কতটা পেঁয়াজ দেওয়া যাবে, সংশয়ে পড়ছেন ফাস্টফুড বিক্রেতারা। নিজস্ব চিত্র
যেটুকু না দিলে নয়, কেউ দিচ্ছেন ততটুকুই। কেউ আবার স্থায়ী খরিদ্দার হারানোর ভয়ে পরিমাণ রাখছেন আগের মতোই। ‘এই ক্ষতি সাময়িক’, প্রবোধ দিচ্ছেন নিজেকে। পেঁয়াজের দাম চড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে এমন নানা পন্থাই নিচ্ছেন ফাস্টফুড বিক্রেতারা।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার, ডিএসপি টাউনশিপের বিভিন্ন খাবারের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, চাউমিন তৈরির সময়ে পেঁয়াজের পরিবর্তে গাজর, বাঁধাকপি দেওয়া হচ্ছে বেশি পরিমাণে। চিলি চিকেনে পেঁয়াজের অভাব ঢাকতে বেড়েছে ক্যাপসিক্যামের পরিমাণ। এগরোলে পেঁয়াজ কমিয়ে শসা-গাজর দিচ্ছেন অনেকে। সিটি সেন্টারের অবনীন্দ্রবীথি এলাকায় রাস্তার ধারে একটি ফাস্টফুডের দোকানের মালিক সন্তু পাণ্ডা বলেন, ‘‘যেটুকু না হলে নয়, সেটুকু পেঁয়াজই দিতে পারছি। ক্রেতারা আগের মতো পেঁয়াজ দিতে বললে বিড়ম্বনায় পড়ে যাচ্ছি।’’
ফাস্টফুডের দোকানের কর্মী ভূপেন সরকার অবশ্য দাবি করেন, মানের সঙ্গে আপস না করে তাঁরা খাবারে একই পরিমাণ পেঁয়াজ দিচ্ছেন। ক্রেতা মুখ ফেরাতে পারেন, এই আশঙ্কায় পেঁয়াজের পরিমাণ কমাতে পারছেন না বলে জানান আরও দু’-এক জন বিক্রেতা। তবে তাঁরা জানান, কেউ বেশি পেঁয়াজ দিতে বললে বাড়তি টাকা চেয়ে নেওয়া হচ্ছে।
সিটি সেন্টার এলাকায় আমিষ ও নিরামিষ, দু’ধরনের ফুচকার স্টল রয়েছে। নিরামিষ ফুচকার দোকানে পেঁয়াজের ব্যবহার নেই। তবে বাকি স্টলগুলিতে পেঁয়াজ অন্যতম প্রধান উপকরণ। সেগুলিতে ঢুঁ মেরে দেখা যায়, পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে যৎসামান্য। বাড়তি ধনেপাতা, লেবু, তেঁতুলজল দিয়ে ব্যাপারটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন বিক্রেতারা।
বেনিচিতি বাজার এলাকায় নানা তেলেভাজার দোকানে সাধারণত আলুর চপ, ডিমের চপ, চিংড়ির চপ, মোচার চপ, সোয়াবিনের চপ, মাংসের চপ, কাটলেট ইত্যাদির সঙ্গে প্লেটে কাঁচা পেঁয়াজের টুকরো তুলে দেন বিক্রেতারা। কিন্তু আপাতত বাদ পড়েছে সেই টুকরো। পরিস্থিতি বুঝে ক্রেতারাও তা মেনে নিচ্ছেন। চপ বিক্রেতা সন্ধ্যা মণ্ডল বলেন, ‘‘গরম চপের সঙ্গে পেঁয়াজ, শসা, গাজরের কুচি তুলে দিলে খরিদ্দারেরা খুশি হন। কিন্তু পেঁয়াজের যা দাম, তা করে উঠতে পারছি না।’’ শসা-গাজরের টুকরো দিয়ে মাংসের চপ খেতে-খেতে স্নেহা রায়, রামকৃষ্ণ মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘পেঁয়াজ ছাড়া এ সব খেয়ে মন ভরছে না।’’ অনেক দোকানে পেঁয়াজি বিক্রি আপাতত বন্ধই রাখা হয়েছে। কিছু দোকান বিক্রি করলেও দাম বাড়ানো হয়েছে।
ট্রাঙ্ক রোড মোড়ে মাংসের ঘুগনির দোকানে প্লেটে ঘুগনির উপরে পেঁয়াজ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নামমাত্র। দোকানের কর্মীরা জানান, মাংসের দাম বেড়েছে। কিন্তু ঘুগনির দাম বাড়েনি। এখন পেঁয়াজের যা দাম, তাতে এর বেশি পেঁয়াজ দিতে হলে ব্যবসা লাঠে উঠবে। তাই আপাতত এই বন্দোবস্ত।
দামের সঙ্গে লড়াই করতে এমন বিভিন্ন উপায়কেই এখন অবলম্বন করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy