এই দোকানেই ঘটনা। আসানসোলের আশ্রম মোড়ে। নিজস্ব চিত্র
তিন জনের একটি দল গয়নার দোকানে ঢোকে। দলটিকে দেখে প্রাথমিক ভাবে তাদের ক্রেতা ভেবেছিলেন দোকান মালিক। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভুল ভাঙে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ওই দলটি দোকানে লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ। বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ আসানসোল দক্ষিণ থানার আশ্রম মোড়ের ঘটনা।
দোকান মালিক মুরারিমোহন আগরওয়াল পুলিশকে জানান, ওই সময়ে দোকানে তিনি এবং কয়েকজন কর্মী ছিলেন। দোকান বন্ধের তোড়জোড় করা হচ্ছিল তখন। মুরারিমোহনবাবু জানান, আচমকা তিন জনের একটি দল দোকানে ঢোকে। দু’জনের মাথায় হেলমেট ছিল। তবে অন্য এক জনের মুখ খোলা ছিল। দোকান মালিক বলেন, ‘‘ক্রেতা ভেবে ওই দলটিকে বলি, পরে আসতে হবে। কিন্তু তখনই দু’জন কোমর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বার করে আমার ও দোকানের রক্ষীর দিকে তাক করে।’’ এর পরে মুরারিমোহনবাবু এবং তাঁর দোকানের কর্মীদের কাছে হিন্দিতে ওই দলটি জানতে চায়, ‘ভল্ট’ ও ‘শো-কেস’ কোথায়। তা দেখিয়ে দেওয়া হলে গয়না এবং টাকার বাক্স থেকে নগদ লুট করে দলটি। দোকান থেকে বেরনোর সময়ে ‘সিসিটিভি( (ক্লোজ়ড সার্কিট) ক্যামেরার হার্ড-ডিস্ক খুলে নেয় দলটির এক জন। পুলিশ জানায়, ৯টার মধ্যে ‘অপারেশন’ শেষ করে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইকে চড়ে চম্পটদেয় দলটি।
বৃহস্পতির ঘটনার তদন্ত শুরু করে কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর। পুলিশের কাছে দোকান মালিক দাবি করেছেন, যার মুখ খোলা ছিল, সেই ব্যক্তি দু’দিন আগে দোকানে গয়না কিনতে এসেছিল। গোয়েন্দারা মনে করছেন, দু’দিন আগে ওই দুষ্কৃতীরা গোটা এলাকাটি ভাল করে ঘুরে দেখে গিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, আশপাশে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ় দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ঝাড়খণ্ড বা বিহারের ওই দুষ্কৃতীরা আশ্রম মোড়ের নজরুল সরণি ধরে দোমোহানি হয়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে ওঠে। পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন বলেন, ‘‘কিছু সূত্র মিলেছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, পাঁচ জনের দুষ্কৃতী দল এসেছিল।’’
জেলায় গয়নার দোকানে লুটপাট অবশ্য নতুন নয়। পুলিশ জানায়, বছর কয়েক আগে দুর্গাপুর ও আসানসোলের স্বর্ণঋণ সংস্থা ও একটি সোনার দোকানের লুটপাটের ঘটনায় জড়িত দলটি বিহারের পুর্ণিয়া থেকে এসেছিল। পরে পটনা ও মুজফফরপুর-সহ আরও কয়েকটি এলাকা থেকে ওই দলের লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিকে, ঘটনার খবর চাউর হতেই আশপাশের দোকান মালিক, কর্মী এবং পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। ভরসন্ধ্যায় জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বস্ত্র ব্যবসায়ী বিমল মেহারিয়া বলেন, ‘‘খুবই আতঙ্কে আছি।’’ আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শচীন রায় বলেন, ‘‘আগে কখনও এমনটা ঘটেনি। ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন। চেম্বারের বৈঠক ডেকে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।’’ তবে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে পুলিশ কমিশনারের দাবি, ‘‘দ্রুত দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy