গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় বাড়ির সামনে গল্পগুজব। বর্ধমানে। ছবি: উদিত সিংহ
করোনা-সংক্রমণের হার কমাতে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় ফের ‘লকডাউন’-এর সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার পরেও বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে সচেতনতার বালাই নেই বলে অভিযোগ। দোকান-বাজারে দূরত্ব-বিধি ভেঙে ভিড়, আড্ডা জমানো যেমন চলছে, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার ভিতরেও অনেকে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন বলে অভিযোগ। ‘মাস্ক’ না পরে রাস্তায় ঘোরাফেরার ছবিও দেখা যাচ্ছে শহর এলাকাতেই। পুলিশ জানায়, ‘মাস্ক’ পরার বার্তা নিয়ে পথে নামতে হয়েছে তাদের। নিয়ম ভাঙার অভিযোগে অতিমারি আইনে গ্রেফতারও করা হচ্ছে।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দূরত্ব-বিধি মানা হচ্ছে কি না, পুলিশকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। দোকানদারদেরও দেখতে হবে, তাঁর ক্রেতারা দূরত্ব-বিধি মানছেন কি না।’’ অকারণে বাড়ির বাইরে না বেরনো, গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় ‘লকডাউন’ নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে বলে জানান পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শনিবার পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা ৩৪টি। জেলায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দু’শো পেরিয়ে গিয়েছে। জেলার মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে বর্ধমান শহর— শনিবার রাত পর্যন্ত সেখানে ২০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গণ্ডিবদ্ধ তালিকাতেও উপরের দিকে রয়েছে বর্ধমান শহর। তা সত্ত্বেও রাস্তাঘাট, বাজারে যেমন দূরত্ব মানার বালাই নেই, তেমনই টোটো থেকে চায়ের দোকানেও নিয়ম মানার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, আক্রান্তের সংখ্যা পঞ্চাশ থেকে একশোয় পৌঁছাতে সময় লেগেছিল এক সপ্তাহেরও কম। সেখানে একশো থেকে দু’শোয় পৌঁছতে লাগল এক মাসের বেশি সময়। এক সময়ে দিনে ১৯-২১ জন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলছিল। সেখানে গত এক মাসে দিনে গড়ে তিন জন করে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের মতে, পরিযায়ী শ্রমিক আসা কমতেই আক্রান্তের সংখ্যা কম হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার দাবি, ‘‘বর্ধমান শহরে যে ২০ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে, তাঁদের একাংশ বর্ধমানে থাকেন না। ঠিকানায় বর্ধমান থাকায়, সরকারি তথ্যে সেটাই উঠে আসছে।’’
তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেতনতার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। কিন্তু নতুন করে লকডাউন হওয়া এলাকাতেও ‘মাস্ক’ পরার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, গণ্ডিবদ্ধ এলাকাতেও বাসিন্দাদের ‘অবাধে’ ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। শুধু বর্ধমান শহর নয়, জেলার অন্য নানা এলাকাতেও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। কালনায় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গণ্ডিবদ্ধ এলাকা থেকে বেরিয়ে কেউ-কেউ নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নিজের এলাকায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় ব্যারিকেড টপকে বেরিয়ে অন্য জায়গা কেনাকাটা সারছেন। অনেকের আবার অভিযোগ, গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় প্রশাসনিক নজরদারিরও খামতি রয়েছে। যদিও এসিএমওএইচ (কালনা) চিত্তরঞ্জন দাসের দাবি, সরকারি নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা পরিদর্শনও করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy