বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতি। — নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির রাজ্য কমিটি তাদের বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার জেলা সভাপতি রদবদল করেছে। সে তালিকায় রয়েছে আসানসোল সাংগঠনিক জেলাও। এই সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হলেন বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়। দিলীপ দে’র জায়গায় দায়িত্ব পেলেন তিনি। বাপ্পাদিত্য এত দিন দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র ও অন্যতম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তবে এই রদবদল কেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এর নেপথ্যে তিনটি কারণ থাকতে পারে।
ছোট থেকেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ বাপ্পাদিত্য এক সময় বজরং দলের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। বাণিজ্যে স্নাতক বাপ্পাদিত্য ২০০০ সালে বিজেপির সংস্পর্শে আসেন। সামলেছেন দলের হিরাপুর ব্লকের মণ্ডল সভাপতি, তিন বার ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সম্পাদক, দলের রাজ্য কমিটির তিন বারের মুখপাত্রের দায়িত্বও।
বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই এই রদবদল। যদিও, ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, এর নেপথ্যে তিনটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গিয়েছে, প্রকাশ্যেই দলের নিচুতলার কর্মী, নেতাদের একাংশ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এ-ও অভিযোগ ওঠে, পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের সামনে লড়াই করার জন্য নেতাদের পাশে পাওয়া যায়নি। এমনকি, বারাবনিতে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিদায়ী জেলা সভাপতি দিলীপ দে। সমাজমাধ্যমেও সম্প্রতি দলের নেতা, কর্মীদের একাংশকে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে। যদিও, দিলীপ পাশে না থাকার অভিযোগে আমল দেননি।
দ্বিতীয়ত, ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, তৃণমূলের সঙ্গে লড়তে হলে, তরুণ প্রজন্মকে গুরুত্ব দিতেই হবে। সে প্রক্রিয়া দলে শুরুও হয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। সে সূত্রেই বছর ৪০-এর বাপ্পাদিত্যকে বেছে নেওয়া হল কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তৃতীয়ত, বিদায়ী জেলা সভাপতির আমলে আশানুরূপ নির্বাচনী সাফল্য সে ভাবে পায়নি বিজেপি। উল্টে ভোটব্যাঙ্কে রক্তক্ষরণ দেখা গিয়েছে। গত পঞ্চায়েত ভোটে দলের তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়া, আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচন ও আসানসোল পুরভোটে ভরাডুবি যার প্রমাণ। এ সবের অভিঘাতেও এই বদল হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
যদিও, জল্পনায় আমল দিচ্ছেন না বিধায়ক তথা বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তাঁর কথায়, “আমাদের দলে কাজের মাধ্যমে নেতা মনোনীত হন। ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব তার ভিত্তিতেই নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করেছেন।” তবে বাপ্পাদিত্যের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের শুরু যেখান থেকে, সে এলাকার দলীয় বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের বক্তব্যে কিন্তু ‘অন্য সুর’ শোনা গিয়েছে। তাঁর কথায়, “বাপ্পাদিত্য দলের অনেক দিনের কর্মী। তরুণ প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্যও। শিল্পাঞ্চলকে হাতের তালুর মতো চেনেন।” এর পরেই তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ সংযোজন: “দলের গোষ্ঠীবাজির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে পারবেন উনি।”
এ দিকে, দলের বিদায়ী জেলা সভাপতি দিলীপ দে বলেন, “আমি অত্যন্ত সততার সঙ্গে দল যে দায়িত্ব দিয়েছিল, তা পালন করেছি। নতুন নেতৃত্বকে শুভেচ্ছা। দলের ভালই হবে।” পাশাপাশি, বাপ্পাদিত্যও বলেন, “কোনও জল্পনাই ঠিক না। দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করব। পূর্বতন সকল নেতৃত্ব এবং তরুণ প্রজন্মকে নিয়েই আমরা লড়াই করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy