চিত্তরঞ্জনে ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
যুবককে গুলি করে খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে চিত্তরঞ্জন রেল আবাসন এলাকায়। পাশাপাশি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রেলকর্মীরা। তাঁদের ক্ষোভ, চিত্তরঞ্জন রেল আবাসন এলাকাটি সংরক্ষিত। অথচ, ‘বহিরাগতেরা’ ‘নির্বিঘ্নে’ ঢুকে গুলি চালিয়ে চম্পট দিচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন কিছু করতে পারছে না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় তাঁরা আরপিএফ আধিকারিকদের কাছে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি তুলেছেন। এ দিকে, পুলিশের দাবি, রবিবার রাতের ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
রবিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ চিত্তরঞ্জন শহরের কস্তুরবা গাঁধী হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন সীমানা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের মিহিজামের অম্বেডকর কলোনির বাসিন্দা রাহুল রাম। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাহুল চিত্তরঞ্জনে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। দুষ্কৃতীরা পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তাঁকে গুলি করে। রাতেই তদন্তে নামে চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাহুল মিহিজামের এক জন জনপ্রিয় যুব কংগ্রেস কর্মী বলে পরিচিত ছিলেন। তাঁর বাবা রাজেশ রাম বলেন, ‘‘ছেলের কোনও শত্রু ছিল বলে জানতাম না। কারা এই কাজ করল বুঝতে পারছি না।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বজিৎ মাহাতা বলেন, ‘‘কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আশপাশের, দোকান মালিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
এ দিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা শ্যামল গোপ জানান, এই ঘটনার পরে সাধারণ মানুষ খুব আতঙ্কে আছেন। গত কয়েক মাসে এ রকম তিনটি ঘটনা ঘটল। ফলে, ভয়ে রাত-বিরেতে কেউ বাড়ির বাইরে বেরোতে চাইছেন না। প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৭ জুন জিএম কার্যালয়ের খুব কাছেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন কারখানার ঠিকা ব্যবসায়ী বলরাম সিংহ। ওই বছর ৪ সেপ্টেম্বর শহরের শেষ প্রান্ত অজয় নদের তীর থেকে উদ্ধার করা হয় রাজেশ প্রসাদ নামে এক যুবকের দেহ। বারবার এমন ঘটনায় আরপিএফের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। ‘লেবার ইউনিয়ন’-এর সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্তের দাবি, ‘‘শহর পাহারার দায়িত্বে থাকা আরপিএফকে আরও সজাগ থাকার আবেদন জানাচ্ছি।’’ আইএনটিইউসি-র কার্যকরী সভাপতি নেপাল চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘আরপিএফের নজর এড়িয়ে শহরে দুষ্কৃতীরা কী ভাবে ঢুকছে, এটাই আশ্চর্যের!’’
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনওরকম আপস করা হয় না বলে দাবি করেছেন আরপিএফ আধিকারিকেরা। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্ট কে চৌধুরীর দাবি, এক ও তিন নম্বর গেট দিয়ে চিত্তরঞ্জন শহরে প্রবেশ করা গাড়ি পরীক্ষা করা হয়। তবে মোটরবাইক বা পথচারীদের পরীক্ষা করার নীতি নেই। ‘বহিরাগতেরা’ যেমন শহরে দোকানবাজারে আসেন। তেমনি আবাসিকেরাও শহরের বাইরে বিভিন্ন কাজে নিয়মিত যাতায়াত করেন। কে চৌধুরী বলেন, ‘‘এ বার থেকে শহর জুড়ে ব্যাপক নাকা তল্লাশির সিদ্ধান্ত হয়েছে। শহরের প্রবেশদ্বারে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এ বার শহরের মধ্যেও তা বসানোর বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া, শহরের বিভিন্ন এলাকায় হাম্প ও রেলগার্ড বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
তবে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, চিত্তরঞ্জন শহরের আবাসিকেরা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা সহজে যাতায়াত করার জন্য সীমানা পাঁচিল ভেঙে একাধিক অবৈধ পকেট গেট বানিয়েছেন। দুষ্কৃতীরা সহজেই এই গেটগুলি দিয়ে ঢুকে অপরাধ ঘটিয়ে চলে যাচ্ছে। যেহেতু এই গেটগুলিতে কোনও পাহারার ব্যবস্থা নেই। এই গেটগুলি নিয়েও আরপিএফের ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy