প্রতীকী ছবি।
বিমান থেকে নামতে হবে দ্বীপে। খুঁজে বার করতে হবে নানা ধরনের অস্ত্র, ওষুধ। সে সব ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারলে, তবেই টিকে থাকা যাবে ‘অনলাইন গেম’টিতে। জনা পঞ্চাশ যোদ্ধাকে সাবাড় করতে পারলে, আসবে জয়। মোবাইলে এমনই এক ‘গেম’ খেলা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত। তা থেকেই রাগের বশে সমবয়সী বন্ধুকে খুন, এই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে পালশিটের দুই নাবালক। তাদের জেরা করার পরে তাঁরাও বিস্মিত, দাবি পুলিশ-কর্তাদের।
ঘটনার পরিকল্পনা করেছিল এক কিশোর, অন্য জন তাকে সঙ্গ দিয়েছে— জেরা করে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মনে হচ্ছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে মূল অভিযুক্ত কিশোর ঠান্ডা মাথায় এক-এক করে প্রশ্নে উত্তর দিয়েছে। যা শুনে, আমরাও অবাক হয়ে গিয়েছি। মনে হচ্ছে, ওই ছাত্রকে খুনের পরে ধৃতদের ধারণা হয়েছে, মোবাইলের গেমে যে ভাবে খুন করা হয়, এটাও তেমনই একটা গেম!”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মূল অভিযুক্ত নাবালকের মা অনেক বছর আগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। তাঁর বাবা ফের বিয়ে করেন। সৎ মায়ের কাছেই ছেলেটি বড় হয়। পড়শিদের একাংশের দাবি, অষ্টম শ্রেণির পরেই স্কুল-ছুট হয় সে। তার পর থেকেই খারাপ সঙ্গে মিশতে থাকে। চুরি করারও নালিশ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গেও তার অশান্তি হয়। মাস দু’য়েক সে পালশিট স্টেশনের কাছে মামার বাড়িতে থাকছিল।
মনোবিদ ইন্দ্রাণী দত্তের মতে, পারিবারিক অস্থিরতার মধ্যে কেউ বড় হলে তার মধ্যে হিংস্রতা আসার সম্ভাবনা থাকে। তিনি বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে মনে হচ্ছে, বারবার কোনও কিছুতে হার মেনে নিতে পারেনি অভিযুক্ত ছেলেটি। সে জন্য যে জিতেছে, তাকে শেষ করে দেওয়ার মানসিকতা জেগে উঠেছিল। আসলে গেমের মধ্যে হারটাও যে একটা অঙ্গ, পরিবেশ-পরিস্থিতি বোধ হয় তাকে সেটা শেখায়নি।’’ তিনি আরও মনে করেন, ‘‘লকডাউনের মধ্যে বাড়িতে আটকে থেকে মানসিক চাপ কাটাতে মোবাইলের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে অনেকেই। তার থেকেও নানা প্রবৃত্তি তৈরি হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy