বিধি মেনে: পুজো মণ্ডপ স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে। বুধবার বর্ধমানের বড়শুলের একটি পুজোয়। ছবি: জয়ন্ত বিশ্বাস|
হাইকোর্টের রায়ের পরেও রাজ্য সরকারের নির্দেশ না আসায় নিয়ন্ত্রণ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে ধন্দ ছিল। বুধবার শুনানির পরেও রায় বহাল থাকায়, পুজো কমিটিগুলিকে সরাসরি বা ফোন করে রায় মানার কথা বলতে শুরু করেছে পুলিশ। উদ্যোক্তাদের অধিকাংশেরও দাবি, তাঁরা নিয়ম মেনে ব্যারিকেড দেবেন। সমস্যা হলে, প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া হবে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ মানার জন্য সব পুজো কমিটিকেই বলা হয়েছে। যে সব মণ্ডপে ভিড় হয়, সেখানে পুলিশের নজরদারি থাকবে। ব্যারিকেডের বাইরে ভিড় হলে তা সরিয়ে দেওয়া হবে। কোনও পুজো কমিটি নিয়মভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ভিড়ের চাপ কমাতে পুজোর লাইভ সম্প্রচারেও ঝুঁকছেন বেশির ভাগ কমিটি। কেউ সামাজিক মাধ্যমে লাইভ করার কথা ভাবছেন। কেউ আবার জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে পুজো দেখার আয়োজন করছেন।
তার সঙ্গেই আদালত রায় পুনর্বিবেচনা করে মণ্ডপে হাজির থাকতে পারা ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ানোয় পাড়ার কমবেশি সকলেই পুজোর থাকতে পারবেন মনে করছেন কর্মকর্তারা। তাঁদের দাবি, প্রতিদিন নামের তালিকা পাল্টানো যাবে। ফলে, সকলেই মণ্ডপে ঢুকে ঠাকুর দেখার সুযোগ পাবেন। অঞ্জলি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে ফুল নিয়ে যাওয়া বা দূরত্ব মানার বাধ্যবাধকতা থাকবে। বাইরের দর্শকদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য-বিধিই শেষ কথা। সিঁদুরখেলা অবশ্য হবে না, জানিয়েছেন বেশির ভাগ পুজো কমিটি।
এ দিন হাইকোর্টের রায় বেরনোর পরেও অনেক পুজো কমিটির মণ্ডপের সামনে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড বা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে ব্যারিকেড দেখা যায়নি। বর্ধমান শহরের সবুজ সঙ্ঘের পুজো কমিটির কর্তা বাপি বসু বলেন, ‘‘কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে কালই ব্যারিকেড বসানো হবে। রাস্তা থেকে মণ্ডপ দেখা যাবে।’’ পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা শ্রীরামপুর এলাকার একটি পুজোর উদ্যোক্তা দিলীপ মল্লিক বলেন, ‘‘সমস্ত পুজো কমিটি নিয়ম মেনে ব্যারিকেড তৈরি করছে।’’ এ দিন শক্তিগড়, বড়শুলের তিনটে বড় পুজো-সহ জেলার বিভিন্ন মণ্ডপে জীবাণুনাশক স্প্রে করেছে দমকল। জেলা দমকলের এক কর্তার কথায়, ‘‘হাইকোর্ট মণ্ডপগুলিকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা ঘোষণা করেছে। গণ্ডিবদ্ধ এলাকার নিয়ম মেনেই জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।’’ গুসকরা পুরসভার তরফেও মণ্ডপ জীবাণুমুক্ত করার কথা জানানো হয়েছে। পুজো কমিটিগুলিরও দাবি, অনুদানের টাকায় স্যানিটাইজ়ার টানেল বসানো হয়েছে। পাড়ায়, বাজারে মাস্কও বিলি করা হবে।
তবে এত কিছুর মাঝেও পঞ্চমীতে রাস্তায় টোটো দাঁড় করিয়ে ঠাকুর দেখা বা ব্যারিকেড দেওয়া হয়নি এমন মণ্ডপে ঢোকার দৃশ্য নজরে এসেছে। বর্ধমানের লাল্টু স্মৃতি সঙ্ঘের কর্তা তন্ময় সামন্ত বলেন, ‘‘মণ্ডপ থেকে কিছুটা দূরে নো এন্ট্রি বোর্ড লাগানো হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা মণ্ডপের ভিতর কাউকে ঢুকতে দেবেন না।’’ বড়শুলের জাগরণী ক্লাব মণ্ডপের ভিতর ঢোকা ও বেরনোর পথ বন্ধ করে দিয়েছে। নির্দিষ্ট দূরত্বের অনেক বাইরে থেকে প্রতিমা দর্শন করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। মেমারির সারদাপল্লি-অরবিন্দপল্লি পুজো কমিটি ফিতে মেপে ১০ মিটার দূরত্ব দেখে নিয়ে বাঁশের ব্যারিকেড করেছে।
মঙ্গলবারও হাইকোর্টের রায়ের পর যাঁরা নির্দেশ মানার ক্ষেত্রে নানারকম অজুহাত দেখাছিলেন তাঁরাও এ দিন নির্দেশের পক্ষে কথা বলেছেন। বর্ধমানের কেশবগঞ্জ চটি-সহ একাধিক পুজো রাস্তার উপরে হয়। তাঁরাও জানিয়েছেন, প্রশাসনের পরামর্শ নিয়ে ব্যারিকেড করা হবে। পুলিশের অনুমান, হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে অর্ধেকেরও কম মানুষ রাস্তায় নামবেন বলে মনে হচ্ছে। আজ, ষষ্ঠীর রাতেই তার পূর্বাভাস মিলবে বলে মনে অনুমান করছেন জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy