প্রতীকী ছবি।
নির্মাণকাজ শেষের তিন বছর পরে, পানাগড়ের বেসরকারি কারখানায় সার উৎপাদন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দেখে দিয়েছে। মাস দু’য়েকের মধ্যেই ওই কারখানায় বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর কথা, জানা গিয়েছে কারখানা সূত্রে। নির্মাণকাজ শেষ হলেও গ্যাসের অভাবে উৎপাদন শুরু হয়নি। আজ, রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাভি-দুর্গাপুর প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন উদ্বোধন করার পরেই কারখানায় গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে। এ দিকে, কারখানার ‘চালু’র কৃতিত্ব নিয়ে শুরু হয়েছে বিজেপি, সিপিএম, তৃণমূলের তরজা।
শুক্রবারই দুর্গাপুরে এসে কেন্দ্রীয় ইস্পাত, পেট্রলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দাবি করেছিলেন, ‘‘এই কারখানাটি চালু হলে, রাজ্যে ইউরিয়ার যে সঙ্কট রয়েছে, তা আর একেবারেই থাকবে না।’’ সঙ্গে তিনি এ-ও জানান, পশ্চিমবঙ্গে ১.৫ বিলিয়ন টন ইউরিয়ার চাহিদা রয়েছে। পানাগড়ের কারখানাটি ১.৩ বিলিয়ন টন ইউরিয়া উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক কর্তা জানান, এর ফলে প্রায় ন’শো জনের কর্মসংস্থান হতে চলেছে।
কাঁকসা, গলসি ১ ও আউশগ্রাম ২-এর প্রায় ১,৫০০ একর জমি নিয়ে ২০০৯-১০ সালে রাজ্যের তৎকালীন বাম সরকার পানাগড়ে শিল্পতালুক তৈরি করেছিল। প্রায় ৫০০ একর জমিতে ২০১০-এ বেসরকারি সার কারখানার নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৭-য়। ঠিক হয়, আসানসোল-রানিগঞ্জ অঞ্চলে একটি বেসরকারি গোষ্ঠী যে ‘কোল বেড মিথেন’ গ্যাস উৎপাদন করবে, তা ব্যবহার করেই উৎপাদন শুরু হবে কারখানায়। কিন্তু পর্যাপ্ত গ্যাস না মেলায় বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করা যায়নি।
২০১৮-র ২৯ নভেম্বর দুর্গাপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিকসভায় সার কারখানার এক আধিকারিক জানান, ২০১৭-য় পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হয় কারখানা। কিন্তু পরে, গ্যাসের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়। প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় বাণিজ্যিক উৎপাদন চালু করা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী শিল্প সচিবকে দ্রুত বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন। কিন্তু তাতেও ফল কিছু হয়নি বলে অভিযোগসিপিএম, বিজেপির।
আজ, রবিবার হলদিয়া থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইনের উদ্বোধন করবেন। কারখানায় এক অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘এত দিন ধরে একটি কারখানা তৈরি হয়েও বন্ধ হয়ে পড়েছিল। রাজ্য সরকার চুপ করে বসেছিল। প্রধানমন্ত্রী গ্যাসের পাইপলাইন উদ্বোধন করার সঙ্গেই কারখানায় বাণিজ্যিক উৎপাদন চালুর আর কোনও বাধা রইল না।’’ কাঁকসার সিপিএম নেতা তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলের অবশ্য দাবি, ‘‘শিল্পতালুক তৈরি, কারখানার নির্মাণকাজ শুরু, সবই হয়েছিল বাম আমলে। এখানকার মানুষ সব জানেন। এখন জোর করে কেউ কৃতিত্ব নিতে এলে বলার কিছু নেই!’’ যদিও তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সীর দাবি, ‘‘শিল্পতালুকের পরিকাঠামো উন্নয়নের যাবতীয় কাজ হয়েছে গত দশ বছরে। সার কারখানার নির্মাণকাজও শেষ হয়েছে ওই সময়েই। গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি রাজ্যের হাতে থাকলে বহু আগেই সার কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়ে যেত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy