তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে জিটি রোডে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
ছাত্রীকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগে আসানসোলে ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর দুই বন্ধু। বাকি চার জন ধৃত এক বন্ধুর পরিজন ও পরিচিত। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, টাকার জন্যই অপহরণ করা হয়েছিল বছর সতেরোর মেয়েটিকে। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে বুধবার আসানসোল পুলিশ লাইন অঞ্চলে জিটি রোড অবরোধ করেন ওই ছাত্রীর পরিজনেরা।
এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সায়ক দাস জানান, ধৃত বিজয় প্রসাদ ও আকাশ শাহ নিহত ছাত্রীর বন্ধু। এ ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে আকাশের মা দীপিকা শাহ, দিদি আলিশা রায়, জামাইবাবু প্রবীণ রায় ও দীপিকার বন্ধু সুপ্রিয় বক্সীকে। ঘটনার পরেই আলিশা ও প্রবীণ তাদের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণপুরের পৈলানে নিজেদের বাড়িতে চলে গিয়েছিল। আসানসোল পুলিশের একটি দল সেখান থেকে তাদের গ্রেফতার করে এনেছে। এডিসিপি (সেন্ট্রাল) বলেন, ‘‘মেয়েটিকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। ঠিক কী কারণ রয়েছে, তা ধৃতদের আরও জেরা করে স্পষ্ট হবে।’’
১০ অগস্ট বিকেলে টিউশনে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে নিখোঁজ হয় ধেমোমেন এলাকার মেয়েটি। পরিবারের অভিযোগ, ১২ অগস্ট মেয়ের ফোন থেকে এসএমএস করে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তা পুলিশকে জানানো হয়। ১৩ অগস্ট সকালে আপকার গার্ডেনে একটি ডাস্টবিনে মেয়েটির দেহ মেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটির বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়। পুলিশের দাবি, বিজয় প্রসাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই খুনের বিষয়ে তথ্য মেলে। জানা যায় বাকিদের নাম। একে-একে গ্রেফতার করা হয় তাদের। বুধবার আলিশা ও প্রবীণ ছাড়া ধৃত বাকি চার জনকে আসানসোল আদালতে তোলা হলে ১২ দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, রাধানগর ৮ নম্বর বস্তি অঞ্চলের বিপিএল কলোনির বাসিন্দা বিজয় ১০ অগস্ট বাড়িতে একা ছিল। মেয়েটিকে প্রথমে সে বাড়িতে নিয়ে যায়। খানিক পরে সেখানে আসে আকাশ, প্রবীণ ও সুপ্রিয়। তারা মেয়েটিকে কোনও ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে সুপ্রিয়ের গাড়িতে লোয়ার চেলিডাঙায় আকাশের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেই রাখা হয় তাকে। ওই ছাত্রীর ফোন থেকে তার বাবার কাছে মুক্তিপণ চেয়ে যে এসএমএস করা হয়, সেটি ঝাড়খণ্ডের চিরকুণ্ডায় গিয়ে করেছিল আকাশ ও প্রবীণ। ফোনের টাওয়ারের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্ত করতে তারা চিরকুণ্ডায় যায়, ধারণা পুলিশের।
তদন্তকারীদের দাবি, মুক্তিপণ চাওয়ার বিষয়টি মেয়েটির পরিবার পুলিশকে জানিয়েছেন, তা কোনও ভাবে অপহরণকারীরা বুঝে গিয়েছিল। এর পরেই তারা বাঁ হাতের শিরা কেটে ও শ্বাসরোধ করে খুন করে মেয়েটিকে। তার পরে সুপ্রিয়ের গাড়িতে করে দেহটি তারা আপকার গার্ডেনে ফেলে রেখে যায় বলে জেনেছে পুলিশ। সুপ্রিয়ের বাড়িও আপকার গার্ডেন এলাকাতেই।
পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করলেও এ দিন দুপুরে পুলিশ লাইনের কাছে জিটি রোড অবরোধ করেন মেয়েটির আত্মীয়-পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, মুক্তিপণের এসএমএস আসার কথা জানানোর পরেই পুলিশ তৎপর হলে মেয়ে হয়তো বাঁচত। মুক্তিপণের বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে, তা অপহরণকারীরা আঁচ করল কী ভাবে, সে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। এডিসিপি (সেন্ট্রাল) অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশের তদন্তে কোনও গাফিলতি হয়নি।’’ অবরোধের জেরে যানজট হয়। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy