বিক্ষোভকারীদের মিছিল পানাগড়ে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
কারখানার শ্রমিকদের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি এবং আরও দুই তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ হল পানাগড়ে। শনিবার পানাগড় রেলপাড় এলাকার একটি বেসরকারি কারখানার শ্রমিকদের একাংশ মিছিল করে গিয়ে বিক্ষোভে শামিল হন। তাঁদের দাবি, ‘কাটমানি’ ফেরত দিতে হবে। যদিও সহ-সভাধিপতি সমীর বিশ্বাস ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পানাগড়ের ওই কারখানায় রেলের স্লিপার তৈরি হয়। সেখানকার শ্রমিকদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে কারখানায় শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন সমীরবাবু এবং এলাকার দুই তৃণমূল নেতা জয়ব্রত দে ও যুগল আঁকুড়ে। অভিযোগ, তাঁরা ইচ্ছামতো সংগঠন চালাতেন। শ্রমিকদের কোনও স্বার্থ দেখা হত না। এ দিন বিক্ষোভে যোগ দেওয়া শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, টাকা নিয়ে কারখানায় স্থায়ী পদে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতেন সমীরবাবুরা। যাঁরা বেশি টাকা দিতেন তাঁদের স্থায়ী করার ব্যবস্থা হত। অথচ, পুরনো কর্মীদের স্থায়ী করা হত না। এ ছাড়াও কর্মরত শ্রমিকদের কাছ থেকে নানা ভাবে টাকা আদায় করা হত বলেও অভিযোগ।
বিক্ষোভরত শ্রমিক কৌশল কুমারের দাবি, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের চুক্তিপত্র করা হয়েছে সংগঠনের তরফে। অথচ, সেই চুক্তিপত্র শ্রমিকদের জানানো হয়নি। তা ছাড়া বেতনের ক্ষেত্রেও তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে। যা বেতন পাওয়ার কথা তা শ্রমিকদের দেওয়া হয় না। সেখান থেকে অনেকটা টাকা কেটে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পিছনে ওই তিন নেতাই আছেন বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, এ সব অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা, মারধরের হুঁশিয়ারি দেওয়া হত।
এ দিন ওই শ্রমিকেরা রেলপাড়ের ট্যাঙ্কিতলা এলাকায় প্রথমে যুগলবাবুর বাড়ির সামনে জড়ো হন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সেখান থেকে বিক্ষোভকারীরা যান জয়ব্রতবাবুর বাড়িতে। তাঁর স্ত্রী স্বপ্না বৈদ্য কাঁকসা পঞ্চায়েতের সদস্য। স্থানীয় সূত্রের দাবি, আগেও কয়েক বার ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে তাঁদের বাড়িতে। এমনকি, পুলিশি পাহরাও দিতে হয়েছে। এ দিন জয়ব্রতবাবু বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী স্বপ্নাদেবী বলেন, ‘‘প্রায় দিনই এক দল করে লোক আসছে, বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়ে চলে যাচ্ছে। কোনও অভিযোগ থাকলে প্রশাসনকে জানাক।’’
শেষে সমীরবাবুর ট্যাঙ্কিতলার বাড়ি ও দোকানের সামনে বিক্ষোভ দেখান ওই শ্রমিকেরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কাঁকসা থানার পুলিশ। তার পরে শ্রমিকেরা স্লোগান দিতে-দিতে ফিরে যান। সমীরবাবু দাবি করেন, ‘‘আমাকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। এর পিছনে গভীর যড়যন্ত্র রয়েছে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy