আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করার প্রতিবাদে মৌনী মিছিল তৃণমূলের। পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
ভারতীয় নাগরিক হওয়ার শর্তপূরণ করতে না পারায় নতুন করে আধার নম্বর নিষ্ক্রিয় করার চিঠি পেয়েছেন আউশগ্রাম, পূর্বস্থলী, মেমারি, ভাতারের বাসিন্দাদের একাংশ। প্রশাসনের কাছে ঠিকঠাক দিশা না থাকায় বিভ্রান্তি বাড়ছে। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি সরকারকে তোপ দেগে জেলার নানা জায়গায় পথে নেমেছে তৃণমূলও।
পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত শ্রীরামপুর এবং জাহান্নগর পঞ্চায়েত এলাকায় ছ’জনের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করার চিঠি পৌঁছেছে। পূর্বস্থলী ২-এর মেড়তলারও দু’জন চিঠি পেয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির তরফে প্রচার করে জানানো হয়েছে, এমন চিঠি পেল দ্রুত পঞ্চায়েতে খবর দিতে হবে। তবে কালনা মহকুমায় ঠিক কত আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করার চিঠি এসেছে, তা স্পষ্ট করেনি প্রশাসন।মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে ব্লকগুলি থেকে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর পর্যন্ত ১০০ বেশি আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি পৌঁছেছে। চিঠির সংখ্যার সঙ্গে বাড়ছে আতঙ্কও।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের শ্রীরামপুর এলাকার শ্রাবণী দেবনাথ বলেন, ‘‘রেশন কার্ড, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট সব কিছুতেই জড়িয়ে রয়েছে আধার কার্ড। কেন এমন চিঠি আসছে জানি না। চিন্তায় রয়েছি।’’ পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিকের দাবি, মেদিনীপুর থেকে বিয়ে হয়ে শ্রীরামপুর এলাকায় আসা মহিলা যেমন আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি পেয়েছেন। তেমনই স্থায়ী বাসিন্দাদের কয়েক জনের নামেও চিঠি পৌঁছেছে। ওই ব্লকের চিঠি প্রাপকদের কয়েক জনের সঙ্গে এ দিন দেখা করেন এলাকার বিধায়ক স্বপন দেবনাথ। বিকেলে কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয় থেকে লিচুতলা পর্যন্ত তাঁর নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ মিছিল বার হয়। তাতে ছিলেন শ্রাবনী পাল, আরতি হালদারেরা। মৌনী মিছিল হয় শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত ভবনের সামনে থেকে ব্লক কার্যালয় পর্যন্ত। মন্ত্রী বলেন, ‘‘একের পর এক আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি পৌঁছে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এটা একটা চক্রান্ত বলেই মনে হচ্ছে। কেউ যাতে সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়ার জন্য দলীয় যে সহায়তা কেন্দ্র পঞ্চায়েতে হয়েছে সেখান থেকে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’’ বিজেপির পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক তরুন মল্লিকের দাবি, ‘‘হয়তো কোনও ত্রুটির কারনে কিছু আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। তৃণমূল তা নিয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে।’’ বিষয়টি জানার চেষ্টা হচ্ছে, দাবি দলের কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের।
আউশগ্রামের ছোড়া কলোনিতে যাঁরা এই চিঠি পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। তাঁরা মহারাষ্ট্রে কাজ করেন। তাঁদের এক জনের দাবি, “আধার বাতিল হয়ে গেলে কী করব জানি না। বাইরের রাজ্যে কাজ পাব কি না, জানি না।’’ এক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের চার জনের নামে চিঠি এসেছে। তাঁদের মধ্যে নবম শ্রেণির এক পড়ুয়া রয়েছে। রামনগর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ জিয়াউল হক বলেন, “বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” বিডিও (আউশগ্রাম ২) চিন্ময় দাস বলেন, “চিন্তার কোনও কারণ নেই। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” ভাতরের মাহাতা পঞ্চায়েতের এক বৃদ্ধও চিঠি পেয়েছেন। তাঁর দাবি, বেসরকারি কাজের সূত্রে বিভিন্ন রাজ্যে থাকতে হয়েছে তাঁকে। তবে গত ২৩ বছর ধরে এই এলাকাতেই বসবাস করছেন তিনি। বিডিও দেবজিৎ দত্ত জানান, বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy