা জানিয়ে প্রার্থী হতে চান না জানিয়েছিলেন আগেই। সেখানে দলের পছন্দ খোকন দাস।
বর্ধমান শহরের রথতলার বাসিন্দা খোকনবাবু পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান-ইন কাউন্সিল। তৃণমূল সূত্রের খবর, ভোটকুশলী সংস্থা যে রিপোর্ট দিয়েছিল তাতে স্পষ্ট জানানো হয়, খোকনবাবুকে বাদ দিয়ে বর্ধমান শহরে তৃণমূলের ‘লড়াই’ করার জায়গা নেই। রবিরঞ্জনবাবু ও বর্ধমানের বিদায়ী পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের মধ্যে মনোমালিন্য থাকলেও, শহরে দলের প্রার্থী হিসেবে দু’জনেই খোকন দাসের নাম প্রস্তাব করেন। এ দিন রবিরঞ্জনবাবু বলেন, “খোকন আমার স্নেহধন্য। শরীর ঠিক থাকলে প্রচারে যাব।’’ স্বরূপবাবুর সংযোজন, “এ বারের কঠিন লড়াই উৎরাতে পারবে একমাত্র খোকনই।’’ যদিও দলের শহর সভাপতি অরূপ দাস এবং যুব তৃণমূল সভাপতি রাসবিহারী হালদারের সঙ্গে খোকনবাবুর ‘দ্বন্দ্ব’ অজানা নয় কারও। এ দিন রাসবিহারীবাবু যদিও বলেন, ‘‘জেলার সমস্ত দলীয় প্রার্থীর হয়েই আমরা প্রচার করব।’’ আর খোকনবাবু বলেন, “দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, পালন করার চেষ্টা করব।’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জেলার একমাত্র মহিলা প্রার্থী। মাটি মেলার উদ্বোধনে এসে তাঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকলের সামনে দরাজ প্রশংসাও করেন। কিন্তু দক্ষিণ দামোদর এলাকার বাসিন্দা শম্পাদেবী রায়নায় প্রার্থী কেন? দলীয় সূত্রে দাবি, ভোটকুশলী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দলের একটা বড় অংশ নেপাল ঘড়ুইকে এ বার প্রার্থিপদে চাননি। কয়েকমাস আগে তাঁর উপরে ‘চাপ’ বাড়াতে বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত নেতা বামদাস মণ্ডলকে রায়না ১ ব্লক সভাপতি করা হয়। সেই সূত্র ধরেই শম্পাদেবী প্রার্থী।
মেমারিতে প্রার্থী হয়েছেন ৭১ বছরের মধুসূদন ভট্টাচার্য। তৃণমূল সূত্রের খবর, দু’দিন আগেই তিনি অনুগামীদের নিয়ে ছ’টি গাড়িতে কলকাতায় তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে, দক্ষিণ কলকাতার এক নেতার অফিসে ও কালীঘাটে যান তিনি। প্রতিটি জায়গাতেই ছয় অঞ্চল সভাপতি, পাঁচ প্রধান ও সাত জন মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ-সহ ২৮ জনের সই সংবলিত চিঠি দিয়ে মেমারি ১ ব্লকের সভাপতি মধুসূদনবাবুকে প্রার্থী করার দাবি ওঠে। একটি সূত্রে খবর, সে দাবিকে গুরুত্ব দিয়েছে দল।
ভাতারে দাবি ছিল ভূমিপুত্র প্রার্থীর। পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ, এরুয়ার গ্রামের মানগোবিন্দ অধিকারী স্থানীয় মানুষ। বিদায়ী বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলের বিরুদ্ধে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা একের পর এক অভিযোগ করেছেন। ‘বহিরাগত’ পরিচয় পেয়ে এলাকায় যাওয়া কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এ দিন প্রার্থীর সঙ্গে পা মেলান প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরা। মানগোবিন্দবাবু বলেন, “দলের মর্যাদা রাখাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’ আর বনমালীবাবুর কথায়, “রাজনীতি করতে গিয়ে গুলি খেয়েছেন, মার খেয়েছেন মানগোবিন্দ। দল ওঁকে ঠিক মর্যাদা দিল।’’
কালনায় বিদায়ী বিধায়ক তৃণমূলে থাকাকালীন পুর প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগের সঙ্গে তাঁর ‘বিরোধ’ চিন্তায় ফেলত দলের নেতাদের। বিশ্বজিৎবাবু দল ছাড়ার পরে, তাঁর টক্করেও দল বেছে নিয়েছে দেবপ্রসাদকেই। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রার্থী হওয়ার তালিকায় এক মহিলা নেত্রীও ছিলেন। কিন্তু শহরে প্রভাব থাকায় এগিয়ে যান দেবপ্রসাদবাবু। ভোটকুশলী সংস্থার সমীক্ষাতেও তিনিই এগিয়ে ছিলেন, জানা যায়। এ দিন টিভিতে নাম দেখেই ওই নেতা বলেন, ‘‘দল আমার উপরে আস্থা রেখেছে। দলকে প্রতিদান দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy