Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বাণিজ্যিক সংস্থার জল চুরি রুখতে টাস্ক ফোর্স

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন কোন এলাকায় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি জল চুরি করছে তার একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৯ ০২:০৪
Share: Save:

ইটভাটা, কারখানা থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁ— নিয়ম ভাঙায় যুক্ত রয়েছে নানা সংস্থাই। খনি-শিল্পাঞ্চল জুড়ে এই রকম বেশ কিছু বাণিজ্যিক সংস্থা যথেচ্ছ জল চুরি করছে বলে অভিযোগ। তার জেরে লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা জলের সঙ্কটে পড়ছেন। তা রুখতে একটি টাস্ক ফোর্স তৈরির পরিকল্পনা করেছে জেলা প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন কোন এলাকায় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি জল চুরি করছে তার একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠির আশ্বাস, কোনও বাধা না মেনে জল চুরি ঠেকানো হবে। আসানসোল পুরসভাকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রতি বছর গরমেই শিল্পাঞ্চলের নানা অঞ্চলে প্রবল পানীয় জলের সঙ্কট তৈরি হয়। এ বছর এখনও তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় তা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকেরা জানান, গত বছরগুলির তুলনায় এ বার দামোদর ও অজয়ে জল রয়েছে কম। ফলে, পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করতে সমস্যা হচ্ছে। সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়, শিল্পাঞ্চল জুড়ে অবৈধ জলের সংযোগগুলি ছিন্ন করা হলে এই সঙ্কট অনেকটা মেটানো যাবে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাশাসকের নেতৃত্বে সম্প্রতি প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক। সিদ্ধান্ত হয়, একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হবে। বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির জল চুরি নজরে এলেই তা ছিন্ন করা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মানবিকতার খাতিরে গৃহস্থদের আপাতত এই পদক্ষেপের বাইরে রাখা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘বাণিজ্যিক সংস্থার জলচুরি রুখতে আমরা বদ্ধপরিকর। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছি।’’

শিল্পাঞ্চলে জলের সঙ্কট মেটাতে হলে দেদার জল চুরি রুখতেই হবে বলে দাবি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আসানসোলের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস নস্করের। তিনি বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি আগেই জানিয়েছি। জেলাশাসকের পদক্ষেপে আমরা আশাবাদী।’’ তিনি জানান, প্রাথমিক হিসেবে শিল্পাঞ্চলের শ’দেড়েক বাণিজ্যিক সংস্থায় জল চুরির ঘটনা ঘটছে বলছে বলে জানা গিয়েছে।

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা যায়, দেন্দুয়া থেকে চিত্তরঞ্জন রোড হয়ে কুলটি ও আসানসোলে নানা ইটভাটা জলের পাইপ ফাটিয়ে অবৈধ সংযোগ নিয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। আসানসোল থেকে বরাকরে জিটি রোডের দু’ধারে নানা কারখানা, হোটেল ও রেস্তোরাঁতেও জলের অবৈধ সংযোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া বহু দোকান, গাড়ি মেরামতের গ্যারাজেও বেআইনি ভাবে জল নেওয়া হচ্ছে বলে খবর মিলেছে। দফতরের আধিকারিকেরা জানান, কল্যাণেশ্বরী শোধনাগারের জল শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জলাধারে তোলার জন্য ২৪ ঘণ্টা সরবরাহের পাইপলাইন রয়েছে। অভিযোগ, সেটি ফাটিয়ে বেআইনি ভাবে জল নেওয়ায় জলাধারগুলি পূর্ণ হচ্ছে না। ফলে, বিভিন্ন এলাকায় পর্যাপ্ত জল পাঠানো যাচ্ছে না। তাতে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যা দূর করতে জলের অবৈধ সংয়োগ ছিন্ন করা জরুরি বলে মনে করছে প্রশাসন।

অন্য বিষয়গুলি:

Water Crisis Theft Asansol Special Task Force
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy