পূর্বস্থলীতে স্টেশন চত্বর সাফাই। নিজস্ব চিত্র
রাত পোহালেই প্রায় সাত মাস পরে, ট্রেনের চাকা গড়াবে। মঙ্গলবার বিভিন্ন স্টেশনে তাই চলল শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি। জেলা প্রশাসন ও রেলের কর্তারা বিভিন্ন স্টেশন ঘুরে দেখলেন এ দিন। সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও। যাত্রীর চাপ কমাতে আলোচনা করে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান আধিকারিকেরা।
প্রশাসন ও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি স্টেশনের বাইরে অযাচিত ভিড় কমাতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। অন্তত ৪৫ মিনিট আগে যাত্রীদের স্টেশনে পৌঁছাতে অনুরোধ করা হচ্ছে। বিনা মাস্কে ট্রেনে কোনও যাত্রীকে উঠতে দেবে না পুলিশ এবং আরপিএফ।
এ দিন দুপুর সওয়া ১টা নাগাদ বর্ধমান স্টেশনে আসেন পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তিনি বর্ধমান থানার পুলিশ, আরপিএফ এবং রেল পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। এর কিছু পরেই জেলাশাসক এনাউর রহমান, সিএমওএইচ প্রণব রায়েরা স্টেশনে পৌঁছন। স্টেশনের যে সব দরজা দিয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করবেন, তার পরিকাঠামোর ঘুরে দেখেন তাঁরা। স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যেখানে কাটোয়া লাইনের ট্রেন দাঁড়ায়, সেখানে অনেকটা খোলা জায়গা থাকায় নির্দিষ্ট গেট এড়িয়ে যাত্রীরা অন্য দিক দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন বলে মনে হয়েছে আধিকারিকদের। তাই স্টেশন থেকে চলমান সিঁড়ি পর্যন্ত জায়গা ঘিরে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত থেকেই স্টেশনের সামনের এলাকা পুলিশ আয়ত্তে নিচ্ছে। প্রতিটি দরজার সামনে পুলিশ, সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা থাকবেন। বর্ধমান স্টেশনের তিনটি জায়গায় ‘থার্মাল গান’ দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। স্টেশনের দু’টি জায়গায় ‘আইসোলেশন’ ঘর করা হচ্ছে। কারও কোনও উপসর্গ থাকলে তাঁকে প্রথমে ওই ঘরে পাঠিয়ে তার পরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, কাটোয়া, কালনা ও মেমারিতেও এই ব্যবস্থা থাকবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘জেলার প্রতিটি স্টেশনে রেলের আধিকারিকদের নিয়ে ওসি বা আইসি এবং বিডিওরা ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। প্রত্যেক স্টেশনে অ্যাম্বুল্যান্স রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান স্টেশনের বাইরে এক জন ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে জনা পঞ্চাশ পুলিশকর্মী হাজির থাকবেন।
পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “সব স্টেশনেই যৌথ পরিদর্শন হচ্ছে। থার্মাল চেকিং, আইসোলেশন ঘর ও প্রত্যেকে মাস্ক পরে ঢুকছেন কি না, দেখা হচ্ছে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।’’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনস্বাস্থ্য আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাত্রীদের অনুরোধ, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে ট্রেনে যাতায়াত করুন।’’
মেমারি থানা এলাকায় আটটি ও পূর্বস্থলী ২ ব্লকে পাঁচটি স্টেশন রয়েছে। বিডিও (পূর্বস্থলী ২) সৌমিক বাগচি বলেন, ‘‘প্রতিটি স্টেশনে থার্মাল পরীক্ষা, আইসোলেশন ঘর রাখা হচ্ছে।’’ বিভিন্ন স্টেশন লাগোয়া পুরসভা, পঞ্চায়েতের তরফে মাস্ক পরার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে। কাটোয়া, কালনা-সহ নানা স্টেশনে যাত্রীদের মাসিক কার্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি করার কাজ চলছে। এ দিন স্টেশন এলাকাগুলি সাফ করা, জীবাণুনাশক স্প্রে করার কাজ হয়। দূরত্ব-বিধি মানার জন্য গোল দাগ আঁকার কাজ চলে। কখন কোন ট্রেন ছাড়বে, এ দিনও জানতে না পারায় কাটোয়া স্টেশনে ক্ষোভ জানান কিছু যাত্রী। স্টেশন ম্যানেজার অরূপকুমার সরকারের বক্তব্য, ‘‘তখনও পর্যন্ত আধিকারিকদের সই করা ট্রেন চলাচলের সময়সূচি মেলেনি।’’ট্রেন চলাচলে যাত্রীরা স্বস্তিতে। খুশি রিকশা, টোটো, অটো চালকেরা। কিন্তু হকারেরা হতাশ। ট্রেনে ওঠা তো দূর, স্টেশন বা লাগোয়া এলাকায় স্টল খোলার অনুমতিও পাননি তাঁরা। তাই ট্রেন চালু হলেও তাঁদের কোনও সুরাহা আপাতত হল না, বলছেন হকারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy