নেতার বাড়ির সামনে বিজেপির পতাকা হাতে ধর্না কাটোয়ায়। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় ও ‘লকডাউন’-এর জেরে বিপাকে পড়া কর্মী-সমর্থকদের দলের রাজ্য দফতর থেকে ত্রাণসামগ্রী পাঠালেও তা তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি— এই অভিযোগে বিজেপির পতাকা হাতে দলের নেতার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখালেন কয়েকজন। বৃহস্পতিবার বিজেপির জেলা সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষের বাড়ির দরজায় ধর্নায় বসেন তাঁরা। পদ থেকে তাঁর অপসারণও দাবি করেন। কৃষ্ণবাবুর অবশ্য দাবি, স্বচ্ছ ভাবেই ত্রাণ বিলি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ কাটোয়ার কারবালাতলায় কৃষ্ণবাবুর বাড়ির সামনে জড়ো হন প্রায় পঞ্চাশ জন। তাঁরা কাটোয়ার মণ্ডলহাটে বিজেপির কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত বলে বিজেপি সূত্রের দাবি। দলের পতাকা হাতে জমায়েত করে তাঁরা এ দিন দাবি করেন, দলের রাজ্য দফতর থেকে ত্রাণের চাল ও ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাঁদের অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেই ত্রাণ পাননি বলে অভিযোগ। কৃষ্ণবাবুর পরিবারের তরফে জানানো হয়, তিনি বাড়িতে নেই। জেলা সভাপতির দেখা না পেয়ে বাড়ির সামনে দুপুর অবধি ধর্না চালিয়ে যান বিক্ষোভকারীরা।
পাপাই দেবনাথ নামে এক বিক্ষোভকারী দাবি করেন, ‘‘আমরা দলের সক্রিয় কর্মী। করোনার জন্য দীর্ঘদিন কর্মহীন রয়েছি। কিছু দিন আগে ঝড়েও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমাদের মতো কর্মীদের জন্যই দল ত্রাণ পাঠিয়েছে। কিন্তু জেলা সভাপতি তা দেননি। এর জবাব চাইতে এসেছি।’’ কাটোয়া ৪১ নম্বর জেলা পরিষদ এলাকায় দলের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘আমাদের জেলা সভাপতি তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাঁত করে দলের ক্ষতি করছেন। গরিব কর্মীদের ত্রাণ দিচ্ছেন না। তাঁর অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।’’
বিজেপি সূত্রের দাবি, কাটোয়ার মণ্ডলহাট, ইঁদারাপাড়া ও পানুহাটে দলের কিছু পুরনো কর্মীর সঙ্গে কৃষ্ণবাবুর অনুগামীদের নানা কারণে ‘মতান্তর’ চলছিল। আগেও কয়েকবার বিবাদ প্রকাশ্যে এসেছে। মাস চারেক আগে দলীয় বৈঠকে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনাও ঘটে। কৃষ্ণবাবু এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘আমি বাড়িতে নেই, দলীয় কর্মসূচিতে পূর্বস্থলী এসেছি। কারা আমার বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছেন, বলতে পারব না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মণ্ডল সভাপতিদের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভাবেই ত্রাণ দেওয়া হয়েছে কর্মীদের। কারও কোনও অভিযোগ থাকলে, প্রমাণ-সহ উচ্চ নেতৃত্বকে জানাক।’’
ঘটনা জেনে কাটোয়ার বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি যে একটি দুর্নীতিগ্রস্ত দল, ত্রাণ নিয়ে দলের কর্মীদের জেলা সভাপতির বাড়িতে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায় তা প্রমাণ হয়ে গেল।’’ বিজেপির পূর্ব বর্ধমানের কালনা-কাটোয়ার পর্যবেক্ষক সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কর্মীদের অভিযোগ থাকলে তা দলের অন্দরেই জানানো উচিত। পতাকা নিয়ে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখানো ঠিক নয়। কী ঘটেছে, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy