আসানসোল-দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। —ফাইল চিত্র।
ভোটের ফল ঘোষণার দিন দশেকের মধ্যে এডিডিএ-র চেয়ারম্যান পদে বদলের পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে, ধারণা নানা পক্ষের। রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন ওই পদ থেকে সরানো হল, সে বিষয়ে দলের জেলা নেতৃত্ব কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তবে রানিগঞ্জে আশানুরূপ ফল না হওয়া এবং আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায় দলের পিছিয়ে থাকা এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে বলে দলের একাংশের অনুমান।
লোকসভা ভোটের ফলে রানিগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। তবে তার সৌজন্যে রয়েছে এই কেন্দ্রের মধ্যে থাকা অন্ডাল ব্লক এলাকা। রানিগঞ্জ শহরের ১১টি ওয়ার্ড ও অন্ডাল ব্লক নিয়ে গঠিত এই বিধানসভা এলাকা। এ বার ভোটে ওই ১১টি ওয়ার্ডের ৮টিতে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। মেয়র পারিষদ থেকে বরো চেয়ারম্যান, অনেকের ওয়ার্ডেই পিছিয়ে দল। এগিয়ে মাত্র দু’টি ওয়ার্ডে। একটিতে বিজেপির সঙ্গে সমান ভোট মিলেছে। সব মিলিয়ে, রানিগঞ্জ পুর এলাকায় প্রায় ৬,৫০৩ ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। তবে অন্ডালে গিয়ে দশ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে থাকার সুবাদে সার্বিক ভাবে রানিগঞ্জ বিধানসভায় ৪,৪৫২ ভোটে এগিয়ে থেকেছে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রের খবর, রানিগঞ্জ শহরে দলের এই ভরাডুবি মানতে পারেননি দলীয় নেতৃত্ব। ফল ঘোষণার পরেই রাজ্য নেতৃত্বের তরফে বুথভিত্তিক ফলের রিপোর্ট চাওয়া হয়। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই ফল পর্যালোচনা করেন। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, ভোট ঘোষণার পরেই রানিগঞ্জের প্রতি বাড়তি নজর ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের। আসানসোল কেন্দ্রে রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপসের ভগ্নিপতি সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পরে বিশেষ নজর ছিল।
দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশের দাবি, প্রচার-পর্ব থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত সব কিছু খুঁটিয়ে বিশ্লেষণের পরে দলীয় নেতৃত্বের মনে হয়েছে, রানিগঞ্জে প্রার্থীকে জেতাতে যতটা সক্রিয়তা প্রয়োজন ছিল, ততটা দেখা যায়নি। বিশেষ করে রানিগঞ্জের ব্যবসায়ী মহলে গত বিধানসভা ভোটের পরে তৃণমূলের যে প্রভাব ছিল, লোকসভা ভোটের সময়ে তা দেখা যায়নি। তাপস অতীতে আসানসোল দক্ষিণ এলাকার বিধায়ক ছিলেন। সেখানেও দল এ বার বিজেপির থেকে পিছিয়ে থেকেছে। নেতৃত্বের এ সব নিয়ে উষ্মার কারণেই এডিডিএ-র চেয়ারম্যান পদে বদল বলে অনুমান জেলার তৃণমূল নেতাদের অনেকের। এক নেতার দাবি, ‘‘নানা সূত্রের রিপোর্টে রানিগঞ্জে খারাপ ফলের আগাম আভাস পেয়েছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব।’’
তবে এডিডিএ-র পদ থেকে তাপসের অপসারণ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘এ সব সিদ্ধান্ত দলনেত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নিজে নেন। আমার কিছু বলার নেই।’’ তাপসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি বাম আমলে বিধায়ক হয়েছিলাম, পাঁচ বারের কাউন্সিলর, আসানসোলের মেয়র ছিলাম। সারা জীবন রাজনীতি করেছি আসানসোলে। আমার কাছে রানিগঞ্জ ছিল কঠিন ঠাঁই। তা-ও গ্রামাঞ্চলের কর্মীদের চেষ্টায় আসানসোলের প্রভাবশালী নেতাদের তুলনায় ভাল ফল করেছি বলে মনে করি। আসানসোল দক্ষিণ ছেড়ে এসেছি ১০ বছর আগে। তাই যাঁরা এ সব বলছেন, মনে হয় সঠিক পর্যালোচনা করেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy