কলেজে অবস্থান ছাত্রীদের। নিজস্ব চিত্র
‘মৃত্যু হলে মুক্তি পাব এখান থেকে!’— ষষ্ঠ সিমেস্টারের সমস্ত ছাত্রীর ‘ফি’-তে অর্ধেক ছাড়ের দাবিতে ছাত্রীদের আন্দোলনে কলেজেই সকাল ১১টা থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটকে পড়ার পরে সংবাদমাধ্যমের একাংশের সামনে বৃহস্পতিবার এমনই মন্তব্য করলেন দুর্গাপুর উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষা মধুমিতা জাজোদিয়া।
যদিও বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘নির্দিষ্ট দাবি নিয়ে ওখানে পড়ুয়ারা আন্দোলন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও বিশৃঙ্খলা হয়নি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটেছে।’’ গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পতাকা হাতে ওই কলেজের ছাত্রীদের একাংশ টানা আন্দোলন করছেন। এ দিন তাঁদের ঘেরাও-আন্দোলনের জেরে কলেজেই আটকে পড়েন মধুমিতাদেবী-সহ কয়েক জন শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে মধুমিতাদেবী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘এ ভাবে আটকে রাখা হচ্ছে কেন? আমি অসুস্থ। যদি কিছু হয়, কে দায় নেবে? মৃত্যু হলে এখান থেকে আমি মুক্তি পাব। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁরা আমার ছাত্রী নন। কোনও ভাবে ওঁরা প্ররোচিত হচ্ছেন।’’ যদিও কারা এই ‘প্ররোচনা’ দিচ্ছেন, সে সম্পর্কে কিছু বলেননি মধুমিতাদেবী। যদিও আন্দোলনকারী ছাত্রীদের তরফে ছাত্র সংসদের সম্পাদক পারমিতা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা টিএমসিপি-র নেতৃত্বে আন্দোলন করছি।’’ কলেজে বুধবার গিয়েছিলেন দুর্গাপুর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কলেজ অধ্যক্ষা ছা্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেননি। কলেজের পরিচালন সমিতির সঙ্গে কথা হয়েছে। সমস্যা মিটে গিয়েছে। ‘ফি’ কমানোর ব্যাপারে কথাবার্তা হবে। পরীক্ষা দেবেন ছাত্রীরা।’’ যদিও অধ্যক্ষা জানান, গত দু’দিন তিনি অসুস্থ থাকায় কলেজে যেতে পারেননি।
দেবব্রতবাবু ‘সমস্যা মেটা’র কথা বললেও, এ দিন ফের কেন আন্দোলন? পারমিতার দাবি, ‘‘অধ্যক্ষা জানিয়েছিলেন, যাঁদের আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ তাঁদের কথা বিবেচনা করা হবে। কিন্তু এ ভাবে ছাত্রীদের দু’ভাগ করা যাবে না বলে দাবি জানানো হয়েছিল। শেষমেশ, কলেজ কর্তৃপক্ষ সে দাবি মেনে নেন।’’ অধ্যক্ষা অবশ্য জানান, যে সব ছাত্রীর আর্থিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ, প্রয়োজনে তাঁদের ৫০ কেন ১০০ শতাংশই ‘ফি’ মকুব করা হবে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই সব ছাত্রীর ‘ফি’ মকুব করা সম্ভব নয়। ঘটনা জেনে সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘তৃণমূল শিক্ষা ব্যবস্থার এমন অবস্থা করেছে যে, এক জন অধ্যক্ষাকে নিজের মৃত্যকামনা করতে হচ্ছে।’’ দুর্গাপুরের সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারও কলেজের পরিস্থিতির জন্য তৃণমূলের ‘দাদাগিরি’র দিকেই আঙুল তুলেছেন। তবে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ দিনের ঘটনা নিন্দনীয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy