Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনার মধ্যে ডেঙ্গি নিয়েও বাড়ছে আশঙ্কা

স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, গত কয়েক বছরে পূর্ব বর্ধমানে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর হার কম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২০ ০৪:১৫
Share: Save:

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা-কর্মী থেকে হাসপাতালে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী, করোনা মোকাবিলার দিকেই এখন মূল নজর সকলের। কিন্তু তার মধ্যেই তৈরি হচ্ছে ডেঙ্গি নিয়ে আশঙ্কা। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেড়েছে সেই আতঙ্ক। এই পরিস্থিতিতে শনিবার বর্ধমান, কাটোয়া পুরসভা-সহ পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গি নিয়ে রাস্তায় সচেতনতামূলক প্রচার হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, গত কয়েক বছরে পূর্ব বর্ধমানে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর হার কম। তবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় প্রতি বছরই বাড়ছে। গত বছর জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় আটশো। এ বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ২৮ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। তার মধ্যে এপ্রিলেই আক্রান্তের সংখ্যা আট জন। এর মধ্যে বর্ধমান ও কাটোয়া পুরসভা এলাকায় এক জন করে, কেতুগ্রাম ১ ও পূর্বস্থলী ২ ব্লকে দু’জন করে, গলসি ১ এবং খণ্ডঘোষে এক জন করে রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘করোনার মতো ডেঙ্গি রুখতেও বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গি আটকানোর বিষয়টি সমান ভাবেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা পতঙ্গবিদ গৌতম চন্দ্রের কথায়, ‘‘কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে, চারপাশে জল জমে রয়েছে। এই সময়ে লার্ভা ফুটবে। ডেঙ্গির উৎপাতও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘লকডাউনে যাঁরা বাড়িতে আছেন, তাঁরা জমে থাকা জল নিয়ম করে পরিষ্কার করুন।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন জেলার বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারে ডেঙ্গি-রুখতে কী-কী করণীয়, তা নিয়ে প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছে। জেলা পরিষদ সূত্রের দাবি, পঞ্চায়েতগুলি ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা গড়ার কাজ শুরু করেছে আগেই। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে প্রতিটি পঞ্চায়েতকে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা, পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি সচেতনতা-সহ বেশ কয়েকটি কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে সব কাজই করতে হবে করোনা-সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

জেলা পরিষদের রিপোর্ট অনুযায়ী (৯ মে পর্যন্ত) জেলায় ৪১ শতাংশ বাড়িতে সমীক্ষা করা হয়েছে। তাতে এক শতাংশের কম বাসিন্দার মধ্যে ডেঙ্গি-উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে। মশার লার্ভা মিলেছে আড়াই শতাংশ বাড়িতে। গ্রামীণ এলাকায় আবর্জনা জমে রয়েছে ৭,৫১৬টি জায়গায়, নর্দমা অপরিষ্কার ৪,৪৪২টি জায়গায়। জল জমে রয়েছে ৫,৩৯১টি জায়গায়। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম বলেন, ‘‘জেলার ২১৫টি পঞ্চায়েতের জন্যে ৩,১৭০টি ‘ভেক্টর কন্ট্রোল টিম’ তৈরি করা হচ্ছে। তাদের দেখভালের জন্য প্রত্যেক পঞ্চায়েতে এক জন করে সুপারভাইজ়ার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরাই গ্রামীণ এলাকায় ঘুরে তথ্য তুলে আনছেন। সেই মতো দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

ডেঙ্গি-প্রতিরোধে যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের করোনা-স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য কি প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়েছে? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়ের বক্তব্য, ‘‘তিন স্তরের ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’ থাকই যথেষ্ট। কোনও কোনও ক্ষেত্রে গ্লাভস দরকার। আমরা সেগুলি দিয়েছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy