Advertisement
E-Paper

ঢাকের তালে স্বনির্ভরতার স্বপ্ন

মহিলারা জানান, প্রথম দু’বছর করোনা পরিস্থিতিতে সে ভাবে সুযোগ মেলেনি। তবে গত দু’বছর বর্ধমান ও নদিয়া জেলার নবদ্বীপ, শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর-সহ বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপে ঢাক বাজিয়েছেন তাঁরা।

মামুদপুরে ঢাকির দল।

মামুদপুরে ঢাকির দল। —নিজস্ব চিত্র।

সুদিন মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৯
Share
Save

ওঁরা সংসার সামলান, কাজ করেন মাঠে-ঘাটে। আবার ঢাকের তালে মাতিয়ে রাখেন উৎসব চত্বর। ওঁরা মন্তেশ্বরের মামুদপুর গ্রামে সরস্বতী মহিলা ঢাকি দলের সদস্য। কয়েক বছর ধরে তালিম ও প্রস্তুতি নেওয়ার পর বছর চারেক আগে তৈরি হয় এই মহিলা ঢাকির দলটি। বর্তমানে দলের মোট সদস্য সংখ্যা দশ জন হলেও এর মধ্যে তিনজন পুরুষ সদস্য রয়েছেন। বর্ধমান, শান্তিপুর, নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, কালনা প্রভৃতি এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে ঢাক বাজাচ্ছেন ওঁরা।

দলের সদস্য বাণী দাস, চম্পা দাস, ঝুমা দাস, রিঙ্কু দাস, অনিমা দাসেরা জানান, সংসার সামলানোর পাশাপাশি মাঠেও কাজ করেন ওঁরা। বছর কয়েক আগে নতুন কিছু করার তাগিদে ঢাক শেখার ভাবনা মাথায় আসে। বছর চারেক আগে তৈরি হয় মহিলা ঢাকি দল। পাড়ারই উৎপল দাস, নিমাই দাস, বাবলু দাসদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাক বাজাচ্ছেন মামুদপুর গ্রামের সাত বধূ।

মহিলারা জানান, প্রথম দু’বছর করোনা পরিস্থিতিতে সে ভাবে সুযোগ মেলেনি। তবে গত দু’বছর বর্ধমান ও নদিয়া জেলার নবদ্বীপ, শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর-সহ বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপে ঢাক বাজিয়েছেন তাঁরা। এ বছরও বর্ধমান শহরের একটি পুজো মণ্ডপে ছ’দিন ঢাক বাজানোর চুক্তি রয়েছে তাঁদের। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে বিসর্জনের দিনেও বর্ধমান শহরেই অন্য একটি মণ্ডপে ঘণ্টা চারেক ঢাক বাজানোর ভাড়া রয়েছে। লক্ষ্মীপুজো, কালী পুজোতেও তাঁদের কাজ রয়েছে।

দলের এক মহিলা ঢাকির স্বামী বলেন, ‘‘গত ১৫ বছর ধরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাঠে কাজ করতে যেতে পারি না। বাড়িতে দুই নাবালক সন্তান রয়েছে। স্ত্রীই মাঠে-ঘাটে কাজ করে সংসার সামলায়। ঢাকি হিসেবে কাজে যুক্ত হওয়ার পর কিছুটা আর্থিক স্বচ্ছলতাও এসেছে।’’ ঢাকি দলের আর এক সদস্য বলেন, ‘‘সারা বছর ঠিকমতো বায়না পেলে গাড়ি ভাড়া ও থাকা-খাওয়ার খরচ বাদ দিয়ে জন প্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা হাতে থাকে।’’ যদিও শিল্পী হিসেবে এখনও নাম তুলতে না পারায় আক্ষেপ রয়েছে।

এ বিষয়ে মামুদপুরের বাসিন্দা মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমান সহ-সভাপতি প্রতিমা সাহা বলেন, ‘‘ওঁদের দলটি নতুন। তবুও ব্লক স্তরে শিল্পী পরিচয়পত্র করার শিবির হলেই ওঁদের সেই সুবিধা দেওয়া হবে।’’ মহিলা ঢাকি দলটিকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বিডিও (মন্তেশ্বর) গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘কোনও সমস্যা নিয়ে ব্লক স্তরে আবেদন করলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manteshwar Self reliance

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}