Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coal Mine

পুনর্বাসনের দাবি, সমস্যা প্রকল্প নিয়ে

ইসিএলের কালীপাহাড়ি কোলিয়ারির প্যাচ-বি প্রকল্পের কাজ শুরু করার তোড়জোড় চলছে। কোলিয়ারির দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় ১৪৪.৭ একর জমিতে এই ‘প্যাচ’ খোলা হবে।

এই সব এলাকায় উচ্ছেদ নিয়ে সমস্যা। কালীপাহাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

এই সব এলাকায় উচ্ছেদ নিয়ে সমস্যা। কালীপাহাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৩১
Share: Save:

দখলদারদের বাধায় আসানসোলের কালীপাহাড়ি খনির সম্প্রসারণ প্রকল্পে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এমনই অভিযোগ ইসিএল কর্তৃপক্ষের। ইসিএলের তরফে ইতিমধ্যেই আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে জায়গা ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে শুক্রবার পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এলাকায় থাকা বাসিন্দারা দাবি জানিয়েছেন, তাঁদের পুনর্বাসন দিতে হবে।

ইসিএলের কালীপাহাড়ি কোলিয়ারির প্যাচ-বি প্রকল্পের কাজ শুরু করার তোড়জোড় চলছে। কোলিয়ারির দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় ১৪৪.৭ একর জমিতে এই ‘প্যাচ’ খোলা হবে। এর মধ্যে ৬৫.২৪ একর ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি। ১২.৫৪ একর রাজ্য সরকারের জমি। বাকি ৬৬.২৯ একর ইসিএলের নিজস্ব জমি এবং পরিত্যক্ত আবাসন এলাকা। খনি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সংস্থার পরিত্যক্ত আবাসন ও নিজস্ব জমি দখল করেই কাঁচা, পাকা নির্মাণ তৈরি করে বসবাস করছেন অনেকেই। তাঁরা ইসিএলের বিদ্যুৎ এবং জলও ব্যবহার করেন। ওই বাসিন্দাদের সঙ্গে সংস্থার কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি।

কালীপাহাড়ি কোলিয়ারির ম্যানেজার দীপক পাণ্ডে বলেন, “বি প্যাচ নামে খোলামুখ খনি চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রস্তাবিত এলাকায় ‘বোরহোল’ তৈরি করে কয়লার স্তর কোথায়, কতটা, তা পর্যবেক্ষণের কাজ শুরু করতে হবে। চলতি মাসেই সে কাজ শুরু করার কথা। তাই দখলদারদের গত তিন মাস ধরে এলাকা ছেড়ে উঠে যাওয়ার নোটিস দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের অসহযোগিতায় সমস্যা হচ্ছে। তবে আশা করি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।” তাঁর দাবি, কোলিয়ারিকে বাঁচাতে ও ভূগর্ভস্থ মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারের জন্য প্যাচ খোলাটা খুবই জরুরি। এর ফলে, খনিকর্মীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকবে। উন্নতি হবে এলাকার অর্থনীতিরও।

খনি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬০-র দশকে বেসরকারি মালিকানায় তৈরি হয় কালীপাহাড়ি ভূগর্ভস্থ খনিটি। রাষ্ট্রায়ত্তকরণের পরে কোলিয়ারিটি ইসিএলের আওতাধীন হয়। ভূগর্ভে সঞ্চিত কয়লা শেষ হওয়ায় বছর চারেক আগে এই খনিটি থেকে কয়লা উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এর মাঝেই খনির পাশে ইসিএলের জমিতে প্যাচ এ এবং প্যাচ সি খোলামুখ খনি খোলা হয়। ওই দু’টি খনিরও কয়লার স্তর শেষের মুখে। তাই প্যাচ বি খোলামুখ খনি খোলার বিষয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। খনি কর্তৃপক্ষের হিসাবে, এখানে ভূগর্ভে প্রায় ১৪ লক্ষ টন কয়লা মজুত আছে। তা তুলতে প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগবে।

কিন্তু বাসিন্দারা কী চাইছেন? এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৭২টি পরিবার রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। ইসিএলের দাবি, এর মধ্যে ৪০টি পরিবার সংস্থার পরিত্যক্ত আবাসন দখল করে বসবাস করছে। বাকি ৩২টি পরিবার ইসিএলের জমিতে নির্মাণ তুলে বসবাস করছে। স্থানীয় বাসিন্দা ভূমিধর পাসোয়ান অবশ্য দাবি করেছেন, “চার দশক ধরে এখানে বসবাস করছি। উঠে যেতে বললেই, তাই ওঠা যাবে না। পুনর্বাসন না দিলে উঠব না।” কিন্তু ইসিএল যে দাবি করছে, তাদের জমি দখল করে এই বসবাস। তা শুনে পাশেই থাকা এক বাসিন্দার জবাব, “ও-সব জানি না। আমাদেরপুনর্বাসন চাই।”

এ দিকে, ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজেদের জমিতেই যেহেতু পরিবারগুলি বসবাস করছে, তাই পুনর্বাসন দেওয়া যাবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খনিকর্তা জানান, বাসিন্দাদের পরিবার পিছু ১০ হাজার টাকা সাহায্য করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে তাঁরা রাজি না হলে, আইনি পদক্ষেপ করা হবে।

খনির সম্প্রসারণ এবং সন্তোষজনক শর্তে উচ্ছেদ অভিযানে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন কোলিয়ারির তিনটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি, সিটু এবং এআইটিইউসি-র তিন নেতা যথাক্রমে বাদল মিশ্র, রামলক্ষ্মণ যাদব এবং উমেশ পাসোয়ানেরা। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটকেরও প্রতিক্রিয়া, “স্থানীয়দের প্রাথমিক প্রয়োজন মিটিয়ে যে কোনও খনি সম্প্রসারণ এবং শিল্প স্থাপনে আমরা সাংগঠনিক ভাবে পাশে আছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coal Mine ecl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy