আসানসোল পুরসভার সামনে জটলা বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
বিপিএল তালিকাভুক্তদের বাড়ি দেওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা নিচ্ছে আসানসোল পুরসভা— বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোল-সহ আশপাশের এলাকায় এমন রটে যেতে কয়েক হাজার বাসিন্দা পুরসভা চত্বরে চলে আসেন! কিন্তু পুরসভা জানায়, আবেদনপত্র জমা নেওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি! এর পরেই, তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাসিন্দারা। তৈরি হয় বিশৃঙ্খলাও। পরে, পুরসভা, ‘ড্রপবক্স’-এ আবেদনপত্র ফেলে দেওয়ার কথা জানালে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, চক্রান্ত করে এমন বিভ্রান্তিকর প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু কে বা কারা, এই ‘বিভ্রান্তমূলক’ প্রচার চালিয়েছিল, সে বিষয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি পুরসভা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে পুরসভার গেট খোলার আগে থেকেই বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা ভিড় জমাতে শুরু করেন। তাঁরা নিজেদের বিপিএল তালিকাভুক্ত ও গৃহহীন দাবি করে পুরসভার কাছে আবাসনের জন্য আবেদনপত্র জমা করতে এসেছেন বলে জানান। ১০টায় গেট খুলতেই হুড়মুড়িয়ে সকলে ঢুকে পড়েন পুরসভা চত্বরে।
কিন্তু পুরসভার কর্মীরা কোনও আবেদনপত্র জমা নেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁদের কয়েক জন জানান, এ বিষয়ে পুরসভার কোনও নির্দেশ তাঁরা পাননি। এর পরেই, উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তানিজা খাতুন নামে এক জন দাবি করেন, “বুধবার অনেকেই পুরসভায় এসে বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা করেছেন। কিন্তু আজ আমাদের আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে না।” রেলপাড়ের শাহনাজ বিবি বলেন, “রেলের পরিত্যক্ত আবাসনে থাকি। রেল সেগুলি ভেঙে দেবে। তাই বাড়ি দরকার আমাদের।” কিন্তু আবেদনপত্র যে জমা নেওয়া হচ্ছে, এ কথা তাঁরা কোথা থেকে শুনলেন? শাহনাজ বলেন, “পাড়ায় শুনলাম!” কেউই সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে নির্দিষ্ট করে কার থেকে এমন কথা শুনেছেন, তাবলতে পারেননি।
এ দিকে, পুরসভার তরফে একটি ‘ড্রপবক্স’ বার করে আবেদনপত্রগুলি তাতে ফেলে যাওয়ার জন্য বাসিন্দাদের কাছে অনুরোধ জানায়। তাতে পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু তার পরেও, বাসিন্দাদের অনেকেই দাবি করেন, তাঁরা পুরসভায় আবেদনপত্র জমা দিয়ে ‘রিসিভড কপি’ পেতে চান। যদিও সে দাবিতে আমল দেয়নি পুরসভা।
কিন্তু কী করে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল? পুরসভার কাউন্সিলর তথা অন্যতম ‘ডেপুটি মেয়র’ ওয়াসিমূল হকের দাবি, “বিপিএল তালিকাভুক্তদের বাড়ি দেওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কোনও বিজ্ঞপ্তি আমরা দিইনি। বাসিন্দারা যে প্রচারের কথা বলছেন, তা বিভ্রান্তিকর ও ভুয়ো।” কিন্তু কারা এমনটা করল? ওয়াসিমূলের দাবি, “খোঁজ চলছে। পুরসভাকে বদনাম করতেই এটা চক্রান্ত করা হয়েছে।”
তবে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার কয়েক জন ব্যক্তি সাদা কাগজে এমন আবেদনপত্র লিখে পুরসভার ‘রিসিভিং সেন্টারে’ জমা দিয়ে গিয়েছেন। তবে জমা নেওয়ার সময়ে আসানসোল পুরসভার কর্মীরা পড়ে দেখেননি, সেগুলি কীসের আবেদনপত্র! পুরসভা জানিয়েছে, এই মুহূর্তে পুরসভার হাতে ৬০০টি বিপিএল আবাসন আছে। বহু দিন আগে, যাঁরা বিপিএল আবাসন পাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়ে রেখেছেন, এই বাড়িগুলি তাঁদের দেওয়া হবে। পরে, আরও কিছু বাড়ি তৈরি করা হবে। তার বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট পুরসভায় আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি করা হবে।
পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন মেয়র বিধান উপাধ্যায়।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy