Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
durgapur

মহিলাদের বাড়তি রোজগারে পথ দেখাচ্ছে গাঁদা ফুল

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত তৎকালীন পূর্ববঙ্গ থেকে আসা মানুষজন এখানে বসতি গড়ে তুলেছেন। শীতে প্রতি বছর গাঁদা ফুলের চাষ করে থাকেন অনেকে। তাঁরা জানালেন, এ বার শীতে টানা ঠান্ডা থাকায় গাঁদার ফুলের চাষ ভালই হয়েছে। বেড়েছে রোজগারও। তার উপর শিবরাত্রি উপলক্ষে গাঁদা ফুলের মালার চাহিদা তো থাকেই। চাহিদা মেটাতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত টানা মালা গাঁথতে হয়েছে বলে জানান সোমা মণ্ডল, সুস্মিতা দাস’রা।

গাঁদা ফুলের মালা গাঁথছেন মহিলারা। দামোদরে মানাচরে ছোটমানার পূর্বপাড়ায়। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

গাঁদা ফুলের মালা গাঁথছেন মহিলারা। দামোদরে মানাচরে ছোটমানার পূর্বপাড়ায়। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:১৩
Share: Save:

কারও স্বামী কাঠ চেরাইয়ের কাজ করেন। কেউ আবার দিনমজুরি বা মাছ ধরে সংসার চালান। কিন্তু তাতে পরিবারের অভাব যে মেটে তা নয়। তাই অনেক ক্ষেত্রে সংসারের হাল ধরতেই হোক বা স্বামীদের সাহায্য করতে, এগিয়ে আসতে দেখা যায় বাড়ির মহিলাদেরও। যেমনটা বছরভর করে আসছেন দুর্গাপুর শহর থেকে কিছুটা দূরের এলাকা দামোদর নদের ধারের মানা চরের মহিলারা।

মানা চরের অধিকাংশ ঘরের মহিলা বছরভর গাঁদার মালা তৈরি করেই রোজগার করেন। তবে বছরের অন্য সময়ের তুলনায় শিবরাত্রির মরসুমে গাঁদার মালার চাহিদা বাড়ে বলে জানালেন সঙ্গীতা মণ্ডল, মালতি হালদাররা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত তৎকালীন পূর্ববঙ্গ থেকে আসা মানুষজন এখানে বসতি গড়ে তুলেছেন। শীতে প্রতি বছর গাঁদা ফুলের চাষ করে থাকেন অনেকে। তাঁরা জানালেন, এ বার শীতে টানা ঠান্ডা থাকায় গাঁদার ফুলের চাষ ভালই হয়েছে। বেড়েছে রোজগারও। তার উপর শিবরাত্রি উপলক্ষে গাঁদা ফুলের মালার চাহিদা তো থাকেই। চাহিদা মেটাতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত টানা মালা গাঁথতে হয়েছে বলে জানান সোমা মণ্ডল, সুস্মিতা দাস’রা।

এলাকার মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গাঁদা ফুল চাষিরা ভোরবেলায় খেত থেকে ঝুড়ি ভর্তি ফুল ও সঙ্গে সুচ-সুতো পৌঁছে দেন এই মহিলাদের কাছে। সংসারের কাজ শেষ হলে দুপুরে খাওয়ার পরে শাশুড়ি, বৌমা, জা, ননদ, মেয়ে-সকলেই মালা গাঁথতে বসে যান। পাড়ার মহিলারা একজোট হয়ে কখনও কখনও মালা গাঁথার কাজ করেন। পল্লিশ্রী কলোনি, পূর্বপাড়া, বড়িশালপাড়া, মাঝেরমানা-সহ সংলগ্ন এলাকায় শ’দুয়েক পরিবারের মহিলারা মালা তৈরির কাজ করে থাকেন।

প্রায় দু’ফুট লম্বা ২০টি মালা নিয়ে হয় এক গোছা। এক গোছা মালা তৈরি করতে পারলে এক জন ১০ টাকা মজুরি পান। সংসারের কাজ শেষে অবসর সময়ে কাজ করেই এক এক জন ১০-১৫ গোছা তৈরি করতে পারেন। আরও বেশি সময় দিলে কেউ কেউ গড়ে ২০গোছা পর্যন্ত পর্যন্ত মালা গাঁথতে পারেন। সে হিসেব ধরলে দিনে দু’শো টাকা পর্যন্ত রোজগার হতে পারে। সন্ধ্যা ৭টার পরে চাষিরা ফের মালাগুলি সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তাঁদের কাছ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা মালা নেন। তাঁরা মালাগুলি দুর্গাপুর স্টেশন বাজারের নন্দন মার্কেট থেকে চলে যায় বিভিন্ন বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানালেন, অণ্ডাল, রানিগঞ্জ, আসানসোল, চিত্তরঞ্জন ছাড়া, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া-সহ নানা জায়গায় মালা সরবরাহ করা হয় এখান থেকেই।

মালা তৈরির কাজে যুক্ত মহিলারা জানালেন, এই সময় সারাদিন কাজ করে তাঁদের কেউ কেউ গড়ে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে পেরেছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘শীতের মরসুমে রোজগার ভালই হয়। তবে শিবরাত্রির দিনে সেই তুলনায় অনেক বেশি মালা গাঁথার বরাত পাই। তা ছাড়া, বাড়ির কাজ সামলে মালা গেঁথে যদি একটু বেশি রোজগার হয় তা হলে ক্ষতি কি?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Marigold
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy