Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
দু’দফার ভোেট প্রচারে পাঁচ জনের বেশি নয়
West Bengal Assembly Election 2021

ভোট-নির্ঘণ্ট শুনেই মাঠে কর্মীরা

তোড়জোড় চোখে পড়েনি পার্কার্স রোডে সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা পার্টি অফিসে। কার্যত নিঃস্তবদ্ধতার মধ্যেই দলের নেতৃত্বস্থানীয় কয়েকজন ব্রিগেডের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

ভোটের প্রস্তুতি।

ভোটের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বর্ধমান ও কালনা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:১৮
Share: Save:

ভোট ঘোষণা হতেই কোথাও মাঠে নেমে পড়েছেন কর্মীরা। কোথাও ঢিমে তালে চলছে প্রস্তুতি। তৃণমূলের দাবি, দেওয়াল লিখন, মিছিল শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রার্থীর নাম ঘোষণা হলে প্রচার আরও গতি পাবে। বিজেপির দাবি, নির্বাচন ঘোষণা হতেই দলে যোগ দেওয়ার ‘ভিড়’ বাড়ছে।

শুক্রবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় দু’দফায় ভোট হবে শুনেই রাসবিহারী বসু নামাঙ্কিত দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক শুরু করে দেন বিজেপির সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। বৈঠক শেষে বর্ধমান পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর শক্তি মণ্ডল, উল্লাস আবাসনের কয়েকজন বিজেপিতে যোগ দেন। কালনা, পূর্বস্থলীর নানা এলাকায় সন্ধ্যা থেকেই প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখে দেওয়াল লিখন শুরু করেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। কর্মীদের অনেকেই দাবি করেন, প্রচারের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া গিয়েছে। দলীয় পতাকা, ব্যানার এলাকায় টাঙাতে বেরিয়েও পড়েন অনেকে।

তবে এই তোড়জোড় চোখে পড়েনি পার্কার্স রোডে সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা পার্টি অফিসে। কার্যত নিঃস্তবদ্ধতার মধ্যেই দলের নেতৃত্বস্থানীয় কয়েকজন ব্রিগেডের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তার ফাঁকে দু’এক জনকে বলতে শোনা যায়, ভোট ঘোষণা হয়ে গেল। দলের শাখা সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক দ্রুত সেরে ফেলতে হবে। সমন্বয় রয়েছে, আরও জোর দিতে হবে। এ বার দু’দফায় ভোট হওয়ায় কোনও সুবিধা হবে কী? জেলা সিপিএম সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, “এক দফা না দু’দফা তাতে কিছু যায় আসে না। মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হবে, দাগিদের জেলের ভিতরে রাখতে হবে। ভোট ঘোষণার পরবর্তী ভূমিকা নির্বাচন কমিশন কেমন নিচ্ছে, সেটাই বড় প্রশ্ন।’’

বিসি রোডের জেলা কংগ্রেস অফিস, কাটোয়ার কংগ্রেস অফিসও একেবারে চুপচাপ। হাতে গোনা কয়েকজন লোক ছিলেন সেখানে। জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি গৌরব সমাদ্দারের কথায়, “মানুষ নিজের ভোট দিতে পারবেন কি না, বুথগুলি নিরাপত্তা পাবে কি না, এ সবই বড় প্রশ্ন। এ সব নিশ্চিত করতে না পারলে দফা বাড়িয়েও লাভ হবে কী?” তবে পাঁচ জনের বেশি বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচার করা যাবে না, এই সিদ্ধান্তে খুশি বাম-কংগ্রেস দু’দলই। নেতাদের দাবি, ভোট প্রচারের নামে শাসক দল ২০-২৫ জন নিয়ে গিয়ে ভোটারদের কার্যত ভয় দেখায়। পরবর্তী সময়ে বিরোধীদের বক্তব্য তাঁরা শুনতে ভয় পান। পাঁচ জন থাকলে ভোটারদের ভয় পাওয়ার সম্ভাবনা কম। আবার তাঁদের কথাও মন দিয়ে শুনতেও পারবেন ভোটারেরা।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের দাবি, ‘‘ভোট যত দফায় হোক না কেন মানুষ ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় আনবেন। নেতা-কর্মীদের পুরোদমে নেমে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুও বলেন, ‘‘পূর্ব বর্ধমানে মাওবাদী হামলা নেই, অশান্তি নেই। সব রাজনৈতিক দলের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। সেখানে দু’দফায় ভোট ঘোষণার দরকার ছিল না। তবে যত দফায় ভোট হোক না কেন মানুষ তৈরি।’’

জেলা বিজেপি নেতা সন্দীপ নন্দী বলেন, “মানুষ যতে নিশ্চিন্তে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন তার জন্য অনেক আগে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে এসেছে। প্রতিটি বুথে সিসি ক্যামেরা থাকবে, স্পর্শকাতর, অতিস্পর্শকাতর বুথগুলিতেও অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কমিশনের কর্তারা। আমরা মনে করছি, কমিশন ভোটারদের কথা ভেবেই সব রকম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’’ তাঁর পাশে বসেছিলেন সদ্য বিজেপিতে আসা সাংসদ সুনীল মণ্ডল। তিনি বলেন, “ভোট ঘোষণা হতেই যোগদান শুরু হয়ে গেল। কী হয় দেখতে থাকুন।’’

গেরুয়া-বাড়ি ছেড়ে জিটি রোডে পা রাখতেই চায়ের দোকানে শোনা যায়, “দোল, রামনবমীর পরে ভোট। খেলায় বেশ উত্তেজনা থাকবেমনে হচ্ছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy