রাজু ঝা। ফাইল চিত্র।
কয়লা কারবারি রাজু ঝাকে খুনের ঘটনায় ঝাড়খণ্ডের কোনও ‘গ্যাং’ জড়িত বলে পুলিশের অনুমান। বিভিন্ন এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত পুলিশ। ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ সংশোধনাগারে থাকা উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার আমন সিংহ এই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আমন জেলে বসেই বিভিন্ন জায়গায় অপারেশন সারে। রাজুকে খুনে জড়িত সুপারি কিলাররা হাজারিবাগ সংশোধনাগারে গিয়ে থাকতে পারে বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। কারা কারা হাজারিবাগের সংশোধনাগারে আমনের সঙ্গে রাজু খুনের আগে দেখা করেছে সে সম্পর্কে তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সে কারণে হাজারিবাগ সংশোধনাগারের প্রধান প্রবেশপথ ও তার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা। সংশোধনাগারের বাইরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়ার জন্য বর্ধমানের মুখ্য বিচার ব্ভাগীয় ম্যাজিস্টেরের আদালতে আবেদন করা হয়েছে তদন্তকারীদের পক্ষে। সেই আবেদন মঞ্জুরও করেছেন বিচারক। হাজারিবাগ সংশোধনাগারের সুপারকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহে সব ধরনের সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাজুকে খুনে তিন জন দুষ্কৃতী জড়িত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তিন জনকেই রাজুর গাড়ির সামনে দেখা গিয়েছে। গাড়িতে রাজুর সঙ্গী ব্রতীন মুখোপাধ্যায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন। তাঁর বাঁ হাতে গুলি লাগে। রাজুর উপর হামলা হচ্ছে দেখে তিনি তাঁকে বাঁচাতে আসেন। সেই সময় দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন ব্রতীন। হাতে গুলি লাগলে প্রাণভয়ে তিনি পালিয়ে যান। ঘটনার সময় রাজুর গাড়িতে একটি ট্রলিব্যাগ ও ব্রিফকেস ছিল। দু’টিই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ট্রলিব্যাগে জামা–কাপড় ছাড়াও ১ লক্ষ ৫০ হাজার ২০ টাকা ও কিছু কাগজপত্র ছিল। ব্রিফকেসে ছিল ৯৫ হাজার ১৬৫ টাকা ও একটি মদের বোতল। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ঘটনার মাসখানেক আগে শক্তিগড় থানায় সিসি ক্যামেরা মনিটরিং ইউনিট খোলা হয়। যদিও থানার সিসি ক্যামেরা থেকে তেমন কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি বলে তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে, ঘটনাস্থলের কাছে একটি রেস্তেরাঁর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ঘটনার সময়ের কিছু ভিডিয়ো মিলেছে। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুষ্কৃতীরা যে নীল গাড়িতে চেপে এসেছিল তার মধ্যে থেকে ১২টি অব্যবহৃত কার্তুজ মিলেছে। এ ছাড়াও গাড়ির ভিতর থেকে বিয়ারের বোতল ও স্কার্ফ পাওয়া গিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ন’টি ব্যবহৃত কার্তুজ এবং রাজুর দু’টি আইফোনও তদন্তকারীরা বাজেয়াপ্ত করেছেন। সেখান থেকে আরও কিছু তথ্য মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের মতে, রাজুকে খুনের ছক কষা হয়েছে দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনায়। রাজুকে অনুসরণ, তাঁকে খুনের জায়গা এবং পুলিশ ও সিসি ক্যামেরাকে কী ভাবে এড়ানো যাবে— প্রতিটি পদক্ষেপে হত্যাকারীদের নিখুঁত পরিকল্পনার ছাপ খুঁজে পেয়েছে সিট। এই হত্যারহস্য সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন প্রত্যক্ষদর্শী শক্তিগড়ের ঝালমুড়ি বিক্রেতা আবুজিয়া শেখ। পুলিশ ওই ঝালমুড়ি বিক্রেতার মুখ থেকে গোটা ঘটনার বিবরণ শুনেছে ইতিমধ্যেই। আবুজিয়ার দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী আততায়ীদের স্কেচও আঁকানো হয়েছে। সেই স্কেচই হয়ে উঠতে পারে তুরুপের তাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy