Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
দাম চড়া আনাজের
Farmer

লাগাতার বৃষ্টিই খলনায়ক, বলছেন চাষিরা

পূর্ব বর্ধমানে সবচেয়ে বেশি আনাজ উৎপাদন হয় কালনায়। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে পাইকারি বাজার থেকে প্রতিদিনই ফড়েরা বিহার, ওড়িশার মতো রাজ্যে আনাজ নিয়ে যান। পাইকারি বাজারের আড়তদারদের দাবি, অন্য বার এই সময়ে আনাজের যা জোগান থাকে এ বার তা অর্ধেকেরও কম।

জলদি জাতের বাঁধাকপি চাষ কালনায়। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

জলদি জাতের বাঁধাকপি চাষ কালনায়। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৫২
Share: Save:

চাহিদার তুলনায় জোগান কম। ফলে, প্রায় দু’মাস ধরেই আনাজের দামের নাগাল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। তাঁদের দাবি, কখনও কেজিতে পাঁচ-দশ টাকা কম দাম হচ্ছে, আবার তা বেড়েও যাচ্ছে। চাষিদের দাবি, পুরোটাই নির্ভর করছে আবহাওয়ার উপরে।

শনিবার কালনা মহকুমার একাধিক খুচরো বাজারে ঘুরে দেখা যায়, কেজি প্রতি পটল, ঢেঁড়শ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কচু কেজি ২০ টাকা, উচ্ছে কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, কাঁচা লঙ্কা কেজি ১৩০ টাকা, টোম্যাটো কেজি ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, বেগুন-গাজর কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ছাঁচিকুমড়ো কেজি ২০ টাকা, পালংশাক ৩০ টাকা, ধনেপাতা ৪০০ টাকা কেজিতে বিকোচ্ছে। আলুর দামও কমেনি। জ্যোতি আলু ৩০ টাকা কেজি, চন্দ্রমুখী আলু ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এ দিনও।

পূর্ব বর্ধমানে সবচেয়ে বেশি আনাজ উৎপাদন হয় কালনায়। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে পাইকারি বাজার থেকে প্রতিদিনই ফড়েরা বিহার, ওড়িশার মতো রাজ্যে আনাজ নিয়ে যান। পাইকারি বাজারের আড়তদারদের দাবি, অন্য বার এই সময়ে আনাজের যা জোগান থাকে এ বার তা অর্ধেকেরও কম। তবে মাস দু’য়েক আগেও করোনা পরিস্থিতির জেরে ভিন্ রাজ্য থেকে ফড়েরা কম আসছিলেন। এখন তাঁদের যাতায়াত অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ায় আনাজের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু জোগান দেওয়া যাচ্ছে না। এ দিন কালনার চকবাজারে আনাজ কিনতে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা গোপাল সরকার। তিনি বলেন, ‘‘করোনার জেরে অনেকের চাকরি গিয়েছে। আয় কমেছে। কিন্তু আনাজের বাজার আগুন।’’আর এক ক্রেতারও দাবি, ‘‘আগে একশো টাকায় ব্যাগ ভরা আনাজ পেতাম। এখন আড়াইশো টাকাতেও ব্যাগ ভরছে না। একটা ছোট ফুলকপির দামই ২৫-৩০ টাকা।’’ অনেকেই আনাজ কম কিনে আলুর দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু তা-ও অন্য সময়ের থেকে বেশি। আবার শারীরিক কারণে আলু খান না অনেকে, মুশকিলে পড়েছেন সেই সময়ে মানুষেরাও।

পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কালেখাঁতলা পাইকারি বাজারের সম্পাদক ক্ষুদিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘চাষিরা বর্তমানে পুরনো গাছ থেকে কম ফলন পাচ্ছেন। নতুন আনাজ চাষ হলেও এখনও তা থেকে উৎপাদন শুরু হয়নি। ফুলকপি, বাঁধাকপি মতো কিছু কিছু আনাজের জোগান অল্প অল্প করে বাড়ছে। পুজোর আগে জোগান কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ চাষিদের দাবি, ঘূর্ণিঝড় আমপানে আনাজ চাষের যত না ক্ষতি হয়েছিল, পরবর্তীতে ধাপে ধাপে লাগাতার বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এখনও টানা রোদ না হওয়ায় সেই ধাক্কা সামলাতে সময় লাগছে।

জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘লাগাতার বৃষ্টি আনাজ উৎপাদনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পটলের মতো আনাজ ভাল হয় নদীর পাড়ে চরের জমিতে। এ বার বৃষ্টিতে চরের ফসল বেশি নষ্ট হয়েছে। আবার জমা জলে রোগপোকার হামলাও দেখা দিয়েছে অনেক এলাকায়।’’ কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে? পার্থবাবুর দাবি, ‘‘সবটাই নির্ভর করছে বৃষ্টির উপরে। ভাল আনাজ উৎপাদনে এখন দরকার ঝলমলে আকাশ। জমিতে জল জমা বন্ধ হলেই বাড়বে আনাজের জোগান।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Burdwan Farmer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy