ইনসান মল্লিক
ভোট থেকে শুরু করে যে রাজনৈতিক ‘অপারশেনে’র ছক বার হত তাঁর মাথা থেকে, ‘গুরু’র নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে দলকে সাফল্য এনে দিতেন কালনা ১ ব্লকের নিহত তৃণমূল নেতা ইনসান মল্লিক। বছর দশেকের সম্পর্কে ‘ভাঙন’ ধরে সম্প্রতি, দাবি দলের একাংশের। শেষে ‘শিষ্যে’র খুনে নাম জড়াল ‘গুরু’ রাজকুমার পাণ্ডের।
নিহত নেতার স্ত্রী শিউলি মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘ভাল সংগঠক হিসাবে ইনসান উপরে উঠছিল। রাজকুমার তা সহ্য করতে পারেনি। এর আগেও ওঁকে আর এক বার খুনের চেষ্টা করেছিল রাজকুমার।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্বামীকে অনেকেই বলত, রাজকুমার তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ও তাঁদের বলত, ‘উনি বড় দাদা। ওঁর বিরুদ্ধে কিছু বলবেন না’। এখন দেখছি ওই নাটের গুরু।’’
রবিবার নাদনঘাটের ওই অভিযুক্ত নেতার সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা হয়। ফোন বন্ধ ছিল তাঁর। তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, ঘটনার পর ইনসানের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর করেছিলেন তিনি। শনিবার সকালে সংবাদমাধ্যমকেও বলেন, ‘‘ওঁর মৃত্যুর পরে দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি। মনে পড়ে যাচ্ছিল, ওঁর সঙ্গে কাটানো পুরনো অনেক কথা। ওঁর স্ত্রী, দুই মেয়ের কথা ভেবে খারাপ লাগছে।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’জনের সখ্যতা তৈরি হয় বছর আটেক আগে। এক সঙ্গে নানা অনুষ্ঠান, দলের কর্মসূচিতে দেখা যেত তাঁদের। বাড়িতেও যাতায়াত ছিল। তবে ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে পরিস্থিতি বদলায়। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, মনোমালিন্যের কারণ নান্দাই এলাকার একটি ঘটনা। জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনায় ইনসান মল্লিকের নাম ছিল অভিযুক্তের তালিকায়। নিহত নেতার দাবি ছিল, ‘গুরু’র নির্দেশেই তাঁর নাম জোর করে ঢোকানো হয়েছে। দলের কর্মীদের দাবি, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও এক সঙ্গে কাজ করেননি তাঁরা। আগের একাধিক হামলার জেরে নিজেকে গুটিয়েও নিয়েছিলেন নিহত নেতা। বেগপুর, সুলতানপুর, কাঁকুড়িয়াতেই কর্মসূচি সীমাবদ্ধ রাখতেন তিনি।
জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগে কার নাম কে দিয়েছে, আমি জানি না। আমি ওর মধ্যে ঢুকতেও চাই না। ওটা পুলিশের কাজ। আমি ইনসান মল্লিকের খুনের ঘটনার কিনারা চাই। কেন না আজ ও খুন হয়েছে, কাল আমি হতে পারি।’’ তাঁর দাবি, খুনের কিনারা যাতে হয় তার জন্য জেলার এক পদস্থ আধিকারিককে ইতিমধ্যেই একটি চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগের তালিকায় নাম রয়েছে বেগপুর, কাঁকুরিয়া এলাকার সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া তিন নেতার।
বিজেপি অবশ্য তাঁদের দলের কারও খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি। দলের জেলা সম্পাদক ধনঞ্জয় মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীকলহের জেরেই খুন। এখন পরিকল্পিত ভাবে আমাদের নামে দোষ চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy