বর্ধমান পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা বাজি পুড়িয়ে উল্লাসে মাতলেন।
জেলার ছ’টি পুরসভার মধ্যে তিনটিতেই বিগত বোর্ডের তৃণমূলের বিধায়কেরা কাউন্সিলর ছিলেন। ‘এক পদ, এক নীতি’ মেনে এ বার দল তাঁদের টিকিট দিল না। তবে তাঁদের আত্মীয়দের প্রার্থী করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে সামাজিক মাধ্যমে দলের ‘পেজে’ বর্ধমান, কাটোয়া, কালনা, মেমারি, গুসকরা ও দাঁইহাট-সহ রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে তৃণমূল। সেখানে প্রতিটি পুরসভাতেই প্রবীণ-নবীনের ভারসাম্য রেখে প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে দলের বিভিন্ন গোষ্ঠী ওই তালিকা দেখে ‘খুশি’ নয়। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কিছু তৃণমূল কর্মী পথে বিক্ষোভ দেখান বলে অভিযোগ। প্রার্থী পাল্টানোর দাবি তোলেন তাঁরা।
জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দল প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সবাইকে কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়াই করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডেই তৃণমূলের প্রার্থীরা জয়ী হবেন।’’
বর্ধমান পুরশহরে তৃণমূলের অন্দরে ‘দ্বন্দ্ব’ গোপন নয়। কোন পক্ষের দিকে টিকিট পাওয়ার পাল্লা বেশি ভারী হয়, তা নিয়ে দু’পক্ষই উদ্বেগে ছিল। দেখা যাচ্ছে, ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে পুরনো প্রার্থীরা রয়েছেন। আবার বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের আত্মীয়া থেকে ঘনিষ্ঠজনেরাও টিকিট পেয়েছেন। তাঁর ‘বিরোধী গোষ্ঠী’ বলে দলের অন্দরে পরিচিত বর্ধমান পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস-চেয়ারম্যান আইনুল হককে দল এ বার প্রার্থী করেনি। তবে জেলা যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি রাসবিহারী হালদারকে দল প্রার্থী করেছে। গত পুর-বোর্ডের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন রাসবিহারীর মা আলপনা হালদার। আবার রাজনীতির বাইরে থাকা অনেক বিশিষ্টকেও তৃণমূল টিকিট দিয়েছে। এ দিন আইনুল বলেন, “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’ বিধায়ক অবশ্য কিছু বলতে চাননি।
কাটোয়া পুরসভাতেও অনেক পুরনো প্রার্থীকে দল টিকিট দিয়েছে। আবার পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সমীর সাহা, জেলা মহিলা সভানেত্রী চন্দনা মাঝিও টিকিট পেয়েছেন।
কালনা পুরসভাতেও প্রশাসক আনন্দ দত্ত-সহ বেশ কয়েকজন পুরনো প্রার্থী টিকিট পেয়েছেন। এ বারের নতুনদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে টিকিট পেয়েছেন বিজেপি থেকে আসা নিউটন মজুমদার ও শহর সভাপতি তপন পোড়েল।
মেমারি শহরেও টিকিট পাওয়া নিয়ে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে টানাপড়েন ছিল। শেষ পর্যন্ত ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হচ্ছেন পুর-প্রশাসক স্বপন বিষয়ী। তাঁর মতো অনেক পুরনোরাও টিকিট পেয়েছেন।
দাঁইহাটের ১৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে বেশ কয়েক জন পুরনো প্রার্থী রয়েছেন। আর গুসকরা শহরে (রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পাওয়া তালিকা অনুযায়ী) তৃণমূলের ‘বিতর্কিত’ নেত্রী মল্লিকা চোঙদার ছাড়া, পুরনোদের মধ্যে কাউকে দল প্রার্থী করেনি। তবে পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা শহর সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায়কে দল টিকিট দিয়েছে। পুরনোদের মধ্যে এখানে দল শুধু মল্লিকার উপরে কেন ভরসা রাখল, প্রশ্ন উঠেছ বিভিন্ন মহলে। দলীয় সূত্রের খবর, মল্লিকার সঙ্গে দলের বিভিন্ন নেতা-কর্মীর নানা সময়ে বাদানুবাদ হয়েছে। মল্লিকা ‘চুপ’ করে থেকেছেন। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের উপরে আস্থা রাখায় ফল পেলেন। মল্লিকা বলেন, ‘‘পথে চলতে গেলে অনেক রকমই হয়। সে সব ভুলে আমরা এক সঙ্গে লড়াই করব।’’
বামফ্রন্ট বৃহস্পতিবার তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। জেলা বিজেপি সূত্রে জানা যায়, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে রাজ্যের কাছে অনুমোদনের জন্যে পাঠানো হয়েছে। আজ, শনিবার রাজ্য থেকে বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy