—প্রতীকী চিত্র।
পায়রা চুরির অভিযোগে নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম বিশ্বজিৎ দাস (১৬)। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাড়িতে পায়রা পোষার শখ ছিল বিশ্বজিতের। পোষা পায়রা উড়ে পাশের গ্রামে চলে গিয়েছিল। শুক্রবার দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে দু’টি পায়রা খুঁজতে বেরোয় বিশ্বজিৎ। তার মধ্যে একটিকে পেয়েও যায়। অভিযোগ, সেটি ব্যাগে ঢুকিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ওই পড়ুয়ার রাস্তা আগলে দাঁড়ান কয়েক জন। পায়রা চোর সন্দেহে তাকে আটকে রাখা হয়। বিশ্বজিতের দুই বন্ধু ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। অন্য দিকে, বিশ্বজিতের পরিবার সারা দিন খুঁজেও তাকে পায়নি। শেষমেশ শনিবার সকালে গ্রামের একটি মাঠে ওই কিশোরের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। তার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়েছে। তাকে কেতুগ্রাম ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যে ছাত্রের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কেতুগ্রামের পাণ্ডুগ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ পাণ্ডুগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। বাবা বিকাশ দাস দিনমজুরির কাজ করেন। সকালে মাসুন্দি গ্রামের কাছে মাঠ থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, পায়রা চুরির সন্দেহে মাসুন্দি গ্রামের কয়েক জন বাসিন্দা ওই ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন। তার পর দেহ মাঠে ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছে। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ আটক বা গ্রেফতার হননি। মৃতের বাবা জানিয়েছেন, তাঁরা থানায় খুনের অভিযোগ করছেন।
বিশ্বজিতের বাড়িতে বেশ কয়েকটি পায়রা আছে। ছাত্রের পরিবারের লোকজন জানান, শুক্রবার বিকালে বিশ্বজিৎ তার দু’টি পায়রা দেখতে পাচ্ছিল না। তাই দুই বন্ধু বাবুসোনা দাস এবং শুভ দাসকে নিয়ে পায়রার খোঁজে বেরোয়। সন্ধ্যায় পাণ্ডুগ্রামের পাশে মাসুন্দি গ্রামে যায় তারা। সেখানে গিয়ে একটি বাড়ির চালের উপর একটি পায়রা বসে থাকতে দেখে তাকে ধরার চেষ্টা করে বিশ্বজিৎ ও তার দুই বন্ধু। পায়রা ধরার জন্য মশারির জালও নিয়ে গিয়েছিল তারা। মৃতের বাবা বলেন, ‘‘ছেলেকে মারধর খুন করেছে কয়েক জন। ওর বন্ধু শুভ কোনও রকমে পালিয়ে এসে গ্রামে খবর দেয় যে ওদের দু’জনকে আটকে মারধর করা হচ্ছে। বাবুসোনার বাড়ি থেকে লোকজন গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনে। কিন্তু আমার ছেলেকে কোথাও দেখতে পাইনি।’’ পুত্রহারা বাবা জানান, প্রথমে ভেবেছিলেন ভয় পেয়ে হয়তো কোথাও লুকিয়ে রয়েছে ছেলে। পরে ফিরে আসবে। কিন্তু দেরি হচ্ছে দেখে তাঁরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। অবশেষে সকালে মাসুন্দি গ্রামের কাছে একটি মাঠে ছেলের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। তিনি আরও জানিয়েছেন, ছেলের পরলৌকিক ক্রিয়া শেষ করে থানায় অভিযোগ জানাবেন।
এসডিপিও কাটোয়া কৌশিক বসাক বলেন, ‘‘শনিবার ময়নাতদন্ত সম্ভব হয়নি। রবিবার সকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত হবে। তার পর জানা যাবে, কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে।’’ তিনি জানান, আঘাত থেকে নাকি অন্য কোনও কারণে মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেটা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy