পরীক্ষা হয়ে গেল। অথচ, হাতে নেই বই। কেউ বা আবার অন্যের কাছ থেকে ফটোকপি করিয়ে কোনও রকমে পরীক্ষায় বসেছে। নতুন সিলেবাসের ‘বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস’ বইটি ছাড়াই দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকার বহু এলাকায় পড়ুয়াকে উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টের বাংলা পরীক্ষা দিতে হল।
শিক্ষকদের দাবি, গত শিক্ষাবর্ষে অন্তত ৪০ শতাংশ পড়ুয়া ওই বইটি ছাড়াই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। যদিও এ বছর সংখ্যাটা অনেকটাই কম বলে দাবি। ৪ নভেম্বর, বাংলার টেস্ট পরীক্ষার কয়েক দিন আগে সহপাঠীদের কাছ থেকে বই নিয়ে অনেকে ফটোকপি করিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে বলে স্কুলগুলির সূত্রে খবর। কেউ বা আবার ভরসা রেখেছে গৃহশিক্ষকের দেওয়া ‘নোটে’র উপরেই। এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছিলেন অভিভাবকেরাও। কাঁকসার বাসিন্দা প্রবোধ চন্দ্র বলেন, ‘‘মুদির দোকান চালিয়ে মেয়েকে পড়াচ্ছি। স্কুল থেকে বই পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বই না পেয়ে টেস্ট পরীক্ষা আগে ফটোকপি করাতে হয়েছে।’’
বিভিন্ন স্কুলের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ শিক্ষাবর্ষের শুরুতে নতুন সিলেবাসের ‘বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস’ বইটি কিনে পড়াশোনা শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। কিন্তু একটি প্রসঙ্গে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় পরে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বিজ্ঞপ্তি দেয়, বইটির পরিমার্জিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের তরফে বই পাঠিয়ে দেওয়া হয় সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে। সেখান থেকেই বিভিন্ন স্কুলে বই পৌঁছে যাওয়ার কথা।
শিক্ষকেরা জানান, দুর্গাপুরের রামকৃষ্ণপল্লি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ, কাঁকসার সিলামপুর হাইস্কুল, গলসির বুদবুদ গার্লস হাইস্কুল-সহ এলাকার বহু স্কুলেই সব পড়ুয়া বাংলা বই হাতে পায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘‘ক্লাসে যতটা পারা যায় নোট দিয়েছি।’’ পরীক্ষার্থীরাও বলেন, ‘‘বই না থাকায় প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষায় বসতে হল। মাস তিনেক পরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। জানি না আর বই পাব কি না!’’ পরীক্ষার্থীদের আশঙ্কা, বাংলায় নম্বর কম হলে সামগ্রিক ফলের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে পারে।
একাদশ শ্রেণির বাংলার প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের যে বই পরিদর্শকের দফতর থেকে দেওয়ার কথা ছিল, তাও সব পড়ুয়া হাতে পায়নি বলে খবর। একাদশ শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা শুরু হবে ২১ নভেম্বর থেকে। এই পরিস্থিতিতে তারাও বই ছাড়াই পরীক্ষা দিতে বাধ্য হবে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) খগেন্দ্রনাথ রায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘পর্যাপ্ত সংখ্যক বই পড়ে রয়েছে। বই ছাড়া পড়ুয়ারা পরীক্ষা দেবে, তা হতে পারে না। দ্রুত প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy