তৈরি হচ্ছে কেক। কলকাতার একটি বেকারিতে। —নিজস্ব চিত্র।
জিএসটি-র প্রভাবের সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী কাঁচামালের দাম। এরই সঙ্গে বহুজাতিক বিস্কুট কারখানাগুলি কেকের বাজারে ঢুকে পড়েছে। প্রতিযোগিতার এই বাজারে সমস্যায় পড়েছেন ছোট, মাঝারি বেকারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকজন। এই পরিস্থিতিতে জিএসটি কমানোর পাশাপাশি, পৃথক কোনও সরকারি প্রকল্প চালু দাবি তুলেছেন ওই সব ছোট, মাঝারি বেকারি ব্যবসায়ীরা।
ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি হয়ে গেল। এখনও সে ভাবে কেকের বাজার জমেনি বলে জানাচ্ছেন বেকারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকজন। তাঁরা জানাচ্ছেন, ডিসেম্বর মাস থেকে বিশেষ ধরনের কেক বিক্রির জোয়ার আসতে শুরু করে। এখনও সেই জোয়ার না দেখা গেলেও, ২৪ থেকে ২৫ ডিসেম্বর। তার পরে জানুয়ারি মাসে ভালই কেক বিক্রি হবে বলে আশা করছেন বেকারি মালিকেরা।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বেকারি অ্যাসোসিয়েশনের’ মুখ্য কার্যকর্তা তথা কলকাতার রাজারহাটের বেকারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আরিফুল ইসলাম জানান, রাজ্য জুড়ে ছোট, মাঝারি ও বড় মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার বেকারি রয়েছে। গত বারের তুলনায় এক বছর কেক তৈরির কাঁচামাল গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। যেমন, ডিম ২ টাকা থেকে আড়াই টাকা বেড়েছে। কুইন্টালে চিনি তিনশো টাকা, ময়দা দু’শো থেকে আড়াইশো টাকা, কিশমিশ, মোরোব্বা, কাজু যথাক্রমে ২৫, ২৫ ও ৩০ শতাংশ করে দাম বেড়েছে। ‘মার্জারিন’ কেজিতে ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
আরিফুল বলেন, “এ ভাবে সমস্ত কাঁচামালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তার প্রভাব পড়েছে বাজারে। ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। শীতকাল তথা ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে জানুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত কেক বিক্রিতে জোয়ার আসে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে সে ভাবে বাজার জমে ওঠেনি। তবে এক থেকে দু’দিনের মধ্যে ভাটার টান মুছে যাবে।”
শিলিগুড়ির বেকারি ব্যবসায়ী বিশ্বরঞ্জন দাস, দুর্গাপুরের ইমরান জাফরেরা জানান, ২৫ ডিসেম্বর মানেই বিশেষ ‘প্লাম কেক’ ও ‘রিচ ফ্রুটকেক’-এর চাহিদা তুঙ্গে থাকে। এ ছাড়া, শীতকালে বেশ কিছু দিন নলেন গুড়ের কেকের বিশেষ চাহিদা থাকে। তাঁরা বলেন, “ডিসেম্বেরের শুরু থেকে বিভিন্ন চার্চ থেকে কেকের ‘অর্ডার’ আসা শুরু হয়েছে। তবে বিশেষ প্লাম বা রিচফ্রুট কেকের চাহিদা সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না। তবে ২৪ ডিসেম্বর থেকে এই দু’টি কেকের চাহিদা বাড়বে। পাশাপাশি, ছোট, মাঝারি বেকারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকজনের জন্য পৃথক কোনও সরকারি প্রকল্প চালু করা হলে ভাল হয়।”
তবে কাঁচামালের দাম কেকের বাজারে প্রভাব ফেলেছে, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বহুজাতিক সংস্থার বাণিজ্যিক বিভাগের পূর্বাঞ্চল শাখার প্রধান দেবাশিস দাস। তিনি বলেন, “কাঁচামালের দাম উর্ধ্বমুখী। তার জেরে সমস্যায় জেরবার অবস্থা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প। অন্য দিকে, শ্রমের দামও বাড়ায় উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ১৮ শতাংশ জিএসটি-র ধাক্কা।” তাঁর সংযোজন: “এ সবের পরেও, কেকের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে ন্যূনতম মুনাফায় কারবার করতে হচ্ছে। এর উপরে জাতীয় স্তরের বড় বড় বিস্কুট কারখানাগুলি কেকের বাজারে ঢুকে পড়তে চাইছে। তাতে ছোট, মাঝারি বেকারিরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সমস্যায় পড়ছেন। তাই জিএসটি-র পরিমাণ কমিয়ে দিলেই বিক্রি বাড়ার সঙ্গে ক্রেতা, ব্রিক্রেতারা লাভবান হবেন।”
আপাতত বড়দিন থেকে ইংরেজি নবর্ষের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বেকারি ব্যবসায়ীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy