Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪

রায়নার তৃণমূল নেতা খুনে ধৃত ৩

পুলিশের তাড়া খেয়ে দলবল নিয়ে অন্য জেলায় আশ্রয় নিয়েছিল শ্রীরামপুরের দুষ্কৃতী যিশু ওরফে নটনারায়ণ ঘোষ। তখনই বরাত আসে এক তৃণমূল নেতাকে নিকেশ করতে হবে। বরাত পেয়েই বর্ধমানের মাধবডিহিতে রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুল আলিম ওরফে বাবলুকে গুলি করে খুন করে তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৫ ০১:৫৬
Share: Save:

পুলিশের তাড়া খেয়ে দলবল নিয়ে অন্য জেলায় আশ্রয় নিয়েছিল শ্রীরামপুরের দুষ্কৃতী যিশু ওরফে নটনারায়ণ ঘোষ। তখনই বরাত আসে এক তৃণমূল নেতাকে নিকেশ করতে হবে। বরাত পেয়েই বর্ধমানের মাধবডিহিতে রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুল আলিম ওরফে বাবলুকে গুলি করে খুন করে তারা। পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় এমনটাই স্বীকার করে নিয়েছে শ্রীরামপুর থেকে ধৃত যিশুর তিন সাগরেদ। আরও জানিয়েছে, টাকাপয়সার লেনদেন নয়, নিরুপদ্রবে বর্ধমানে থাকার শর্তে ওই নেতাকে তারা খুন করেছে। হুগলি জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, বাকিদের গ্রেফতার করা গেলে গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

বুধবার রাতে শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটিতে দিল্লি রোডের কাছ থেকে গাঁজা এবং আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধরা পড়ে ওই তিন জন। তাদের নাম শেখ সোরাব, অভি সরকার ওরফে নেওলা এবং দেবতোষ দে ওরফে সায়েদ। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের কাছ থেকে তিনটি রিভলভার, তিন রাউন্ড গুলি এবং ২৩ কিলোগ্রাম গাঁজা মিলেছে। এ ছা়ড়াও নম্বরপ্লেটহীন কালো রঙের মোটরবাইকও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে নেওলা এবং সায়েদের বাড়ি শ্রীরামপুর ৫ নম্বর কলোনিতে। আর অভি স্থানীয় মল্লিকপাড়ার বাসিন্দা বলেও জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়ার বিশেষ আদালতে তোলা হলে ধৃতদের এক দিনের জেল হাজতে পাঠানো হয়। শুক্রবার আদালত তাদের তিন দিন পুলিশ হাজতে পাঠিয়েছে। পুলিশের অনুমান, গাঁজা পাচারের উদ্দেশ্যেই ওই দুষ্কৃতীরা মল্লিকপাড়ার দিকে যাচ্ছিল।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত অক্টোবরে দুর্গাপুজোর অষ্টমীর রাতে শ্রীরামপুরের চাতরা এলাকায় সুরজিৎ মিত্র ওরফে চিমা নামে এক দুষ্কৃতী খুন হয়। খুনের অভিযোগে নাম জড়ায় যিশুর। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জানিয়েছে, পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে যিশু তখন দলবল নিয়ে রায়নায় আশ্রয় নেয়। যাদের ছত্রছায়ায় তারা ছিল, তারাই রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুল আলিমকে খুনের বরাত দেয়। এলাকায় নির্বিঘ্নে থাকবে, এই আশ্বাসে টাকা ছাড়াই খুন করতে রাজি হয়ে যায় তারা। এরপরেই গত ১১মে মোটরবাইকে চেপে ভাইপোর সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে খুন হয়ে যান রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুল আলিম। তাঁর মাথায় ও পেটে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। পরের দিন ছ’জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। ধৃতেরা সকলেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বলে পরিচিত। নিহতের পরিবারের তরফেও অভিযোগ করা হয়, আলিমের একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাপ্পা এই খুনে জড়িত। তাঁরা জানান, দুই বন্ধু একসময়ে একসঙ্গেই তৃণমূলের মিটিং-মিছিলে যেতেন। পরে দ্বারকেশ্বর ও দামোদরের বালি খাদান ও লাগোয়া চালকলগুলি থেকে বাপ্পা আলিমের নাম করে তোলাবাজি করতে শুরু করে। ‘বন্ধু’ তা জেনে যাওয়ায় খুনের ঘটনা ঘটেও বলেও অভিযোগ ওঠে। তৃণমূল যদিও দাবি করেছিল, সিপিএমের মদতেই খুন হয়েছে। সিপিএমের স্থানীয় বিধায়ক বিষয়টি অস্বীকারও করেছিলেন।

পুলিশের দাবি, যিশুর সাগরেদরা এবং সে নিজে ধরা পড়লে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই খুনের কারণ, না কি অন্য কিছু তাও বোঝা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

murder trinamool tmc police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE