Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
school

রোজ নিয়ম মেনে স্কুল বসে গঙ্গাটিকুরীতে, আসেন শিক্ষকেরা, নেই শুধু কোনও পড়ুয়া

গঙ্গাটিকুরী জুনিয়র হাই স্কুলে রয়েছেন দু’জন শিক্ষক। তাঁরা নিয়ম মেনে রোজ স্কুলে যান। অফিসরুমে বসে গল্পগুজব করেন। টিফিন খান। তার পর যথা সময়ে স্কুল বন্ধ করে চলে যান।

image of school

নিয়ম মেনে স্কুলের গেট খোলা হয়। তবে শোনা যায় না ঘণ্টার শব্দ। এই স্কুল চলছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ১৯:৫৫
Share: Save:

রয়েছে, অথচ নেই। স্কুল রয়েছে। সেখানে শিক্ষকও রয়েছেন। নেই শুধু পড়ুয়া। রোজ স্কুল বসে। পড়ুয়া-শূন্য স্কুলে নিয়ম মেনে যান শিক্ষকেরা। নিয়ম মেনে স্কুলের গেট খোলা হয়। তবে শোনা যায় না ঘণ্টার শব্দ। এই স্কুল চলছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়। গঙ্গাটিকুরী জুনিয়র হাই স্কুল। কেতুগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বিডিও জানিয়েছে, স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় অভিভাবকেরা আর ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠান না। তাই এই হাল স্কুলের। জেলা স্কুল পরিদর্শক অবশ্য জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

গঙ্গাটিকুরী জুনিয়র হাই স্কুলে রয়েছেন দু’জন শিক্ষক। তাঁরা নিয়ম মেনে রোজ স্কুলে যান। অফিসরুমে বসে গল্পগুজব করেন। টিফিন খান। তার পর যথা সময়ে স্কুল বন্ধ করে চলে যান। এখন আর পড়ুয়াদের কোলাহল, পড়াশোনার শব্দ শোনা যায় না। ব্ল্যাকবোর্ডে ক্রমেই ধুলো পড়ছে।

অথচ এই স্কুলকে ঘিরে এক সময় অনেক স্বপ্ন বুনেছিলেন কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের গঙ্গাটিকুরী গ্রামের বাসিন্দারা। ২০১৩ সালে কেতুগ্রামের গঙ্গাটিকুরীর মতো জনবহুল এলাকায় শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য এই স্কুলের অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য সরকার। প্রায় তিন কাঠা জমির উপর তৈরি হয়েছিল স্কুল। স্কুলে রয়েছে তিনটি শ্রেণিকক্ষ, অফিসঘর, মিড ডে মিল রান্নার জায়গা। স্কুলে পড়ানোর দায়িত্বে রয়েছেন দু’জন অবসরপ্রাপ্ত অতিথিশিক্ষক। যখন স্কুল শুরু হয়েছিল, তখন পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল শতাধিক। এই বছর খাতায়কলমে এক জন পড়ুয়ার নাম রয়েছে। তবে স্কুলে সেই এক জন পড়ুয়াও আসে না।

গ্রামের বাসিন্দা গায়ত্রী মণ্ডল, উৎপল মণ্ডলেরা জানান, স্কুলে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় পড়ুয়াদের লেখাপড়া ঠিক মতো হয় না। সেই কারণেই এই স্কুলে কোনও পড়ুয়াকে ভর্তি করেন না অভিভাবকেরা। স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল জানান, সম্ভবত সঠিক পরিকাঠামো না থাকায় স্কুলের এই হাল। কেতুগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অমিত সাউ জানান, কোনও স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের এই স্কুলে ভর্তি করতে চাইছেন না বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এই বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক শ্রীধর প্রামাণিক বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে দেখে তবেই বলতে পারব।’’ এ ভাবে স্থায়ী শিক্ষক আর পড়ুয়া ছাড়া আর কত দিন চলবে স্কুল? সেই প্রশ্নই ঘুরছে স্থানীয়দের মধ্যে।

অন্য বিষয়গুলি:

school Teacher Student Empty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy